সরকারের কাছে নিজের তিন দাবির বিষয়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সোহেল তাজ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী আমাকে আশ্বস্ত করেছেন, কথা দিয়েছেন অতিসত্বর তিন দাবি বাস্তবায়িত হবে।
Advertisement
শুক্রবার (৩ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর নাজিমুদ্দিন রোডে পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতীয় চার নেতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
সোহেল তাজ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমি গত দুই বছর ধরে স্মারকলিপি প্রদান করছি। গতকাল রাতে আমি তার সঙ্গে দেখা করেছি। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমার বিস্তারিত আলাপ হয়েছে দীর্ঘক্ষণ। আমি আমার তিন দাবির যৌক্তিকতা তার কাছে তুলে ধরেছি।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমার দাবির সঙ্গে সম্পূর্ণভাবে একমত হয়েছেন। তিনি আমাকে আশ্বস্ত করেছেন, কথা দিয়েছেন অতিসত্বর এ তিন দাবি ইনশা আল্লাহ বাস্তবায়িত হবে বাংলাদেশে।
Advertisement
আরও পড়ুন: বিএনপির শীর্ষ নেতারা দায় এড়াতে পারেন না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
তিনি বলেন, জেল হত্যা দিবস রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করা, ১০ এপ্রিল মুজিবনগর সরকারকে প্রজাতন্ত্র দিবস হিসেবে পালন করা এবং জাতীয় চার নেতাসহ মুক্তিযুদ্ধে যাদের উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে তাদের অবদান ও জীবনীগুলো পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করতে পারলে আগামী প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানানো যাবে।
সোহেল তাজ বলেন, আমাদের সংগ্রাম চলমান, আওয়ামী লীগের সংগ্রামও চলমান আছে সোনার বাংলাদেশ গড়তে। আমাদের প্রত্যেক নাগরিকেরই দায়িত্ব আছে।
জেল হত্যা দিবস আসলেই জাতীয় চার নেতাকে মনে পড়ে, তাদের পলাতক খুনিদের ফিরিয়ে আনার কথা শুনা যায়। এ কাজ কতটুকু দৃশ্যমান এমন এক প্রশ্নের জাবাবে সোহেল তাজ বলেন, খুনিদের কবে আনা হবে। আমি সরকারে নেই। আমি রাজনীতিতেও নেই। এ বিষয়ে আমি আসলে অবগত না এ মুহূর্তে। এটা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জিজ্ঞেস করতে পারেন।
Advertisement
এখনো ফিরিয়ে না আনায় আক্ষেপ রয়েছে কি না জানতে চাইলে সোহেল তাজ বলেন, আমাদের আক্ষেপের অনেক বিষয়ই আছে। এটার মধ্যে একটা হলো আমরা সঠিক বিচার পাইনি। জেল হত্যার বিচারকার্য প্রহসনে পরিণত করা হয়েছিল ২০০১ সালের পর। আমরাতো এখন পর্যন্ত সঠিক বিচার পাইনি। সেখানে আক্ষেপের বিষয় আছে।
তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের আজকের এ দিনে আমাদের জাতীয় চার নেতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল। এ জাতীয় চার নেতা ছিলেন মহান মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ তখন পাক হানাদার বাহিনী বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে কারাগারে কারারুদ্ধ করেন ঠিক সেই সময়ে আমাদের চার সেনানী স্বাধীন বাংলাদেশ সরকার গঠন করে। সেই সরকারের মাধ্যমে বৈশ্বিক বৈরী পরিবেশ মোকাবিলা করে তারা সফলভাবে নয় মাস মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: চার নেতার প্রতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পরিবারের সদস্যদের শ্রদ্ধা
সোহেল তাজ বলেন, লক্ষ লক্ষ মানুষ মুক্তিযুদ্ধে জীবন দিয়েছিলেন। কারণ আমরা একটি স্বপ্ন দেখেছিলাম। সেই স্বপ্নটা হলো একটি সোনার বাংলাদেশের। সব মানুষ নিরাপদ বসবাস করতে পারবে। এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে আমরা যদি বুকে হাত দিয়ে প্রশ্ন রাখি নিজের কাছে, আমরা কী সেই বাংলাদেশ পেয়েছি আজ অবদি? এ প্রশ্নের উত্তর যদি না হয়। তাহলে কীভাবে আমরা সেই বাংলাদেশ পাবো।
তিনি বলেন, এ বাংলাদেশ গড়বে নতুন প্রজন্ম। নতুন প্রজন্ম যদি আমাদের সঠিক ইতিহাস জানে, আমাদের গৌরবের ইতিহাস জানে, আমাদের ইতিহাসে এমন ব্যক্তিত্ব ছিল যারা মহানকৃতি করেছে বীরত্বের সঙ্গে। তাহলে আমি বিশ্বাস করি তাদের জীবন থেকে অনুপ্রেরণা তারা নিতে পারে। অনুপ্রাণিত হয়ে ভবিষ্যতে সেই বাংলাদেশ বিনির্মাণে সক্রিয় ভূমিকা রাখবে। সেই লক্ষ্যে আমি তিন দাবি করেছি।
আরএসএম/এমআইএইচএস/জিকেএস