বিএনপি ভাড়া করা লোক দিয়ে আবারও সহিংসতা করার জন্য অবরোধের ডাক দিয়েছে বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। শুক্রবার (৩ নভেম্বর) জেলহত্যা দিবসে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
Advertisement
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি দেশে হত্যা ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতির মূলহোতা। অপকর্ম করতে তারা আবারও অবরোধ কর্মসূচি দিয়েছে। বিএনপি সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিশ্বস্ত ঠিকানা। জাতির প্রধান দুশমন বিএনপি। দলটি যত খুশি অবরোধ করুক তাতে সরকারের কিছু আসে যায় না।
এসময় প্রশ্ন রেখে ওবায়দুল কাদের বলেন, ঢাকায় ২৮ অক্টোবর যারা সহিংসতা করেছে, তাদের আটক করা কি দমন করা? যারা অপকর্মের নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাদের আটক করা কি অপরাধ?
আরও পড়ুন: চার নেতার প্রতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পরিবারের সদস্যদের শ্রদ্ধা
Advertisement
তিনি বলেন, ২৮ অক্টোবর ২৪ জন সাংবাদিক নৃশংস হামলার শিকার হয়েছেন, একজন পুলিশকে কীভাবে হত্যা করেছে, হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা করেছে, পার্কিং করা গাড়িতে ঘুমন্ত হেলপারসহ কীভাবে পুড়িয়েছে- এসব অপকর্ম যারা নেতৃত্ব দিয়েছেন তাদের গ্রেফতার করা কি দমনমূলক? যারা এসব করেছে তারা কি দায় এড়াতে পারবে? বিচার হবে না? অপরাধ করলে অপরাধীদের বিচার হতেই হবে।
আগামী রোববার ও সোমবার বিএনপির আবারও অবরোধ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, অবরোধ দিলে দিক। তারা (বিএনপি) টায়ার্ড হয়ে গেছে। হয় জেলে না হয় পালিয়ে থাকবে। বসে বসে হিন্দি সিরিয়াল দেখবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট, ৩ নভেম্বর একসূত্রে গাঁথা এবং একই ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতা। এরপর ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার প্রধান টার্গেট ছিলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুন: আরও ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ দিলো বিএনপি
Advertisement
জাতির বিবেকের কাছে আমাদের প্রশ্ন, বাংলার মাটিতে এ হত্যা, ষড়যন্ত্রের রাজনীতির শেষ কোথায়? মনে হয় ৭৫ পরবর্তী সব হত্যাকাণ্ডই সংঘটিত হয়েছে ৭১ এর পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে। সেই পরাজিত শক্তি বারবার জাতির সমূলে, চেতনায় আঘাত হেনে চলছে। এরা সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প ছড়াচ্ছে। এ সাম্প্রদায়িক অপশক্তির ঠিকানা হচ্ছে বিএনপি। ৭৫ এ যে নৃশংস হত্যাকাণ্ড যারা ঘটিয়েছে তাদের বিশ্বস্ত ঠিকানা হচ্ছে বিএনপি। ২৮ অক্টোবর আবার প্রমাণ হয়েছে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ঠিকানা হচ্ছে বিএনপি। কাজেই আজ এরাই জাতির প্রধান দুশমন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্র, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিরাপদ রাখতে বিএনপির নেতৃত্বে সাম্প্রদায়িক অপশক্তি প্রতিহত ও পরাজিত করতে হবে। আবারও বাস ভাঙচুর, পোড়ানোর জন্য অবরোধ দিয়েছে দলটি।
এদিকে বনানী কবরস্থানে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি আবারও প্রমাণ করেছে তারা সন্ত্রাসী দল। ঢাকায় তারা যে রক্তপাত, তাণ্ডব ঘটিয়েছে এটা তারই প্রমাণ। এরপর এ সন্ত্রাসী দলের সঙ্গে সংলাপের প্রশ্নই আসে না। নির্বাচন কমিশন স্বাধীন সংস্থা তারা সংলাপ করলে এটা তাদের বিষয়।
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতা আমীর খসরু গ্রেফতার
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা সতর্ক পাহারায় আছি। পাহারা জোরদার করা হবে।
এর আগে জেলহত্যা দিবসে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করে আওয়ামী লীগ। দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে এসময় আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর দ্বিতীয় কলঙ্কজনক অধ্যায় ৩ নভেম্বর জেলহত্যা দিবস। এ দিন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম বীর সেনানী ও চার জাতীয় নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, এএইচএম কামারুজ্জামান এবং ক্যাপ্টেন মনসুর আলীকে এ দিনে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
এসইউজে/এমআইএইচএস/জিকেএস