আইন-আদালত

একসময় দেশ নেতৃত্বশূন্য হয়ে যাবে: মির্জা আব্বাস

রাজধানীর শাহজাহানপুর থানায় নাশকতা ও বিস্ফোরক আইনের মামলায় গ্রেফতারের পর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, আমাদের বাংলাদেশ থেকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে চায়। শুধু বিএনপিকে নয়, আওয়ামী লীগকেও নেতৃত্বশূন্য করতে চায়। একসময় দেশ নেতৃত্বশূন্য হয়ে যাবে। আমি ভবিষ্যদ্বাণী বলে দিলাম।

Advertisement

আজ বুধবার বিকেল ৩টার দিকে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দিনের আদালতে ওঠানো হয়। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে পাঁচদিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।

অন্যদিকে তার আইনজীবী জামিন চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি চলাকালে মির্জা আব্বাস কথা বলতে চান। এ সময় বিচারকের অনুমতিক্রমে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমি কিছু কথা বলতে চাই। কখনোই কথা বলি না। আমার কোনো কথায় কিছু মনে করবেন না। আমি ছোট্ট গল্প দিয়ে শুরু করতে চাই। একজন প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষককে পুলিশ গ্রেফতার করে। পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। মানুষ জানতে চায় কী হয়েছিল সেখানে। তিনি উত্তরে বললেন, সেখানে আমার সাইডে লোহা দেখতে পাই।

Advertisement

আরও পড়ুন: মির্জা আব্বাস ৫ দিনের রিমান্ডে 

তিনি আরও বলেন, আমি ৫০ বছর ধরে রাজনীতি করি। বহু মিছিল করেছি। আন্দোলন করে এরশাদ সরকারের পতন ঘটিয়েছি। এত বছরে এমন কোনো মামলা হয়েছে কি না তা দেখিনি।

শুনানি চলাকালে মির্জা আব্বাসের আইনজীবী মসলেউদ্দিন জসিম বলেন, মির্জা আব্বাসের বয়স ৭০ থেকে ৭৪ বছর। তদন্তকারী কর্মকর্তা রিমান্ড আবেদনে উল্লেখ করেছেন, মির্জা আব্বাসের বয়স ৫৭ বছর। এ সময় মির্জা আব্বাস বিচারককে উদ্দেশ্য করে বলেন, আমার বয়স ৭৪ বছর। তদন্ত কর্মকর্তা যেটা লিখেছেন সেটা ঠিক নয়। এর আগে আদালতে তোলার সময় মির্জা আব্বাস স্লোগান দেওয়া নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বিজয়ের চিহ্ন দেখান।

তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের এসআই নুরুল ইসলাম রিমান্ড আবেদনে মির্জা আব্বাসের বয়স দেখিয়েছেন ৫৭ বছর। শুনানিতে তদন্ত কর্মকর্তা মির্জা আব্বাসকে পাঁচদিনের রিমান্ডে নিতে আদালতে বলেন। তিনি বলেন, ঘটনার দিন পুলিশের এতটি রাইফেল ছিনতাই হয়েছে। এছাড়া পলাতক আসামিদের গ্রেফতারের জন্য তাকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। শুনানি শেষে বিচারক মির্জা আব্বাসের জামিন নামঞ্জুর করে পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

Advertisement

এর আগে মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর শহীদবাগে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তারও আগে গত ২৯ অক্টোবর রাজধানীর শাহজাহানপুর থানায় উপ-পরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমান বাদী হয়ে মির্জা আব্বাসকে প্রধান আসামি করে মামলা করেন। মামলায় ৪৯ জনের নাম উল্লেখসহ ৭০০-৮০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।

আরও পড়ুন: মির্জা আব্বাস-আলাল গ্রেফতার 

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ২৮ অক্টোবর বিকেল ৩টা ৪০ মিনিটে নয়াপল্টনে সমাবেশ শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস উদ্দিন আহমেদ ওরফে আব্বাসের নেতৃত্বে ও নির্দেশনায় আসামিরা বেআইনিভাবে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে স্লোগান দেয়।

তারা জনমনে আতঙ্ক ও ভীতি সৃষ্টি করে শাহজাহানপুর থানা এলাকায় বিভিন্ন প্রকার নাশকতামূলক ও ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম পরিচালনা এবং হত্যার উদ্দেশ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। ককটেল বিস্ফোরণ ও পুলিশের সরকারি কাজে বাধা দেয় তারা। এ সময় আসামিরা অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

জেএ/এমআরএম/জিকেএস