আন্তর্জাতিক

আফগান শরণার্থীদের ফেরত পাঠাতে তৎপর পাকিস্তান, সীমান্তে ভিড়

নভেম্বর শুরুর আগেই নিজেদের দেশে ফিরতে হবে পাকিস্তানে বসবাসকারী আফগানিস্তানের নাগরিকদের। ইসলামাবাদের পক্ষ থেকে এমন ঘোষণা করা হয়েছিল অক্টোবরের শুরুতেই। সেই ‘সময়সীমা’ শেষের প্রহর এগিয়ে আসতেই মঙ্গলবার পাক-আফগান সীমান্তে শুরু হয়েছে প্রশাসনিক তৎপরতা। সীমান্তে পাক সেনা ও ফ্রন্টিয়ার কোর বাহিনীর বাড়তি মোতায়েন নজরে এসেছে।

Advertisement

পাকিস্তানের তৎপরতার জেরে আতঙ্কিত বহু আফগান শরণার্থীও সীমান্ত পেরিয়ে দেশে ফিরতে শুরু করেছেন। পাক-আফগান সীমান্তবর্তী খাইবার-পাখতুনখোয়া ও বালুচিস্তান প্রদেশের বিভিন্ন চেকপোস্টে দেখা গেছে আফগানিস্তানের মানুষ ও যানবাহনের দীর্ঘ সারি।

আরও পড়ুন>কাশ্মীরে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হামলা, ফের পুলিশ নিহত

আশির দশকে আফগানিস্তানে সোভিয়েত সেনার প্রবেশ ও মুজাহিদ বাহিনীর সঙ্গে তাদের লড়াই শুরুর পর থেকে পাকিস্তানে মূলত পাশতুন জনগোষ্ঠীর শরণার্থীদের ভিড় শুরু হয়েছিল। দু’দশক আগে আফগানিস্তানে মার্কিন সেনা অভিযান শুরুর পরেও কয়েক লাখ আফগান নাগরিক প্রাণভয়ে পাকিস্তানে চলে এসেছিলেন।

Advertisement

মূলত পাক-আফগান সীমান্ত লাগোয়া খাইবার-পাখতুনখোয়া এবং বালুচিস্তান প্রদেশে তাদের বসবাস। পাকিস্তান সরকারের দাবি, তাদের সংখ্যা প্রায় ৪০ লাখ। যদিও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সমীক্ষায় তা সাড়ে ১৭ লাখের আশপাশে।

দীর্ঘ দিন ধরে আফগান শরণার্থীদের জন্য বিপুল অঙ্কের আন্তর্জাতিক অর্থসাহায্য ও ত্রাণ পেয়েছে ইসলামাবাদ। কিন্তু ২০২১ সালের অগস্টে কাবুলে তালেবানের ক্ষমতা দখলের পরে সীমান্ত চিহ্নিতকরণ নিয়ে দু’দেশের বিরোধ শুরু হয়।

আরও পড়ুন>ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে হুথি বিদ্রোহীদের ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ

সেই সঙ্গে পাকিস্তান সেনার সঙ্গে লড়াইয়ে বিদ্রোহী গোষ্ঠী তেহরিক-ই-তালিবান (টিটিপি)-কে কাবুলের মদতের অভিযোগ ঘিরেও দুই পক্ষের মধ্যে টানাপড়েন শুরু হয়। অক্টোবরের শুরুতে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সরফরাজ বুগতি একটি সরকারি নির্দেশিকা প্রকাশ করে বলেন, পাকিস্তানের মাটিতে অবৈধ ভাবে বসবাসকারীদের কোনো জায়গা হবে না।

Advertisement

যদিও পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, মূলত দু’টি কারণে অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসলামাবাদ। প্রথমত, দেশের বেহাল অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে বাড়তি ব্যয়বহনে অক্ষমতা। দ্বিতীয়ত, নিরাপত্তা সংক্রান্ত সংকট।

পাক খাইবার-পাখতুনখোয়া এবং বালুচিস্তান প্রদেশের পাশতুন গরিষ্ঠ এলাকার একাংশকে দীর্ঘ দিন ধরেই নিজেদের বলে দাবি করে আফগানিস্তান। তালেবানের আমলেও সেই দাবি প্রত্যাহার করা হয়নি। গত বছরের অগস্টে কাবুলে তালেবানের ক্ষমতা দখলের পরে পাকিস্তান দুই হাজার ৭০০ কিলোমিটার সীমান্তে কাঁটাতার বসাতে উদ্যোগী হয়েছিল। কিন্তু তালেবান শাসকদের প্রবল বাধায় সেই কাজ শুরু করা যায়নি।

সূত্র: আল-জাজিরা, বিবিসি

এমএসএম