সুন্দরবন এক্সপ্রেস ও বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনের ঈশ্বরদী জংশন স্টেশন হয়ে চলাচলের শেষ দিন ছিল আজ। শেষবারের মতো ট্রেন দুটি জংশন স্টেশনে এলে শত শত মানুষ ভিড় জমান। বুধবার (১ নভেম্বর) থেকে সুন্দরবন ও বেনাপোল এক্সপ্রেস পদ্মা সেতু হয়ে চলাচল করবে।
Advertisement
২০০৩ সালের ১৭ আগস্ট খুলনা-ঈশ্বরদী-ঢাকা রুটে সুন্দরবন এক্সপ্রেস ও ২০১৯ সালের ১৭ জুলাই বেনাপোল-ঈশ্বরদী-ঢাকা রুটে চলাচল শুরু হয়। এ দুই ট্রেনে দীর্ঘদিন ধরে নিরববিচ্ছন্নভাবে ঈশ্বরদীর মানুষ যাতায়াত করেছেন। মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) দুপুর ২টায় ঢাকা থেকে খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেন ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনে পৌঁছালে যাত্রীসহ শত শত মানুষ শেষবারের মতো ট্রেনটি দেখতে ভিড় জমান। ২০ বছর ধরে ট্রেনটি ঈশ্বরদী জংশন স্টেশন হয়ে চলাচল করছে। ঈশ্বরদীর হাজার হাজার মানুষ বিভিন্ন সময় এ ট্রেনে চলাচল করেছেন। তাই এ ট্রেনের প্রতি ঈশ্বরদীর মানুষের এক ধরনের আবেগ ও ভালোবাসা জন্ম নিয়েছে।
স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা আব্দুল ওহাব (২৫) জাগো নিউজকে বলেন, ‘বুদ্ধির পর থেকেই এ ট্রেনে চলাচল করেছি। বিশেষ করে আমি সবসময় এ ট্রেনে ঢাকায় যাতায়াত করতাম। এ ট্রেন আজকের পর ঈশ্বরদীতে আর আসবে না। এটা মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে। তাই শেষবারের মতো প্রিয় ট্রেনটি দেখতে এসেছি। কেন যেন খুব বেশি আবেগ কাজ করছে।’
মুরাদ হাসান (৫৫) নামের এক যাত্রী বলেন, ‘আমার শ্বশুরবাড়ি খুলনায়। আমি সুন্দরবন ট্রেনে খুলনায় বেশি যাতায়াত করতাম। আজ ঈশ্বরদীতে এ ট্রেনের শেষ যাত্রা। তাই পরিবারের সবাই মিলে এ ট্রেনে খুলনায় যাচ্ছি।’
Advertisement
বিকেল সাড়ে ৫টায় খুলনা থেকে ঢাকাগামী বেনাপোল এক্সপ্রস ট্রেন (আপ) ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনে প্রবেশ করে। এ ট্রেনটি দেখতেও স্টেশনে ভিড় জমান শত শত মানুষ।
ঢাকাগামী যাত্রী আব্দুল্লাহ আল মামুন জাগো নিউজকে বলেন, ‘ব্যবসায়িক কাজে প্রায়ই এ ট্রেনে করে ঢাকায় যেতাম। রাত ৯টার মধ্যে ঢাকায় পৌঁছে যায়। রাতে বিশ্রাম নিয়ে সারাদিন কাজ শেষে আবারও রাত সাড়ে ১১টায় এ ট্রেনে করেই ঈশ্বরদীর উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিতাম। এখন ট্রেনটিকে খুব মিস করবো। আমার চলাচলেও খুব অসুবিধা হবে।’
পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার (ডিআরএম) শাহ সুফি নূর মোহাম্মদ বলেন, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী সুন্দরবন ও বেনাপোলের রুট পরিবর্তন করা হয়েছে। এ ট্রেনের পরিবর্তে এ রুটে নতুন কোনো ট্রেন চলাচলের পরিকল্পনার বিষয়টি আপাতত আমার জানা নেই। এ রুটে নতুন ট্রেন সংযোগ করা হলে অবশ্যই সবাই জানতে পারবেন।
শেখ মহসীন/এসআর/এমএস
Advertisement