জাতীয়

মতিঝিলের ফাঁকা সড়কে রিকশার আধিপত্য

 

বিএনপি ও জামায়াতের তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচি শুরু হয়েছে আজ। মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) ভোর থেকে নাশকতার রোধে নিরাপত্তা জোরদার করেছে সরকার। বিভিন্ন সড়কের মূল পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। নাশকতার চেষ্টা কিংবা নাশকতা যাই হোক তাকে আইনের আওতায় আনার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে হাইকমান্ড থেকে।

Advertisement

এদিকে অবরোধের প্রথম দিনেই মতিঝিল এলাকায় গণপরিবহনের তেমন দেখা নেই। মাঝে মাঝে বিভিন্ন বাস কোম্পানির দু’একটি বাসের দেখা মিলছে। যে বাস আসছে সেগুলোতেও যাত্রী সংখ্যা হাতে গোনা। তবে রিকশার আধিপত্য বেড়েছে। যাত্রী কম পেলেও রিকশার ভাড়া বাড়িয়ে দিয়েছেন চালকরা। তবে ফুটপাতের বেশ কিছু দোকান খোলা রয়েছে। যদিও সেখানে বেচাবিক্রি নেই বললেই চলে।

এদিন সকালে ফকিরাপুল, আরামবাগ, কমলাপুর, শাপলাচত্ত্বর, ইত্তেফাক মোড়, দৈনিক বাংলা ও বক চত্বর এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি অফিস চলছে নিয়ম মেনে। ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠানও খোলা রয়েছে। তবে পথে বা সড়কে নেই আগের মতো পথচারীদের ভীড়। যারা চলাচল করছেন তাদের বেশিরভাগই অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারী।

সড়কে বেড়েছে রিকশার আধিপত্য। গণপরিবহন কম চলার সুযোগ নিয়ে ভাড়া বাড়িয়ে দিয়েছেন চালকরা। যদিও যাত্রী কম তবুও ভাড়া বেশি নিতেই যেন প্রতিযোগিতা তাদের মধ্যে। সায়েদুল ইসলাম নামের এক যাত্রীর অভিযোগ মতিঝিল থেকে পল্টন মোড়ে ৩০ টাকা ভাড়া। আজ ৫০ থেকে ৬০ টাকা চাওয়া হচ্ছে, এর কমে কোন রিকশা যেতে রাজি না।

Advertisement

রিকশা চালক বনি জানান, ‘হরতাল-অবরোধের দিনে ব্যাটারি চালিত রিকশা পুলিশ ধরে না। এ কারনে সকালেই বেরিয়েছি রিকশা নিয়ে। ৪০০ টাকা জমার খরচ আছে, নিজের খাওয়া আছে তিন বেলা। এর মাঝে যাত্রী কম তাহলে আমি কি করবো, প্রশ্ন রাখেন বনি। অন্যান্য রিকশাচালকদের অবস্থাও একই।

ফুটপাতের দোকানগুলোর বেশিরভাগই বন্ধ রয়েছে। যেগুলো খোলা রয়েছে সেখানে আগের মতো ক্রেতা নেই। অলস সময় কাটাতে দেখা গেছে অধিকাংশ দোকান ও রেস্তোরার কর্মচারীতের। ফুটপাথের দোকানি ইদ্রিস আলী জাগো নিউজকে বলেন, ‘অন্যান্য দিন বেচাবিক্রির শেষ থাকে না। ক্রেতা আসতেই থাকেন। আজ ক্রেতার দেখা নেই। জনসমাগম যত বেশি হয় বিক্রি ততবেশি হয়।’

সড়কে মাঝে মাঝে দু’একটি বাস চোখে পড়ছে। সেগুলোতেও নেই যাত্রী। বলাকা বাসের হেলপার মামুন জাগো নিউজকে বলেন, ‘এখন মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। গত দিনের হরতালে ভাঙচুর তেমন না থাকলেও মানুষ বের হয়নি। আজকের অবরোধেরও একই চিত্র দেখা যাচ্ছে। আমাদের গাড়ি বের হলেও যাত্রী নেই। এতে আমাদের জমা-জ্বালানী খরচ বাদে হাতে কোন টাকা থাকে না।’

হরতালের পর নতুন কর্মসূচি হিসেবে তিনদিনের অবরোধের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। সরকারবিরোধী অন্যান্য দলগুলোও এই অবরোধ কর্মসূচিতে সমর্থন দিয়েছে। প্রায় আট বছর পর আজ মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দেশজুড়ে টানা ‘সর্বাত্মক অবরোধ’ পালন করবে দলগুলো।

Advertisement

রোববার (২৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এক অনলাইন বার্তায় জানান, ৩১ অক্টোবর এবং ১ ও ২ নভেম্বর মহাসড়ক, রেল ও নৌপথে এ সর্বাত্মক অবরোধ পালন করা হবে। এর মাধ্যমে প্রায় আট বছর পর আবারও অবরোধ কর্মসূচি দেয় বিএনপি।

ইএআর/এসটি/জিকেএস