চলতি বছর ডেঙ্গু রোগে সর্বোচ্চ আক্রান্ত ও মৃত্যুর বেশ কয়েকটি কারণ উল্লেখ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। তন্মধ্যে সুনির্দিষ্ট কৌশলবিহীন ও বিচ্ছিন্নভাবে পরিচালিত ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম কার্যকর না হওয়া, মশা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে সুশাসনের ঘাটতি ও ঢাকার বাইরে ডেঙ্গু রোগের পর্যাপ্ত চিকিৎসা ব্যবস্থা না থাকা।
Advertisement
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন দুই লাখ ৬৭ হাজার ৬৮০ জন। একই সময়ে এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন এক হাজার ৩৩৩ জন।
চলতি বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ডেঙ্গুর প্রকোপ নিয়ে গবেষণা করে টিআইবি। সোমবার (৩০ অক্টোবর) সকালে ধানমন্ডিতে টিআইবি কার্যালয়ে আয়োজিত ‘ডেঙ্গু সংকট প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে সংস্থাটি।
গবেষণা প্রতিবেদনে জানানো হয়, এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম, যথা এডিস মশা প্রতিরোধ পরিকল্পনা ও কৌশল প্রণয়ন, এডিস মশার জরিপ, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিতকরণ, মশা নিধনে জনবল ও উপকরণ, সরকারি ক্রয় ও সরবরাহ, কীটনাশকের মান ও কার্যকারিতা পরীক্ষা এবং মশা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর সমন্বয়-বিষয়ক কার্যক্রমসমূহকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া এর আওতায় ডেঙ্গু চিকিৎসা ব্যবস্থা, যথা, রোগ-নির্ণয় (সরকারি ও বেসরকারি), চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম (সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল), চিকিৎসা সামগ্রী ক্রয় ও সরবরাহ ও চিকিৎসা সামগ্রীর বাজার মূল্য নিয়ন্ত্রণের বিষয়হসমূহকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
Advertisement
গবেষণার ফলাফল পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ ধারাবাহিকভাবে বছরব্যাপী বিদ্যমান থাকলেও এ রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে রাজনৈতিকভাবে পর্যাপ্ত গুরুত্ব প্রদান করা হয়নি। আইন অনুযায়ী, দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মানদণ্ড ও আন্তর্জাতিক চর্চা অনুসরণ না করে এবং বাংলাদেশের কোভিড সংকট মোকাবিলার অভিজ্ঞতাকে কাজে না লাগিয়ে সমন্বয়হীনভাবে ডেঙ্গু প্রতিরোধ এবং মশা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।
ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের বিভিন্ন পর্যায়ে সুশাসনের ঘাটতি অব্যাহত রয়েছে। সুনির্দিষ্ট কৌশলবিহীন ও বিচ্ছিন্নভাবে পরিচালিত ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম কার্যকর না হওয়া এবং ডেঙ্গুর প্রকোপ সারা দেশব্যাপি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়া ও বছরজুড়ে অব্যাহত থাকার অন্যতম কারণ হচ্ছে মশা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে সুশাসনের ঘাটতি। ঢাকার বাইরে এডিস মশা প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ এবং ডেঙ্গু রোগের পর্যাপ্ত চিকিৎসা ব্যবস্থা না থাকা এবছর আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃত্যুর সংখ্যা ব্যাপক আকার ধারণের অন্যতম কারণ।
এসএম/এসএনআর/জিকেএস
Advertisement