কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত আরেক ব্যক্তির নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে। তার নাম জোবায়ের হোসেন (২৫)। তিনি কুলিয়ারচর উপজেলার পৈলনপুর গ্রামের বাসিন্দা আক্তার মিয়ার ছেলে। জোবায়ের ঢাকার একটি মাদরাসায় শিক্ষকতা করতেন। ছুটিতে কুলিয়ারচরে নিজ বাড়িতে এসেছিলেন। ছুটি শেষ ট্রেনে করে ঢাকায় ফিরছিলেন তিনি।
Advertisement
এনিয়ে ভয়াবহ ওই ট্রেন দুর্ঘটনায় সরকারি হিসাবে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ১৯ জনে।
শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) ভৈরব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান সবুজ এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায় ,ট্রেন দুর্ঘটনায় জোবায়ের হোসেন গুরুতর আহত হন। পরে তাকে চিকিৎসার জন্য ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। দুর্ঘটনার একদিন পর তিনি মারা যান। তবে এতথ্য প্রশাসনকে জানানো হয়নি। অনেকটা গোপনে কবর দেওয়া হয়। পরে প্রশাসনের কাছে মৃত্যুর তথ্যটি আসে।
Advertisement
এদিকে ট্রেন দুর্ঘটনায় শফিকুল ইসলাম (৩৩) নামের আরও একজন নিহত হন। তবে তার নাম প্রশাসনের তালিকায় আসেনি বলে জানা গেছে।
নিহত শফিকুল কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার জয়কা ইউনিয়নের পানাহার গ্রামের মৃত জালাল উদ্দিনের ছেলে। তিনি পেশায় একজন ভাঙারি ব্যবসায়ী ছিলেন।
নিহত শফিকুলের ছোট ভাই সাইফুল ইসলাম জানান, গুরুতর আহত অবস্থায় ভৈরব হাসপাতাল থেকে ময়মনসিংহে নেওয়ার পথে তার ভাই মারা যান। তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি বুঝতে না পারায় প্রশাসনকে না জানিয়ে মরদেহ বাসায় নিয়ে আসেন। দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কিছু সহযোগিতা পেলেও তারা পাননি।
তিনি আরও জানান, তার ভাইয়ের তিনটি ছোট ছোট শিশুসন্তান আছে। অর্থ সহায়তার বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিতে দেখার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানান সাইফুল ইসলাম।
Advertisement
এ বিষয়ে ভৈরব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান বলেন, ‘ট্রেন দুর্ঘটনার মৃতের সংখ্যা ১৮ ছিল। জোবায়ের হোসেনের মৃত্যুর তথ্যটি এ তালিকায় ছিল না। এখন সবমিলিয়ে মৃতের সংখ্যা ১৯। তবে ট্রেন দুর্ঘটনায় করিমগঞ্জের একজনের মারা যাওয়ার খবর পেয়েছি। তার নাম আমাদের তালিকায় আসেনি। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে তার নাম অন্তর্ভুক্ত করা হবে।’
সোমবার (২৩ অক্টোবর) ভৈরব রেলস্টেশন থেকে ঢাকায় উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া আন্তঃনগর এগারসিন্দুর এক্সপ্রেস ট্রেনে বিপরীত দিক থেকে আসা মালবাহী ট্রেনের ধাক্কায় ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মালবাহী ট্রেনের চালক জাহাঙ্গীর আলম, সহকারী চালক আতিকুর রহমান ও পরিচালক (গার্ড) মো. আলমগীরকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
নিহত এক ব্যক্তির পরিবারের পক্ষ থেকে এ তিনজনকে আসামি করে রেলওয়ে থানায় মামলা করা হয়েছে। মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে ট্রেন পরিচালনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদেরও। মামলার পর তদন্তকাজ শুরু করেছে রেলওয়ে পুলিশ।
রাজীবুল হাসান/এসআর/জেআইএম