দেশজুড়ে

জেল থেকে ছাড়া পেয়েই চিহ্নিত অপরাধী হয়ে গেলেন শ্রমিক নেতা!

হত্যা, ডাকাতি, চাঁদাবাজি ও মাদক কারবারে অভিযুক্ত তিনি। থানায় মামলা রয়েছে ১১টি। সবশেষ ৯৮ বোতল ফেনসিডিলসহ মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সদস্যরা তাকে আটক করেন। সেই মামলায় মাত্র ১৫ দিনে জেল থেকে ছাড়া পান তিনি। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে হয়ে যান সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগের জেলা কমিটির নেতা।

Advertisement

জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগের সহ-প্রচার সম্পাদকের পদ পেয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুলিশের খাতায় চিহ্নিত অপরাধী আরব আলী। তিনি সরাইল উপজেলার কুট্টাপাড়া গ্রামের ইমান আলীর ছেলে।

তবে জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগের নেতাদের দাবি, কমিটিতে পদ পাওয়ার পর বিষয়টি তাদের নজরে এসেছে। দ্রুত তাকে বহিষ্কার করা হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আরব আলী একজন চিহ্নিত অপরাধী। তিনি প্রথমে খাঁটিহাতা বিশ্বরোড মোড়ে পলিথিন বিক্রি করতেন। পরবর্তী সময়ে টেম্পো চালানো শুরু করেন। পরে জড়িয়ে পড়েন ডাকাত চক্রের সঙ্গে। তার বিরুদ্ধে ডাকাতির মামলাও রয়েছে। পাশাপাশি হয়ে যান সিএনজি (অটোরিকশা) শ্রমিক নেতা। অটোরিকশায় চাঁদাবাজির অভিযোগে তাকে এবং তার ভাইকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

Advertisement

সূত্র জানায়, বিশ্বরোড মোড়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশার মালামালের দোকান দিয়ে ব্যবসা শুরু করে আরব আলী। এ ব্যবসার আড়ালে মাদক কারবারের সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন তিনি। গত ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে তার দোকান থেকে ৯৮ বোতল ফেনসিডিলসহ তাকে ও আরও দুই সহযোগীকে আটক করেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সদস্যরা। পরে এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়। ওই মামলায় কারাগারে যাওয়ার ১৫ দিন পর জামিনে মুক্তি পান আরব আলী।

রোববার (২২ অক্টোবর) জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগের কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। ওই কমিটিতে সহ-প্রচার সম্পাদকের পদ পেয়ে যান এ আরব আলী। পদ পেয়ে নিজের ফেসবুক আইডিতে পোস্টও দিয়েছেন তিনি।

জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, আরব আলীর বিরুদ্ধে পুলিশের খাতায় ১১টি মামলা রয়েছে। এরমধ্যে হত্যা, হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা ও মাদকের মামলা চলমান।

এ বিষয়ে নবগঠিত বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কমিটির সভাপতি বাবু বারীন্দ্র নাথ ঘোষ জাগো নিউজকে বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা ছিল না। কমিটির তালিকা করেছেন সেক্রেটারি সায়েম। তাকে বহিষ্কার করবো। এমন কি আজই তাকে বহিষ্কার করে দেবো।’

Advertisement

সাধারণ সম্পাদক এ এস এম সায়েম জাগো নিউজকে বলেন, ‘কমিটি করার পর বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। তবে আমার একার মতের ভিত্তিতে কিছু হয় না। তালিকা করার সময় অনেকেই প্রস্তাব দিয়ে থাকেন। আমি জানতাম সে (আরব আলী) জেলে আছে। কিন্তু কী মামলায় সে জেলে গেছে তা জানা ছিল না। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

বক্তব্য জানতে আরব আলীর মোবাইল নম্বরে কল দেওয়া হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

পরিবহন শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইনসুর আলী জাগো নিউজকে বলেন, ‘এত বড় অপরাধী কমিটিতে আছে আমার জানা ছিল না। তবে কমিটি জেলা থেকে তৈরি করে পাঠানো হয়। তাকে বহিষ্কার করা হবে।’

আবুল হাসনাত মো. রাফি/এসআর/জেআইএম