ফিচার

ভয়ংকর চেহারার পুতুলের বাস যে দ্বীপে

ছোট শিশুদের প্রথম পছন্দের খেলনা পুতুল। দেখতে সুন্দর, পরিপাটি পোশাকের পুতুল সহজেই বাচ্চাদের মন কাড়ে। তাই পুতুল দেখলেই বাচ্চারা খুশ মেজাজে খেলতে থাকে। তবে সব পুতুল দেখতে পরিপাটি, সুন্দর হয়না, কিছু কিছু পুতুল দেখতে বীভৎসও হয়। মেক্সিকো সিটি থেকে ১৭ মাইল দক্ষিণে জোকিমিলকো জেলায় রয়েছে ভয়ংকর এক ‘পুতুল দ্বীপ’।

Advertisement

চারদিক জুড়ে নীল জলরাশির মাঝে সবুজে ঘেরা এই দ্বীপ। ইংরেজিতে একে ‘দ্য আইল্যান্ড অব ডেথ ডলস’ বলা হয়। দূর থেকে দেখলে নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখে মন ভরে যাবে। অথচ কাছে গেলেই গায়ের লোম দাঁড়িয়ে যাবে। কারণ দ্বীপের প্রতিটা গাছে ঝুলছে বীভৎস চেহারার সব পুতুল।

আরও পড়ুন: প্রেমিকার হাত ধরে রাস্তায় হাঁটলেই শাস্তি হয় যে দেশে

কোনোটার মাথা নেই তো কোনোটার হাত পা। আবার কোনটার সারা শরীর কাঁটা-ছেঁড়া। চোখের শেষ সীমানা পর্যন্ত দেখা মিলবে এমন দৃশ্য। মস্তিষ্ক একটু শান্ত হলে, মনে প্রথম প্রশ্ন জাগবে কোথা থেকে এলো এত পুতুল? কে এমন ক্ষতি করল পুতুলগুলোর? কেনইবা গাছে সেগুলো ঝুলিয়ে দিল? এই প্রশ্নের উত্তর জানতে গেলে আমাদের যেতে হবে বেশ কয়েক যুগ পেছনে।

Advertisement

পুতুল নিয়ে মনরোম এই দ্বীপে খেলা করছিল তিন মেক্সিকান শিশু। হঠাৎ তিনজনের মধ্যে একজন নিখোঁজ হয়ে যায়। তারপর থেকে আতঙ্কে কেউই এই দ্বীপে আসতে সাহস পেত না।

এর অনেক বছর পর পরিবার ত্যাগ করে জনমানবশূন্য এই দ্বীপে বসবাস করতে শুরু করেন ডন জুলিয়ান সান্তানা ব্যারেরা নামক এক ব্যক্তি। তিনি এই দ্বীপে ঝোপ-জঙ্গলে ঢাকা একটি নালায় সেই বাচ্চা মেয়ের ভেসে ওঠা মৃতদেহ উদ্ধার করেন। এর কিছুদিন পর নালার ঠিক ওই একই জায়গায় একটি পুতুলও ভেসে উঠে।

আরও পড়ুন: আজও রহস্যে ঘেরা গিজার পিরামিড

এরপর থেকে সারা দিনই বাচ্চা মেয়ের ফিসফিস শুনতে পেতেন জুলিয়ান। তার খেলার শব্দ, ছুটে বেড়ানোর শব্দও কানে ভেসে আসতো। জুলিয়ান বাচ্চা মেয়েটির আত্মাকে শান্ত করতে নালা থেকে পুতুলটি এনে গাছে ঝুলিয়ে রাখলেন। এরপর নানা জায়গা থেকে বিভিন্ন পরিত্যক্ত পুতুল এনে দ্বীপের গাছগুলোতে ঝোলাতে শুরু করেন। একটি একটি করে দ্বীপের প্রায় সব গাছই ভরে যায় পরিত্যক্ত পুতুলে।

Advertisement

তারপর ২০০১ সালে ডন জুলিয়ানের রহস্যজনকভাবে মৃত্য হয়। যে নালায় বাচ্চা মেয়েটির মৃতদেহ দেখার দাবি করেছিলেন তিনি, ঠিক সেখানেই ডুবে মারা যান জুলিয়ান। এরপর থেকে পর্যটকরা জুলিয়ান এবং ছোট মেয়েটিকে শ্রদ্ধা জানাতে দ্বীপে পুতুল নিয়ে আসতো। পুতুল এনে পর্যটকরা গাছে ঝুলিয়ে রাখতো। পরবর্তীকালে জুলিয়ানের পরিবার এইসব বিষয় অস্বীকার করে জানায়, তিনি মানসিকভাবে সুস্থ ছিলেন না।

সূত্র: ডিস্কোভারি, টাইমস অব ইন্ডিয়া

কেএসকে/এএসএম