কৃষি ও প্রকৃতি

দ্বিগুণ লাভের আশায় আগাম আলু চাষ

নীলফামারী জেলার কৃষকেরা অল্প পুঁজিতে আগাম আলু চাষ করে আসছেন। স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে সারাদেশে পৌঁছে দিতে এবং ভালো দাম পাওয়ার আশায় আগেভাগে উঁচু সমতল জমিতে এ আলু রোপণ করছেন প্রান্তিক ও মাঝারি চাষিরা।

Advertisement

আগাম জাতের আলু রোপণের জন্য হিমাগার থেকে বীজ সংগ্রহ, জমি প্রস্তত, সার প্রয়োগসহ বিভিন্ন কাজে দিনভর ব্যস্ত আছেন তারা। ভাদ্র ও আশ্বিন মাসে স্বল্পমেয়াদি আগাম আউশ, আমন ধান কাটা ও মাড়াই শেষ করে সে জমিতেই এবার আলু রোপণের পালা।

জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলায় এ বছর ২১ হাজার ৭১২ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যার মধ্যে আগাম আলুর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮ হাজার ৮০০ হেক্টর। দোআঁশ মাটিতে ৫০-৫৫ দিনে উত্তোলনযোগ্য সেভেন জাতের আগাম আলুর বীজ রোপণ করা হয়েছে। মৌসুমের শুরুতে নতুন আলু ভোক্তাকে দিতে পারলে ভালো বাজারমূল্য পেয়ে দ্বিগুণ লাভবান হবেন চাষিরা।

আরও পড়ুন: শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত ঝালকাঠির কৃষক

Advertisement

নীলফামারী সদরের কচুকাটা বন্দরপাড়া এলাকার কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এ বছর ৪ বিঘা জমিতে আগাম আলু রোপণ করেছি। এবার আলুর বীজ ৪০-৫০ টাকা কেজি কিনতে হয়েছে। আগেভাগে আলু উত্তোলন করতে পারলে ৭০-৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা যাবে।’

জলঢাকা উপজেলার মীরগঞ্জের কালকেট দোলাপাড়া গ্রামের তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘যেভাবে সার-কীটনাশকের দাম বাড়ছে, তাতে বিঘাপ্রতি ৪০-৫০ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। যদি ৮০-১০০ টাকা কেজি দাম না পাই তাহলে লস হবে।’

কিশোরগঞ্জ উপজেলার বাহাগিলী ইউনিয়নের দক্ষিণ বাহাগিলী গ্রামের মমতাজ আলী বলেন, ‘এবারও ১১ বিঘা জমিতে আগাম জাতের আলু রোপণের প্রস্তুতি নিয়েছি। আবহাওয়া ভালো থাকলে ৫৮-৬০ দিনের মধ্যে আলু ঘরে তুলতে পারবো। বাজারদর ভালো পেলে সার, বীজ, পরিবহন ও শ্রমিক বাবদ খরচ বাদে লাভ হবে প্রায় ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা।’

আরও পড়ুন: মিরসরাইয়ে বরবটি চাষে লাভবান কৃষক

Advertisement

কিশোরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লোকমান আলম বলেন, ‘উপজেলার মাটি ও আবহাওয়া আগাম আলু চাষের জন্য খুবই উপযোগী। প্রতি বছর এলাকার কৃষক আগাম আলু চাষ করে দ্বিগুণ লাভ করে থাকেন। এবার ৪০০ হেক্টর বেশি জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।’

নীলফামারী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. এস এম আবু বকর সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘গত বছরের তুলনায় আলু চাষ বৃদ্ধি পাবে। বর্তমান আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় উঁচু জমিতে আলু চাষে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। নিচু জমিতে আবহাওয়া দেখে রোপণের কথা বলা হচ্ছে।’

এসইউ/এএসএম