দেশজুড়ে

প্রেমিকের হাতে খুন হন আশা দেবী, হত্যার আগে করেন শারীরিক সম্পর্ক

বগুড়ার শিবগঞ্জে আনসার সদস্য আশা দেবীকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন তার পরকীয়া প্রেমিক নয়ন ইসলাম (২৩)। তাদের মধ্যে ৯ মাস ধরে পরকীয়া সম্পর্ক চলছিল। তিনমাস আগে নয়ন অন্যত্র বিয়ে করায় সম্পর্কে টানাপোড়েন শুরু হয়। পরে হত্যার সিদ্ধান্ত নেন নয়ন।

Advertisement

বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে জেলা পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এতথ্য জানান।

এরআগে মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) দিনগত রাতে শিবগঞ্জ থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে নয়নকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

নয়ন ওই উপজেলার বানাইল পশ্চিমপাড়া গ্রামের রমজান আলীর ছেলে। তিনি আশা দেবীকে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন। বুধবার (২৫ অক্টোবর) বিকেলে আদালতে জবানবন্দি দেন তিনি।

Advertisement

সোমবার (২৩ অক্টোবর) নিজ কক্ষ থেকে আনসার সদস্য আশা দেবীর (৩১) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি বানাইল উত্তরপাড়া গ্রামের ভোজন মোহন্তের স্ত্রী। আশা দেবী ওই গ্রামের সর্বজনীন দুর্গা মন্দিরের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন।

আরও পড়ুন: বগুড়ায় নিজ বাড়িতে নারী আনসার সদস্য খুন

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী জানান, স্বামী মুদি ব্যবসায়ী হওয়ায় দিনের বেশিরভাগ সময় আশা দেবী বাড়িতে একা থাকতেন। প্রায় ৯ মাস আগে প্রতিবেশী নয়নের সঙ্গে তার পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তাদের মধ্যে বিভিন্ন সময় শারীরিক সম্পর্ক হয়। এ অবস্থায় তিনমাস আগে পারিবারিকভাবে অন্যত্র বিয়ে করেন নয়ন। তখন থেকেই নয়নের সঙ্গে সবরকম সম্পর্ক ও মেলামেশা বন্ধ করে দেন আশা দেবী। এনিয়ে তাদের মধ্যে একাধিকবার দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। আশার সঙ্গে অন্তরঙ্গ সম্পর্কের বিচ্ছেদ মেনে নিতে পারেননি নয়ন।

সোমবার রাতে মন্দিরে দায়িত্ব পালন করছিলেন আশা দেবী। পরে পোশাক পরিবর্তন করার জন্য তিনি মন্দির থেকে বাড়িতে যান। এসময় নয়নকে দেখতে পেয়ে বাড়ির মূল ফটক বন্ধ করে দেন। ওইসময় আশা দেবীর বাড়িতে কেউ ছিলেন না। সবাই পূজামণ্ডপে ছিলেন। সুযোগে বুঝে নয়ন বাড়ির পেছনের ইটের প্রাচীর টপকে আশা দেবীর শয়ন কক্ষে প্রবেশ করেন। এসময় আশা দেবী পোশাক পরিবর্তন করছিলেন।

Advertisement

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, নিজ কক্ষে নয়নকে দেখে বিতণ্ডায় জড়ান আশা দেবী। পরে বিভিন্নভাবে ফুঁসলিয়ে তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে লিপ্ত হোন নয়ন। ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক শেষে তিনি শ্বাসরোধে হত্যা করেন।

পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী জানান, তাদের এ সম্পর্ক কেউ না জানায় নির্বিঘ্নে এলাকাতেই চলাফেরা করছিলেন নয়ন। পরে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার ও এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে তাকে শনাক্ত করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আখতার, আব্দুর রশিদ, সহকারী পুলিশ সুপার তানভীর ইসলাম, শিবগঞ্জ থানার ওসি আব্দুর রউফ ও মোকামতলা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ আশিক ইকবাল উপস্থিত ছিলেন।

এসআর/এএসএম