দেশজুড়ে

নেচে-গেয়ে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কারাম উৎসব উদযাপন

ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব কারাম পূজা। বংশ পরম্পরায় যুগ যুগ ধরে প্রতি বছর উত্তরের সমতল ভূমির ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মানুষরা এই কারাম উৎসব পালন করে আসছেন।

Advertisement

বুধবার (২৫ অক্টোবর) বিকেলে জয়পুরহাটের সদর উপজেলার পালী আদিবাসী আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এ উৎসবের আয়োজন করা হয়। স্থানীয় পালী আদিবাসী আদর্শ উন্নয়ন সংস্থা এ উৎসবের আয়োজন করেন।

এতে জয়পুরহাটসহ আশপাশের জেলা থেকে আসা ১০টি নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক দল গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করেন। জমজমাট এমন আয়োজন চলে রাত ৯টা পর্যন্ত।

আরও পড়ুন: রৌহা বিলে মাছ ধরার উৎসবে এসে খালি হাতে ফিরলেন সবাই

Advertisement

সরেজমিনে দেখা গেছে, দুপুরের পর থেকেই বিভিন্ন জায়গা থেকে আসতে শুরু করেছে বিভিন্ন নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষ। এরপর বিকেল থেকে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের নিজস্ব ভাষায় গাওয়া গান আর ছন্দময় নাচে অংশ নেয় তারা।

নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের মতে, কারাম একটি গাছের নাম। পবিত্র গাছটি তাদের মঙ্গলের প্রতীক। এজন্য উৎসবের শুরুতে মাঠের মাঝখানে লাগানো হয় চারটি কলাগাছ। এ সময় তারা নীল-সবুজ শাড়ি আর খোপায় বাহারি ফুল গুঁজে ঢোল-মাদলের তালে নাচে-গানে মাতোয়ারা হয়ে উঠে। বর্ণিল সাজে নেচে-গেয়ে তুলে ধরে নিজেদের ভাষা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য। আর এমন আয়োজন দেখতে ভিড় করেন বিভিন্ন এলাকার মানুষ।

স্থানীয় লাবনী উড়াও জাগো নিউজকে বলেন, প্রতিবছর আমাদের এখানে ঐতিহ্যবাহী কারাম উৎসবের আয়োজন করা হয়। এতে করে আমরা আমাদের ভাষা ও সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পারি।

আরও পড়ুন: গারো পাহাড়ে ফাতেমা রানীর তীর্থ উৎসব শুরু বৃহস্পতিবার

Advertisement

সুশিল পাহান নামে একজন জাগো নিউজকে বলেন, আধুনিক যুগে আমাদের ভাষা ও ঐতিহ্য প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে। তাই এটিকে টিকিয়ে রাখতে প্রতিবছর এমন আয়োজন করা উচিত।

পালী আদিবাসী আদর্শ উন্নয়ন সংস্থার সাধারণ সম্পাদক রতন কুমার সিং জাগো নিউজকে বলেন, প্রতি বছর কারাম উৎসব আয়োজন করা হয়ে থাকে। এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমাদের ভাষা, সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় জাতীয় মূলধারায় সম্পৃক্ততার অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের আহ্বান জানানো হয়।

উৎসবে বাংলাদেশ আদিবাসী সংঘ জয়পুরহাট জেলা শাখার সভাপতি কার্ত্তিক চন্দ্র সিংয়ের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন জয়পুরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট সামছু আলম দুদু।

আরও পড়ুন: দশমীর দিনে আনন্দ-উচ্ছ্বাসে মিশেছে বিষণ্ণতার সুর

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম সোলায়মান আলী, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরাফাত হোসেন, জেলা পরিষদের সদস্য সাবিনা চৌধুরী, বাংলাদেশ মুন্ডা অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি হরিপাল চন্দ্র পাহান, বাংলাদেশ আদিবাসী সংঘ জেলা শাখার উপদেষ্টা অধ্যাপক সুদর্শন সরকার, সাধারণ সম্পাদক সতিশ চন্দ্র পাহান, পালী আদিবাসী আদর্শ উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি লগেন্দ্রনাথ সিং, সাধারণ সম্পাদক রতন কুমার সিং, অর্থ সম্পাদক সুবাস উড়াও, নারী বিষয়ক সম্পাদক সুমি রানী, তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক দিলীপ সিং, অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শ্যামাচরণ সিং, অবসর প্রাপ্ত সহকারী শিক্ষক অজিত সরদার, জেলা আদিবাসী শ্রমজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি বিপেন উড়াও ও আদিবাসী নেতা উত্তম মিনজি।

জেএস/এএসএম