দেশজুড়ে

হামুনে লন্ডভন্ড ৩৮ হাজার ঘরবাড়ি, নিহত ৩

ঘূর্ণিঝড় হামুনের তাণ্ডবে কক্সবাজারে ৩৭ হাজার ৮৫৪টি বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন চার লাখ ৭৬ হাজার ৫৪৯ জন। এসময় দেওয়ালচাপায় তিনজন নিহত হয়েছেন।

Advertisement

বুধবার (২৫ অক্টোবর) রাত ৮টার দিকে জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, ভেঙে পড়েছে পল্লী বিদ্যুতের ৩৫৪টি খুঁটি। বিকল হয়েছে ২৩টি ট্রান্সফরমার। ৪৯৬ স্থানে বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে গেছে। ৮০০ স্থানে গাছ পড়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এসময় দেওয়ালচাপায় কক্সবাজার শহরের পাহাড়তলী এলাকার আবদুল খালেক (৪২), মহেশখালীর উপজেলার বড়মহেশখালী ইউনিয়নের গোরস্তানপাড়ার হারাধন দে (৪৫) ও চকরিয়া উপজেলার বদরখালী গ্রামের আশকার আলী (৪৫) নিহত হয়েছেন।

আরও পড়ুন: হামুনের তাণ্ডবে অচল কক্সবাজারের জীবনযাত্রা

Advertisement

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, মঙ্গলবার রাত ৮টা থেকে বুধবার রাত ১০টা পর্যন্ত শহরের বিদ্যুৎ, টেলিযোগাযোগ ও ইন্টারনেট সেবা বন্ধ ছিল। বিদ্যুৎ না থাকায় পানি সংকট দেখা দিয়েছে শহরজুড়ে। তবে সকাল থেকে উপড়ে পড়া গাছ কেটে শহরের প্রধান সড়ক, সৈকত সড়ক ও কলাতলী সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করা হয়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, এবারের ঘূর্ণিঝড় নিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর এবং জেলা প্রশাসন উদাসীনতার পরিচয় দিয়েছে। যার ফলে সাধারণ মানুষের মাঝে নিরাপদে সরে আসার আগ্রহ দেখা যায়নি। ফলে ক্ষতির পরিমাণ বেশি হয়েছে।

কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মাহাবুবুর রহমান চৌধুরী বলেন, কয়েক ঘণ্টার তাণ্ডবে পৌরশহরে কয়েক শতাধিক ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আংশিক ক্ষতি হয়েছে আরও সহস্রাধিক ঘর। আমরা উপরে পড়া গাছ কাটার নির্দেশ দিয়েছি। ক্ষতিগ্রস্তদের ঢেউটিন এবং ত্রিপল দিয়ে সহযোগিতা করছি।

পৌরসভার নারী কাউন্সিলর শাহেনা আকতার পাখি বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে তার তিনটি ওয়ার্ডে অন্তত দেড় হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসে বিলীন হয়েছে অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের শুঁটকি উৎপাদনের প্রায় ৭০০ মহাল।

Advertisement

আরও পড়ুন: কক্সবাজারে হামুনের তাণ্ডবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি: একজনের মৃত্যু

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল গণি বলেন, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের অভ্যন্তরে বেশ কিছু গাছপালা ও বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়েছে। শহরের বিভিন্ন সড়কে বিদ্যুতের ট্রান্সফরমার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব সংস্কার ও ঠিক করতে দু-তিন দিন সময় লেগে যেতে পারে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিভীষণ কান্তি দাশ বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরির কাজ চলছে। মানবিক সহায়তা হিসেবে কক্সবাজার সদর, রামু, ঈদগাঁও, চকরিয়া, পেকুয়া, কুতুবদিয়া ও মহেশখালীতে সাড়ে চার লাখ টাকা ও ১৪ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে পাঁচ হাজার প্যাকেট শুঁকনা খাবার বরাদ্দ করা হয়।

সায়ীদ আলমগীর/আরএইচ/এএসএম