জাতীয়

অতিপ্রবল হলো ‘হামুন’, গতি বাড়িয়ে এগোচ্ছে উপকূলে

প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ আরও ঘণীভূত হয়ে অতিপ্রবণ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। একই সঙ্গে এটি গতি বাড়িয়ে বাংলাদেশের উপকূলের দিকে এগিয়ে আসছে।

Advertisement

মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) বাংলাদেশ ও ভারতীয় অধিদপ্তর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সোমবার এটি ঘণ্টায় ১৩ কিলোমিটার বেগে এগোলেও সর্বশেষ এটি ২৩ কিলোমিটার বেড়ে এগোচ্ছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।

ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশের উপকূলের ২১৫ কিলোমিটারের মধ্যে চলে এসেছে। তবে সতর্ক সংকেত বাড়েনি।

Advertisement

আরও পড়ুন>> চট্টগ্রাম ও পায়রা বন্দরে ৭ নম্বর বিপৎসংকেত

পায়রা ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে ৭ নম্বর, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে ৬ নম্বর ও মোংলা সমুদ্রবন্দরে ৫ নম্বর বিপৎসংকেত বহাল রেখেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘এখন ঘ্ণ্টায় ১৮ থেকে ২১ কিলোমিটার বেগে ঘূর্ণিঝড়টি এগোচ্ছে। এর গতি আরও বাড়ার সম্ভাবনা আছে। আগে ১৩ কিলোমিটার গতিতে এগিয়েছিল।’

তিনি আরও বলেন, ‘শক্তিশালী হয়ে অতিপ্রবল হলেও তা অল্প সময়ের জন্য। এরপর হয়তো এর তীব্রতাটা কমে আসবে। যখন দুর্বল হবে তখন এগোনোর গতি বেড়ে যায়।

Advertisement

‘ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং শেষ মুহূর্তে প্রতি ঘণ্টায় ৫৫ থেকে ৫৬ কিলোমিটার গতিতে এগিয়েছিল। পূর্বাভাসের তিন ঘণ্টা আগেই এটি উপকূলে আঘাত হেনেছিল’ বলেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক।

আরও পড়ুন>> জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কায় সাতক্ষীরার উপকূলবাসী

ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর দুপুরে জানিয়েছে, অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়টি সর্বশেষ ঘণ্টায় ২৩ কিলোমিটার বেগে বাংলাদেশের উপকূলের দিকে এগোচ্ছে।

মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে (ক্রমিক নম্বর-১১) জানানো হয়েছে, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন' আরও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হয়ে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। এটি মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৩০ কিলোমিটার পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ২৯৫ কিলোমিটার পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ২৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ২১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে শেষ রাত থেকে সকাল নাগাদ মেঘনা মোহনার নিকট দিয়ে বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল ঘূর্ণিঝড় হিসেবে অতিক্রম করতে পারে।

এতে আরও বলা হয়, প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার, যা দমকা বা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ১৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটে সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে।

পায়রা ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপৎসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ৫ নম্বর বিপৎসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, ভোলা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর ৭ নম্বর বিপৎ সংকেতের আওতায় থাকবে। উপকূলীয় জেলা বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর ৫ নম্বর বিপৎসংকেতের আওতায় থাকবে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং এর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোতে নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩ থেকে ৫ ফুটের বেশি উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে ।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে ভারী (৪৪ থেকে ৮৮ মিমি) থেকে অতিভারী (২৮৯ মিমি) বর্ষণ হতে পারে। অতি ভারী বর্ষণের প্রভাবে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ী অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমি ধস হতে পারে।

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

আরএমএম/জেএইচ/জেআইএম