কৃষিতে বাংলাদেশের সাফল্য ঈর্ষণীয়। কৃষিজমি কমতে থাকা, জনসংখ্যা বৃদ্ধিসহ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বন্যা, খরা, লবণাক্ততা ও বৈরী প্রকৃতিতেও খাদ্যশস্য উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উদাহরণ। ধান, গম ও ভুট্টা বিশ্বের গড় উৎপাদনকে পেছনে ফেলে ক্রমেই এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ। করোনার পর সুস্থ হয়ে উঠেছে পৃথিবী। ফলে কৃষিতে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার সময় এখনই।
Advertisement
কৃষিতে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI) যাকে বাংলায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বলা হয়, যা হলো কম্পিউটার বিজ্ঞানের একটি শাখা । সৌভাগ্যবশত কৃষি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা উভয়ই বেশ বিস্তর ক্ষেত্র। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অনেক শাখা প্রশাখা আছে। তার মধ্যে আজকাল দুটি শাখায় সবচেয়ে বেশি ব্যবহারিক কাজ হচ্ছে বলে আমার মনে হয়। একটা হলো কম্পিউটার ভিশন, বাংলায় যান্ত্রিক দৃষ্টি বলতে পারি। আরেকটা হলো প্রেডিকশন বা পূর্বাভাস। আমি আলোচনা যান্ত্রিক দৃষ্টিতে সীমাবদ্ধ রাখব। কৃষির অনেক শাখা আছে, আমি এ লেখা উদ্ভিজ্জ ফসলে সীমাবদ্ধ রাখছি।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কাজে লাগিয়ে উন্নয়ন করা সম্ভব নয় এমন ক্ষেত্র খুব কমই আছে। তবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের জন্য কৃষি একটি উজ্জ্বল ক্ষেত্র। ইতোমধ্যে কৃষিতে উন্নত দেশ অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, চীন, ভারতসহ অনেক দেশ কৃষিক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার শুরু করেছে। এগুলো উৎপাদনকে অনেকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। কৃষিকাজকে করেছে ব্যাপক সহজ। জমি রক্ষণাবেক্ষণ থেকে শুরু করে কৃষির মোটামুটি সব ক্ষেত্রেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা খুব দক্ষতার সাথে কাজ করতে পারে। রোবট হলো শরীর, রোবটকে নিয়ন্ত্রণ করছে কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা। আর এর সাথে যুক্ত হয়েছে ইন্টারনেট অফ থিংস (আইওটি)। এ সম্পূর্ণ ব্যাপারটা বলা হচ্ছে স্মার্ট এগ্রিকালচার। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও রোবোটিক্স লেন্স জুমের সাহায্যে মেশিনকে আকার এবং টেক্সচার চিনতে প্রশিক্ষিত করা যায়। রোবোটিক্সের মাধ্যমে মাটি ও গাছপালা পর্যবেক্ষণ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা এ আই) কৃষি ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নতি ঘটাতে পারে।
Advertisement
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাচালিত প্রযুক্তির মাধ্যমে ফসল ফলন, মাটির স্বাস্থ্য এবং হার্বিসাইড প্রতিরোধ করে। আগাছা ও গাছকে আলাদা করতে পারে। ফুল কবে ফুটবে, ফল কবে পাকবে, কত ফল-ফসল বিক্রি করা যাবে অনুমান করে। সঠিক সময়ে কীট শনাক্ত করে। তাই কৃষিক্ষেত্রেও কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগ দ্রুত গতিতেই বাড়ছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ক্রপ মডেলিং, ডিসিশন সাপোর্ট সিস্টেম, প্রিসিসন এগ্রিকালচার। ভালো ও মন্দ বীজগুলো আলাদা করা সম্ভব। যান্ত্রিক দৃষ্টি প্রয়োগ করে বাণিজ্যিক কৃষিতে দিনে কয়েক হাজার বীজ বপন করা বা চারা স্থানান্তর করা খুবই সাধারণ দৈনন্দিন ঘটনা। উপযুক্ত চারাগুলো চটপট বেছে নিতে পারবে। যান্ত্রিক দৃষ্টি প্রয়োগ করে পাড়ার উপযুক্ত পাকা ফলগুলো সহজেই আলাদা করা সম্ভব।
একটা মোবাইল ফোন আ্যাপ ব্যবহার করেও পাকা ফল শনাক্ত করতে পারেন। কম্পিউটারে সিমুলেশন মডেলে এর ফলে আগে থেকেই ধারণা করা যাবে যে কতটুকু সার, জল কোন সময়ে এবং কতটুকু ব্যবহার করলে কতটুকু ফলন পাওয়া যাবে। স্যাটেলাইট বা ড্রোন ব্যবহার করে জমির ফার্টিলিটি ক্রম (fertility gradient) বানিয়ে সার ও বীজ প্রয়োগ এবং বপন করা যায়। জমিতে জল/ সেচ দেওয়ার জন্য মাইক্রোকন্ট্রোল লাগানো ড্রিপ, স্প্রিংকলার বা রেনগান প্রযুক্তি ব্যবহার করা ইত্যাদি।
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (AI) প্রযুক্তি বৈশিষ্ট্য
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার আদর্শ বৈশিষ্ট্য হলো যুক্তিযুক্ত কারণ এবং এমন প্রক্রিয়াগুলো গ্রহণের ক্ষমতা যা নির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনের সর্বোত্তম সুযোগ পায়। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার একটি সাবসেট হলো মেশিন লার্নিং, যা এই ধারণাটি বোঝায় যে কম্পিউটার প্রোগ্রামগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে মানুষের কাছ থেকে সহায়তা ছাড়াই নতুন ডেটা থেকে শিখতে এবং মানিয়ে নিতে পারে।
Advertisement
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার
বর্তমান দুনিয়ায় কম্পিউটার প্রযুক্তিনির্ভর এমন কোনো ক্ষেত্র খুঁজে পাওয়া যাবে না যেখানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহারিক প্রয়োগ নেই যেসব ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহৃত হচ্ছে- আধুনিক কৃষিতে, চিকিৎসাবিদ্যায় রোগ নির্ণয়, স্টক মার্কেটের শেয়ার লেনদেন, রোবট কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে, আইনি সমস্যার সঠিক সমাধান, বিমান চালনায়, যুদ্ধক্ষেত্র পরিচালনায়, ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনায়, ডিজাইন তৈরি, সাইবার নিরাপত্তার জন্য, ভিডিও গেমসে ব্যবহৃত হয়, স্মার্ট গাড়িতে ব্যবহৃত হয়, আপনার মেল স্প্যাম ফিল্টার করতে, উবার এ আপনার ভ্রমণের দাম নির্ধারণ করতে, ডাটা সেন্টার ম্যানেজমেন্টে, জিনোমিক্স / সিকোয়েন্সিং এ ব্যবহৃত হয়।
বাংলাদেশের কৃষিতে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি
বর্তমানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা হয়ে উঠেছে শিক্ষা এবং আধুনিক কৃষি ক্ষেত্রে অপার সম্ভাবনার অংশ। ইতি মধ্যে কৃষিতেও আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার শুরু হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় ইতিমধ্যে কৃষিতে AI প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান মদিনা টেক লিমিটেডে এর একদল তরুণ আইটি ইঞ্জিনিয়ার ও কৃষিবিদরা সিইও মদিনা আলীর নেতৃত্বে যুগন্তকারী ‘ডা. চাষ ‘ মোবাইল অ্যাপ গুগল প্লে-স্টেরে রিলিজ করেছেন। এ অ্যাপ দিয়ে এখনই আপনি ছাদ-বাগান এবং মাঠ ফসলের রোগ ও পোকামাকড়ের সঠিক তথ্য ও সমাধান জানতে পারেন। এ অ্যাপ দিয়ে ফসলের আক্রান্ত স্থানের ছবি তুলুন, তা হলেই ‘ডা.চাষী’ বলে দেবে আপনার ফসলের সমস্যা ও সমাধান।
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটে (ব্রি) ধানের রোগবালাই চিহ্নিতকরণের লক্ষ্যে ‘রাইস সল্যুশন’ (সেন্সরভিত্তিক ধানের বালাই ব্যবস্থাপনা) নামক একটি মোবাইল অ্যাপস উদ্বোধন করা হয়েছে, যা ধানক্ষেত থেকেই আক্রান্ত ধান গাছের ছবি দেখে রোগ চিহ্নিত করতে সক্ষম। ২ জানুয়ারি ২০২৩, সোমবার কৃষিমন্ত্রী গাজীপুরে ব্রিতে অনুষ্ঠিত ছয় দিনব্যাপী বার্ষিক গবেষণা পর্যালোচনা কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এ মোবাইল অ্যাপসটি উদ্বোধন করেন।
ভবিষ্যতে কৃষিতে স্মার্ট প্রযুক্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে; কৃষিকে একটি সাশ্রয়ী, টেকসই, বুদ্ধিমান প্রযুক্তিনির্ভর স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে- এআই, আইওটি এবং বিগ ডেটা। স্মার্ট ফারমিং/কৃষিতে ডিজিটালাইজেশন, অর্থাৎ আগামীতে কৃষিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI প্রযুক্তি) সম্প্রসারণ ঘটিয়ে; কৃষিকে সাশ্রয়ী, টেকসই, বুদ্ধদীপ্ত প্রযুক্তিভিত্তিক স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার এখনই সময়।
দেশের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের মধ্যে বঙ্গবন্ধু কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ড্রোন প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে বলে জানা যায়। বাংলাদেশ সরকারের প্রতিরক্ষা ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, নেদারল্যান্ডসের টুয়েন্ট বিশ্ববিদ্যালয় এবং আন্তর্জাতিক ভুট্টা ও গম উন্নয়ন কেন্দ্র যৌথভাবে ‘স্টারস’ প্রকল্পের আওতায় দেশের কৃষি গবেষণায় আধুনিক, উন্নত ও কার্যকর প্রযুক্তি হিসেবে ড্রোন ব্যবহার করা হচ্ছে। কৃষিতে AI প্রযুক্তি সম্বলিত ড্রোন অর্থাৎ ড্রোনের সঙ্গে AI কাস্টমাইজ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে ইন্টিগ্রেট করলে ড্রোন একবার ফসলের খেতের উপর দিয়ে উড়ে গেলে ঐ এলাকার যে সার্বিক অবস্থা জানান দিতে আগামীতে সক্ষম তা হলোঃ ফসলের মাঠের আর্দ্রতা পরিমাপ করা, ফসলে উপাদানের উপস্থিতি নির্ধারণ করা, শস্য রোপন ডিজাইন করা, বীজ রোপন করা, পোকার আক্রমন জানা (ইমেজ প্রযুক্তি), কীটনাশক স্প্রে করা, সেচ মনিটরিং করা, ফসলের উৎপাদন জানা, ফসলের সার্বিক মনিটরিং করা, মাটির নিউট্রেন্ট, আর্দ্রতা, তাপমাত্রা, পিএইচ, লবণাক্ততা জানা, ফসলের নিউট্রেন্ট এর অভাব জানা, ফসলের রোগ ও পোকামাকড় জানা এবং তার সমাধান দেয়া, কৃষি ওয়েদার ফোরকাস্টিং অ্যান্ড আগাম এলার্মিং দেওয়া ইত্যাদি।
কৃষি খাতে উন্নয়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ইতিমধ্যে “ই-ভিলেজ” নামক প্রকল্প শুরু করতে যাচ্ছে। সেন্সরের মাধ্যমে ফসল বা সবজির ক্ষেত থেকে বিভিন্ন তথ্য নিয়ে তা মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে কৃষকের কাছে পৌঁছে দিতে পারবে। “ই-ভিলেজ” নামক এই প্রজেক্টের মাধ্যমে ফসলি জমির মাটির স্বাস্থ্য সম্পর্কে জানা যায়, ফসল সর্বক্ষণ পর্যবেক্ষণে রেখে ফসলে কোন রোগ দেখা দিয়েছে কিনা তা বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে সাথে সাথেই জানা যায় এবং সেই সাথে অ্যাপ থেকে পাওয়া তথ্য ব্যবহার করে কৃষক তার উৎপাদন খরচ কমিয়ে সর্বোচ্চ ফলন নিশ্চিত করতে পারবেন। এই প্রজেক্টের আর্থিক সহায়তায় রয়েছে চীনা দূতাবাস।
ইন্টারনেট অফ থিমস ( IoT )
ইন্টারনেট অফ থিমস ( IoT ) অর্থ হল বিভিন্ন জিনিসপত্রের সাথে ইন্টারনেটের সংযোগ। বিশ্বের উন্নত দেশগুলি ইন্টারনেট অফ থিংস ( IoT) প্রযুক্তি ব্যবহার করে এখন কৃষি ক্ষেত্রে ড্রোন প্রযুক্তি, ক্লাউড প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃষির অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ কৃষিতে ড্রোন প্রযুক্তির ব্যবহার ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। কৃষিতে ড্রোন প্রযুক্তিকৃষি ড্রোন বৈশিষ্ট্য
০১. উদ্ভিদ সুরক্ষা ড্রোন : অপারেশনে দ্রুত, দক্ষ এবং কার্যকরী, ড্রোন স্প্রে করা ন্যূনতম সময়ের মধ্যে অনেক বড় এলাকা কভার করে যাতে অপারেটরদের স্বাস্থ্যের উপর কোন ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে না।০২. মাল্টি ইউটিলিটি এরিয়াল প্ল্যাটফর্ম : স্প্রে করার জন্য আমাদের বায়বীয় প্ল্যাটফর্ম সরাসরি বীজ বপন, সার সম্প্রচার এবং পরাগায়ন পর্যন্ত পরিবর্তনশীল হার স্প্রে করা থেকে শুরু করে কৃষি ভেলু চেইন জুড়ে অন্যান্য ক্রিয়াকলাপগুলিকে কভার করার জন্য সচেষ্ট থাকে।
০৩. ফসল স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ : আমাদের ড্রোন ভিত্তিক ইমেজিং শস্য ক্ষতি কমাতে এবং কৃষকের উৎপাদনশীলতা উন্নত করতে প্রাথমিক চাপ সনাক্তকরণের জন্য ফসলের ক্রমাগত পর্যবেক্ষণ সক্ষম করে। ফলন এবং কীটপতঙ্গের পূর্বাভাস নিশ্চিত করে ।০৪. এআই ভিত্তিক ক্রপ ফেনোটাইপিং : কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অ্যালগরিদমের সাথে মিলিত ড্রোন ইমেজিং উদ্ভিদের সংখ্যা, উদ্ভিদের উচ্চতা, গাছপালা ইত্যাদির মতো বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের উপর ফোকাস করে স্কেলে ক্রপ ফেনোটাইপিং সক্ষম করে।
০৫. হাইপার স্পেকট্রাল ইমেজিং (HSI) : আমাদের এইচএসআই সিস্টেম বর্ণালী জুড়ে তথ্য দেয় যা উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্যগুলির খুব বিশদ তথ্য দেয়।০৬. কাস্টম সমাধান : গবেষণা ইনস্টিটিউট, কৃষি কোম্পানিগুলিকে তাদের ক্লায়েন্টদের আরও ভাল পরিষেবা দিতে এবং টেকসই কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থা তৈরি করতে সর্বশেষ ড্রোন এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি গ্রহণে সহায়তা করে।
বীজ ড্রোন বৈশিষ্ট্য০১. এরিয়াল সার্ভে এবং ম্যাপিং : ড্রোন এবং এআই ব্যবহার করা হয় ভূখণ্ডের জরিপ এবং ম্যাপ করার জন্য পুনঃবনায়নের প্রয়োজনীয় স্থানগুলি চিহ্নিত করতে।০২. বনের প্রয়োজনীয়তা বোঝা : AI ব্যবহার করে মাটি, জলবায়ু, দেশীয় বীজের জাত এবং ঐতিহাসিক বৃদ্ধির ডেটার মতো বিভিন্ন পরামিতির উপর ভিত্তি করে বৃক্ষ নির্ধারণ করুন।০৩. বীজ বল প্রস্তুতি : বীজ বলগুলি একটি সম্প্রদায়ের নেতৃত্বে পরিচালিত কার্যকলাপে গ্রামীণ কর্মসংস্থান এবং অন্তর্ভুক্তি তৈরি করে।০৪. ড্রোন স্থাপন : বনায়নের জন্য ড্রোনগুলি দ্রুত এবং মাপযোগ্য, নির্ধারিত এলাকায় বীজ ফেলে দেয়; দূর্গম ভূখণ্ডের উপর দিয়েও এলাকায় পৌঁছাচ্ছে।০৫. জিওট্যাগিং ড্রোন পথ : ড্রোন দ্বারা অনুসৃত পথটি জিওট্যাগ করা হয়, যা গাছের পরিসংখ্যান সংগ্রহের জন্য বপন করা এলাকার পর্যায়ক্রমিক ড্রোন পর্যবেক্ষণের সুবিধা দেয়।০৬. পোস্ট বৃদ্ধি পর্যবেক্ষণ : বন পর্যবেক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় বিশ্লেষণ তৈরি করার জন্য জিওট্যাগযুক্ত বীজ বলগুলি বছরের পর বছর ধরে বৃদ্ধির জন্য পর্যবেক্ষণ করা হয়।ক্লাউড প্রযুক্তি এবং আইওটি
অত্যাধুনিক মেশিন লার্নিং মডেল দ্বারা চালিত মাটির পুষ্টির তাত্ক্ষণিক নির্ণয় ( ইন্টেলিজেন্ট সয়েল সেন্সর (আই এস এস) দ্রুত এবং সাশ্রয়ী উপায়ে মাটির আর্দ্রতা, তাপমাত্রা, লবণাক্ততা HP, এবং মাটির প্রধান পুষ্টি উপাদান বিশ্লেষণ করতে পারে ।
সার সংক্রান্ত সুপারিশ স্বয়ংক্রিয়ভাবে ১০ মিনিটের মধ্যে তৈরি হয় (কৃষকদের তাদের ফসল, মাটির ধরন এবং মাটির পুষ্টির স্তরের উপর ভিত্তি করে নাইট্রোজেন, ফসফরাস, পটাসিয়াম, সালফার এবং জিঙ্কের জন্য সারের সুপারিশ প্রদান করা হয় )
বিগ ডাটাবিগ ডাটা হল স্ট্রাকচার্ড, সেমি স্ট্রাকচার্ড এবং আনস্ট্রাকচার্ড ডেটার সংমিশ্রণ যা সংস্থাগুলি দ্বারা সংগৃহীত যা তথ্যের জন্য খনন করা যেতে পারে এবং মেশিন লার্নিং প্রকল্প, ভবিষ্যদ্বাণীমূলক মডেলিং এবং অন্যান্য উন্নত বিশ্লেষণ অ্যাপ্লিকেশনগুলিতে ব্যবহার করা যেতে পারে।
বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় এবং স্মার্ট কৃষি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে-কৃষিতে এআই, আইওটি এবং বিগ ডেটার গবেষণা উদ্ভাবন এবং বাস্তবায়নের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষমতা তৈরি করা। কৃষি ব্যবস্থাপনা ও উৎপাদনশীলতাকে ডিজিটাইজ এবং স্বয়ংক্রিয় করতে ডেটা চালিত কৃষি পরিষেবা নিশ্চিত করা। খাদ্য-পুষ্টি নিরাপত্তা, কৃষি-পরিবেশ, স্বাস্থ্য সুরক্ষা, ডিজিটাল ফার্মিং সমাধান এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা নিশ্চিত করতে ডিজিটালভাবে কৃষকদের ক্ষমতায়ন করা।
ভবিষ্যতে কৃষিতে স্মার্ট প্রযুক্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে; কৃষিকে একটি সাশ্রয়ী, টেকসই, বুদ্ধিমান প্রযুক্তিনির্ভর স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে- এআই, আইওটি এবং বিগ ডেটা। স্মার্ট ফারমিং / কৃষিতে ডিজিটালাইজেশন, অর্থাৎ আগামীতে কৃষিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI প্রযুক্তি) সম্প্রসারন ঘটিয়ে ; কৃষিকে সাশ্রয়ী, টেকসই, বুদ্ধদীপ্ত প্রযুক্তি ভিত্তিক স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার এখনই সময়।
লেখক: কৃষি ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞ।srb_ccdbseed@yahoo.com
এইচআর/জিকেএস