রাজনীতি

প্রধান বিচারপতিকে হেফাজতের স্মারকলিপি

সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিলের দাবিতে করা রিটের শুনানি না করার জন্য প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহাকে স্মারকলিপি দিয়েছে হেফাজত ইসলাম। সংগঠনটির পক্ষ থেকে সোমবার সকালে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের মাধ্যমে প্রধান বিচারপতির কাছে এ স্মারকলিপি দেওয়া হয়।রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিলের দাবিতে করা রিট আবদনের শুনানির জন্য আজ হাইকোর্টের একটি বেঞ্চে বেলা ২টায় সময় নির্ধারিত রয়েছে। তার আগেই প্রধান বিচারপতি বরাবর এই স্মারক লিপি দেয়া হলো। হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের ঢাকা মহানগর আহ্বায়ক নূর হোসেন কাসেমী স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিতে বলা হয়, বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২ (ক) এ উল্লেখ রয়েছে প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম, তবে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ অন্যান্য ধর্ম পালনে রাষ্ট্র সমমর্যাদা ও অধিকার নিশ্চিত করিবে। দীর্ঘ ২৮ বছর যাবৎ সংবিধানে ‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম’ বর্তমান রয়েছে। ইতোপূর্বে একবার রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম চ্যালেঞ্জ করে দায়েরকৃত রিট হাইকোর্টে খারিজ হয়ে যায়। ৯২ ভাগ মুসলিম অধ্যুষিত বাংলাদেশের সংবিধানে সন্নিবেশিত রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম অধিকাংশ জনগণের চিন্তা, চেতনা ও বিশ্বাসের প্রতিফলন।  এটি সেটেল্ড বিষয়। কিন্তু সম্প্রতি বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করে ২৮ বছর আগে দায়েরকৃত একটি রিট সচল করে শুনানির জন্যে হাইকোর্টের কার্যতালিকাভুক্ত করা হয়েছে। নতুনকরে ইস্যুটিকে সামনে নিয়ে আসার বিষয়টি দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণকে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন করেছে।স্মারকলিপিতে আরো বলা হয়, এক সাগর রক্ত আর অসীম ত্যাগের বিনিময়ে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীনতার পর দেশে ফিরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষণা করেছিলেন যে, বাংলাদেশ পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম রাষ্ট্র। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে তিনি দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম দেশ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ওআইসি সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন। এ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের ধর্ম হচ্ছে ইসলাম যা একান্ত বাস্তবতা। এ বাস্তবতাকে অস্বীকার করা বা পাশ কাটানোর কোন সুযোগ নেই। আর জনগণের অভিপ্রায়ের পরম অভিব্যক্তি হচ্ছে সংবিধান। হেফাজতের স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয় দেশে বিভিন্ন ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠির আলাদা ভাষা থাকা সত্ত্বেও অধিকাংশ মানুষের ভাষা বাংলা হচ্ছে আমাদের রাষ্ট্রভাষা যা সংবিধান স্বীকৃত। সুতরাং ৯২ ভাগ জনগণের ধর্ম ইসলাম রাষ্ট্রধর্ম যা আমাদের সংবিধানের যথার্থ ও গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কিন্তু এ নিয়ে কারো কারো মাথা ব্যাথার বিষয়টি উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।সুতরাং সংবিধানে সন্নিবেশিত ‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম’ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে দয়েরকৃত রিটের শুনানি বন্ধে আইন মন্ত্রনালয়ের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ একান্ত জরুরি। আশা করি আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের বিশ্বাস ও অনুভূতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে রিটটি বাতিলে আদালতে প্রয়োজনীয় ও কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন, হেফাজতে ইসলামের ঢাকা মহানগরীর যুগ্ম আহ্বায়ক মুজিবুর রহমান হাশেমী, ফজলুর রহমান কাসেমীসহ বেশ কয়েকজন নেতা। এফএইচ/এমএমজেড/এমএস

Advertisement