দেশজুড়ে

মৃত্যুর খুব কাছ থেকে ফিরে এসেছি: বেঁচে যাওয়া দুই বোন

‘হঠাৎ জোরে ট্রেনের বগি ঝাঁকুনি দেয়। পরে শুনতে পাই আমাদের ট্রেনের দুটি বগি পড়ে গেছে। তবে তখন মনে হয়েছিল এই বুঝি সময় শেষ হয়ে এসেছে। আল্লাহর অশেষ রহমতে আমরা দুই বোন বেঁচে আছি। আমরাও তো এমন দুর্ঘটনার শিকার হতে পারতাম।’

Advertisement

জাগো নিউজের কাছে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তাকিউস সামিরা জিনান। এ দুর্ঘটনায় তিনি ও তার বোন নুসরাত জাবিন পৃথা প্রাণে বেঁচে যান। তারা কিশোরগঞ্জ সদর এলাকার বাসিন্দা।

আরও পড়ুন: মিরসরাইয়ে মাইক্রোবাসে ট্রেনের ধাক্কা, নিহত ১১

তাকিউস সামিরা জিনান বলেন, কিশোরগঞ্জ স্টেশন থেকে ছেড়ে আসা ট্রেনটি ভৈরব স্টেশনে যাত্রা বিরতি করে। পরে স্টেশন থেকে ট্রেনটি যখন ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় ঠিক এর এক মিনিটের মধ্যে হঠাৎ বিকট শব্দ হয়ে আমাদের বগিটি খুব জোরে একটা ঝাঁকুনি দেয়। তখন চারদিকে শুধু চিৎকার আর আহাজারি শোনা যাচ্ছিল। পরে ট্রেন থেকে নেমে দেখি আমাদের ট্রেনের পেছনের দুটি বগি চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে উল্টে আছে। সেখানে পড়ে ছিল অসংখ্য মরদেহ। এতগুলো লাশ কখনো সরাসরি দেখা হয়নি।’

Advertisement

তিনি বলেন, ক্ষতবিক্ষত মরদেহ দেখে ভেতরটা কেঁপে উঠেছে। আর মনে হচ্ছে মৃত্যুর খুব কাছ থেকে বুঝি ফিরে এসেছি। আল্লাহর অশেষ রহমতে আমরা দুই বোন বেঁচে আছি। আমরাও তো এমন দুর্ঘটনার শিকার হতে পারতাম।’

নুসরাত জাবিন পৃথা বলেন, ‘আমরা দুই বোন পূজার ছুটিতে কিশোরগঞ্জ নিজ বাড়িতে এসেছিলাম। ছুটি শেষে আজ বিকেলের ট্রেনে ঢাকায় যাওয়ার জন্য কিশোরগঞ্জ স্টেশন থেকে ট্রেনে রওয়ানা হই। ওই ট্রেনেই ভয়াবহ এ দুর্ঘটনা ঘটে।

আরও পড়ুন: আখাউড়ায় উরসে এসে ট্রেন দুর্ঘটনা, নিহত বেড়ে ৪

এরআগে সোমবার (২৩ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ভৈরব রেলস্টেশনের আউটার পয়েন্টে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

Advertisement

রাত ৮টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ১৭ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ সংখ্যা আরও বাড়তে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, মালবাহী ট্রেনটি ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের দিকে যাচ্ছিল। একইসময় ভৈরব থেকে ঢাকায় যাচ্ছিল যাত্রীবাহী ট্রেন এগারো সিন্ধুর। ভৈরব রেলস্টেশনের আউটার পয়েন্টে ক্রসিংয়ে যাত্রীবাহী ট্রেনের শেষ দুই বগিতে ধাক্কা দেয় মালবাহী ট্রেনটি। এতে যাত্রীবাহী ট্রেনের কয়েকটি বগি উল্টে যায়।

রাজীবুল হাসান/এসআর/এএসএম