জাতীয়

দেশে ৭৬ শতাংশ পরিবার খাচ্ছে আয়োডিনযুক্ত লবণ

বর্তমানে দেশের ৭৬ শতাংশ পরিবার আয়োডিনযুক্ত প্যাকেট লবণ খাচ্ছে। তিন দশক আগে এ হার ছিল অনেক কম। ফলে ওই সময় (১৯৯৩ সাল) আয়োডিনের অভাবজনিত সমস্যার হার ছিল ৬৮ দশমিক ৯০ শতাংশ। যা এখন কমে দাঁড়িয়েছে ২৪ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ। আগে ৮ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ মানুষের মাঝে গলগণ্ড এবং শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ মানুষের মাঝে বামনত্ব ছিল।

Advertisement

বিশ্ব আয়োডিন দিবস উপলক্ষে শনিবার (২১ অক্টোবর) এক আলোচনা সভায় এসব তথ্য জানানো হয়। স্বল্প পরিসরে বাংলাদেশে দিবসটি পালন করে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক)। এবারই দেশে প্রথমবারের মতো দিবসটি পালিত হলো।

আরও পড়ুন: লবণে আয়োডিন না থাকলে ৩ বছরের জেল, জরিমানা ১৫ লাখ

আলোচনা সভায় বলা হয়, আয়োডিন মানুষের স্বাভাবিক, মানসিক ও শারীরিক বৃদ্ধির জন্য অপরিহার্য। দেশে অনুপুষ্টির অভাবজনিত সমস্যার মধ্যে আয়োডিন ঘাটতিজনিত সমস্যা ছিল অন্যতম। নব্বইয়ের দশক পর্যন্ত ছিল এ সমস্যা। ওই সময় গলগণ্ড, হাবাগোবা, বামনত্ব, অকাল গর্ভপাত, শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধীত্বসহ বিভিন্ন সমস্যা প্রকট ছিল। যা এখন উন্নতি হয়েছে।

Advertisement

সভায় জানানো হয়, কোনো দেশের ৯০ শতাংশ মানুষ আয়োডিনযুক্ত লবণ ব্যবহার করলে সে দেশ আন্তর্জাতিকভাবে আয়োডিনযুক্ত লবণ ব্যবহারে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করে। আর মাত্র ১৪ শতাংশ মানুষকে আয়োডিনযুক্ত লবণ ব্যবহারের আওতায় নিয়ে আসতে পারলেই বাংলাদেশ সে স্বীকৃতি অর্জন করবে।

বিসিক চেয়ারম্যান বলেন, একসময় দেশের বেশকিছু স্থানে বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে আয়োডিন ঘাটতিজনিত সমস্যা ব্যাপক আকারে দেখা দেয়। সে সময় পথেঘাটে গলগণ্ড রোগী দেখা যেত। এসব সমস্যা থেকে উত্তরণের বিসিক আয়োডিন ঘাটতিজনিত সমস্যা নিরসনে সর্বজনীন আয়োডিনযুক্ত লবণ উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে নব্বই দশক থেকে। কার্যক্রমের অংশ হিসেবে লবণ মিলের নিবন্ধন প্রদান, মিলসমূহকে পটাশিয়াম আয়োডেট সরবরাহ ও কারিগরি সহায়তা প্রদান, লবণমিল ও বাজার পর্যায়ে মনিটরিং এবং আয়োডিনযুক্ত লবণ ব্যবহারে সচেতনতামূলক বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। এখন পরিস্থিতি অনেক ভালো হয়েছে। দীর্ঘ তিন দশকের পরিশ্রমের ফলে দেশ দৃশ্যমান গলগণ্ড এবং বামনত্বের অভিশাপ থেকে মুক্ত হয়েছে।

আরও পড়ুন: প্রাণি খাদ্য তৈরিতেও আয়োডিনযুক্ত লবণ না থাকলে জেল জরিমানা

সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিসিক চেয়ারম্যান মাহবুবর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব নূরুজ্জামান এনডিসি, বিসিকের পরিচালক (অর্থ) কামাল উদ্দিন বিশ্বাস, পরিচালক (পরিকল্পনা ও গবেষণা) আহসান কবীর, পরিচালক (শিল্প উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ) মোহাম্মদ জাকির হোসেন, পরিচালক (প্রশাসন) শ্যামলী নবী, পরিচালক (দক্ষতা ও প্রযুক্তি) কাজী মাহাবুবুর রশিদ প্রমুখ।

Advertisement

আরও ছিলেন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা নিউট্রিশন ইন্টারন্যাশনালের (এনআই) কান্ট্রি ডিরেক্টর সায়কা সিরাজ, গেইনের পোর্টফোলিও লিড ড. আশেক মাহফুজ, বাংলাদেশ লবণ মিল মালিক সমিতির সভাপতি নুরুল কবির।

এনএইচ/জেডএইচ/জেআইএম