দেশজুড়ে

নাকের ডগায় জমি দখল হলেও নীরব সওজ

সড়ক ও জনপদ বিভাগের জমি দখল করে প্রতিনিয়ত অবৈধভাবে গড়ে তোলা হচ্ছে নতুন নতুন স্থাপনা। ফলে সময়মতো উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালিত না হওয়ায় জমি দখলমুক্ত করতে অনেকটাই ব্যর্থ সওজ। আর এ সুযোগে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল জমি দখলের পর হাত বদলে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এমন অভিযোগ যেন এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে।

Advertisement

বাংলাদেশ সড়ক ও মহাসড়ক আইন অনুযায়ী, কোনো সড়ক বা মহাসড়কের ৩০ ফুটের মধ্যে কোনো স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না। কিন্তু সে আইন যে সব ক্ষেত্রে মানা হচ্ছে না তা বোঝা যায় ঠাকুরগাঁও সদরের বাসস্ট্যান্ড, মুন্সিরহাট, টাংগন ব্রিজ এলাকার জলেশ্বরীতলা, ভুল্লীসহ সড়ক ও জনপথের (সওজ) জায়গায় শতাধিক অবৈধ স্থাপনা গড়ে তোলার ঘটনায়।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, জেলার বেশকিছু স্থানে সড়ক ও জনপথ বিভাগের জমি অবৈধভাবে দখলের পর হাত বদলে গড়ে তোলা হয়েছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ঘর-বাড়িসহ নানা স্থাপনা। এসব স্থানে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা বছরের পর বছর দখল করে থাকলেও উচ্ছেদে কার্যত পদক্ষেপ নেই সড়ক ও জনপথ বিভাগের।

শুধু তাই নয়, সড়ক ও জনপথ বিভাগের সূত্র বলছে, জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্র টাংগন ব্রিজ এলাকায় সড়কের পাশে কয়েক বছরে ১০০টি পরিবার অবৈধভাবে দখলকৃত জমিতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ঘরবাড়িসহ বিভিন্ন স্থাপনা গড়ে তুলেছে। এতে সংকুচিত হয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগের সম্পত্তি।

Advertisement

এ অবস্থায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে ব্যবস্থা নিতে ২০২০ সাল থেকে কয়েক দফায় চিঠি দেওয়া হয় ঠাকুরগাঁও সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীকে। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে শুধু চিঠি ৩ বছর ধরে বসে আছে সওজ।

এদিকে এ সুযোগে ওই এলাকায় গড়ে উঠছে আরও নতুন স্থাপনা। আর এসব দখলকারিদের মধ্যে অনেকে চালিয়ে যাচ্ছে মাদকের ব্যবসা। শুধু তাই নয়, অসামাজিক কার্যকলাপ পরিচালনারও অভিযোগ রয়েছে। অবৈধ দখলদারিত্বের কারণে ওই এলাকায় অবস্থিত ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে যাতায়াতে ব্যাহতের পাশাপাশি রাস্তার প্রসস্তকরণও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

তবে এসব অবৈধ স্থাপনা রাতারাতি গড়ে ওঠে না বলে জানান স্থানীয়রা। তারা বলছেন, সওজের লোকজনের চোখের সামনেই ভবনগুলো গড়ে ওঠে। এটা ঘটে সওজের লোকজনের জ্ঞাতসারেই। ঘর তোলার সময় সওজের লোকদের ম্যানেজ করেই ঘর তোলা হয়েছে। এসব বন্ধ করতে হলে সরষের মধ্যকার ভূত আগে তাড়াতে হবে।

এ বিষয়ে সড়কের জমি দখল করে থাকা জয়নাল আবেদীন, সাকিব আহম্মেদ, ফরিদ ও মালেকসহ অনেকে জানান, জমি ফাঁকা করতে অনেক আগে সড়ক বিভাগ থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। পরে আর কেউ আসেনি। আমরা এভাবেই আছি। সড়ক বিভাগের লোকজন ব্যবস্থা নিলে আমরা বিকল্প পথ দেখবো।

Advertisement

এ ব্যাপারে ঠাকুরগাঁও সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রাফিউল ইসলাম জানান, নিয়মিত উচ্ছেদ অভিযান চালানো হচ্ছে। তবে টাংগন ব্রিজ এলাকায় অবস্থিত স্থাপনা উচ্ছেদে দাপ্তরিক কাজ চলমান রয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যেই সেখানে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।

এফএ/জেআইএম