দেশজুড়ে

সেতু ভেঙে ৬ গ্রামের মানুষের চলাচল বন্ধ

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার পান্ডুল ইউনিয়নের গিদারী নদীর ওপর নির্মিত সেতুটি তীব্র স্রোতে ভেঙে গেছে। চলাচলের একমাত্র সেতুটি ভেঙে পড়ায় আশপাশের প্রায় ছয় গ্রামের মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। পৌর শহরে আসতে তাদের ঘুরতে হচ্ছে চার কিলোমিটার সড়কপথ। বেহাল দশায় থাকা সেতুটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ডকে দায়ী করছেন স্থানীয়রা।

Advertisement

বুধবার (১৮ অক্টোবর) দিনগত রাতে নদীর তীব্র স্রোতে নিচের মাটি সরে গিয়ে সেতুটি ভেঙে পড়ে।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উলিপুর উপজেলার পান্ডুল ইউনিয়ন কাগজিপাড়া গ্রামে ১৯৬৯ সালে গিদারী নদীর ওপর নির্মিত হয় সেতুটি। তবে নির্মাণের অর্ধ শতাব্দী পার হলেও সেতুটির কোনো সংস্কার কাজ হয়নি। এতে গতকাল রাতে তীব্র স্রোতে নিচের মাটি সরে গিয়ে সেতুটি ভেঙে যায়। ফলে ওই ইউনিয়নের আশপাশের আমভদ্রপাড়া, চাকলিরপাড়, জটিয়াপাড়াসহ ছয়টি গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষের যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়।

পাউবোর নদীখনন প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি আবদুল আজিজ জানান, প্রায় অর্ধশত বছর আগে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছিল। সেসময় সেতুটি অনেক উঁচুতে নির্মাণ করা হয়েছিল। খাল খননের পর সেতুর মুখ উঁচুতে উঠে যায়। সেতুর উজানে অতিরিক্ত পানি জমায় চাপ সহ্য করতে না পেরে ভাঙন দেখা দেয়। পরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান থেকে এক হাজার ২০০ জিও ব্যাগ ব্যবহার করে পানির স্রোত কমানোর চেষ্টা করা হয়েছে তবে কোনো ফল হয়নি।অবশেষে সেতুটি ভেঙে যায়।

Advertisement

স্থানীয় ইউপি মেম্বার হেলাল উদ্দিন বলেন, স্রোতে সেতুর মাটি সরে গিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে ভেঙে পড়েছে। এরআগে ১১ অক্টোবর সেতুর মাঝের পিলার সম্পূর্ণ ধসে যায়। বর্তমানে মানুষ পারাপারের জন্য অস্থায়ী বাঁশ-কাঠের সেতু তৈরি করার পরিকল্পনা হচ্ছে। আশা করছি এক সপ্তাহের মধ্যে মানুষজনের চলাচলের অস্থায়ী সমাধান করা সম্ভব হবে।

আমভদ্রপাড়া গ্রামের অটোরিকশাচালক আব্দুল গণি। তিনি বলেন, সেতুটি এ অঞ্চলের মানুষের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। পৌর শহরসহ দুর্গাপুর হাট, মিনাবাজার ও পান্ডুল ইউনিয়নে যাতায়াত করার এটি ছিল একমাত্র পথ। এ সেতুর ওপর দিয়ে কাগজিপাড়া পানের বরজ থেকে পান গাড়িতে করে জেলা শহরে নিয়ে যেতাম। সেতুটি ভেঙে পড়ায় ব্যবসা-বাণিজ্যসহ যোগাযোগের খুব অসুবিধা হয়ে গেলো।

এ বিষয়ে উলিপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মাহমুদুর রহমান জানান, তীব্র স্রোতে সেতুটির মাঝের পিলার ধসে গেলে ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে সেতুর দুই পাশে ঝুকিপূর্ণ সাইনবোর্ড টাঙানো হয়েছিল। তবে রাতে সেতুটি ভেঙে যায়।

তিনি বলেন, সেতুটির বিষয়ে প্রস্তাবনা পাঠানোর জন্য উপজেলা এলজিইডি ইঞ্জিনিয়ারকে বলা হয়েছে। পথচারী চলাচলের জন্য অস্থায়ী সাঁকো তৈরির ব্যবস্থা নিতে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে।

Advertisement

ফজলুল করিম ফারাজী/এসআর/জেআইএম