ভ্রমণ

একদিনেই ঘুরে আসুন বাঁশবাড়িয়া বিলাসী ঝরনায়

একদিনেই ঘুরে আসতে পারেন চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলার বাঁশবাড়িয়া এলাকার বিলাসী ঝরনায়। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে পায়ে হেঁটে মাত্র ৪০ মিনিট পথ পাঁড়ি দিয়ে যাওয়া যাবে এই ঝরনায়।

Advertisement

তবে বর্ষা মৌসুমে বেশি পানি থাকে ঝরনাটিতে। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বিলাসী ঝরনায় ছুটে যাচ্ছেন ভ্রমণপিপাসুরা। জানা গেছে, পাহাড় ও সমুদ্র বরাবরই আকর্ষণ করে ঘুরতে আসা দেশি ও বিদেশি সব পর্যটকদের মন।

আরও পড়ুন: চীনের নিষিদ্ধ শহরে যা দেখে চোখ হবে ছানাবড়া 

প্রকৃতির এ নিবিড় ছোঁয়া আর বুক উজার করা সৌন্দর্য যেন মুহুর্তেই ভুলিয়ে দেয় জীবনের যাবতীয় হতাশা। শীত এলেই শুরু হয় পর্যটন মৌসুম। পাহাড়ি প্রকৃতির একান্ত সান্নিধ্য পেতে আর উচ্ছ্বল ঝরনার শীতল স্পর্শ পেতে হলে চলে আসুন চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার বিলাসী ঝরনায়।

Advertisement

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ৪ কিলেমিটার পশ্চিমে বাঁশবাড়িয়া সমুদ্রসৈকত ও পূর্বপাশে বিলাসী ঝরনা। একদিনেই পাহাড়ি ঝরনা ও সমুদ্রের নোনা পানির স্বাদ নেওয়া যেতে পারে।

বাঁশবাড়িয়া বাজার থেকে দেড় কিলোমিটার পূর্বপাশে পাহাড়ে এই ঝরনার অবস্থান। এখানে আগত দর্শনার্থীদের জন্য কোনো টিকিটের ব্যবস্থা নেই।

আরও পড়ুন: বিশ্বের সবচেয়ে অসুখী দেশ কোনটি? 

বিনামূল্যে সবাই সহজে ঝরনায় যেতে পারছেন। ইচ্ছে করলে গাড়ি নিয়ে, কিংবা পায়ে হেঁটে গাছ-গাছালির সুশীতল ছায়ায় শুরু করুন পাহাড়ের আঁকা-বাঁকা পথযাত্রা।

Advertisement

তবে গাড়ি নেওয়ার প্রয়োজন হয় না। রেললাইন পার হলেই দেখা মেলে বিশাল পাহাড়ের। সেই পর্যন্ত গাড়ি যাবে। তারপর পুরো পথ পায়ে হেঁটে যেতে হবে। পাহাড়ে কিছু দূর যাওয়ার পর নামতে হবে বারমাশি ছরায়। ছরা দিয়ে যেতে হবে ঝরনা পর্যন্ত।

তবে সাবধান, ছরায় ছোট-বড় পাথর আছে। অনেক পাথর পিচ্ছিল, সতর্কভাবে না হাঁটলে পড়ে যে কোনো দুর্ঘটনার ঝুঁকি আছে। তাই দেখে শুনে চলতে হবে।

আরও পড়ুন: যে দেশের রাস্তায় নেই ট্রাফিক সিগনাল, তবুও হয় না যানজট 

ছরার কোনো কোনো স্থানে হাঁটু কিংবা তার চেয়ে বেশি পানি আছে। সাথে থাকা, মোবাইল, মানিব্যাগ ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আগে থেকে ব্যাগে ভরে রাখলে ভালো।

পাহাড়ি ঢাল বেঁয়ে নীচে নামতে হবে সর্তকতার সঙ্গে। না হলে গড়িয়ে পাহাড়ের গভীর তলদেশে পড়ার সম্ভাবনা আছে। তবে রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা পেতে হলে নীচে নানেমে উপায় নেই।

তবে পাহাড়ি ছরা ধরে পাথুরে পথ ধরে পানির শীতলতা নিতে নিতে পৌঁছানো যায় ঝরনার একেবারে নীচে। উপর থেকে গড়িয়ে পড়া ঝরনার পানিতে একটু ভেজা বা উঞ্চতা আহরণের আনন্দ আলাদা।

আরও পড়ুন: কাশফুলের সঙ্গে আকাশের মিতালি 

এখানে এসে পানির পানির স্নিগ্ধ পরশ পাওয়ার লোভ সামলানো দায়। পার্শ্ববর্তী পাহাড়ে উঠে ডুবন্ত সুর্য ও সমুদ্রতট দেখা যাবে পশ্চিমে তাকালে। ছবির মতো দেখতে অদূরবর্তী সমুদ্রের রূপ না দেখলে বুঝা যায়না।

এখানে ঘুরতে আসা জাহাঙ্গীর আলম নামের এক পর্যটক বলেন, ডিপ্রেশনে ভুগছেন? ভ্রমণে বেরিয়ে পড়ুন। ভ্রমণ আপনাকে ডিপ্রেশন থেকে যেমন দূরে রাখবে, সেই সঙ্গে আল্লাহর সৃষ্টির অপরূপ সৌন্দর্যও উপভোগ করতে পারবেন। তাই আজ ঘুরতে আসলাম, প্রকৃতিক সৌন্দর্যের অন্যন্য নিদর্শন বিলাসী ঝরনায়।

আরও পড়ুন: যান্ত্রিক শহর ছেড়ে সমুদ্র-পাহাড়-প্রকৃতির বুকে 

স্থানীয় বাসিন্দা মনির আহম্মদ জানান, এখানে বছরের পর বছর ধরে ঝরনায় পানি পড়ছে। গত কয়েক বছর ধরে দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ ঝরনায় ছুটে আসছে। অনেকে তাবু টাঙিয়ে রাত যাপন করে। বারবিকিউর আয়োজন করে।

বর্ষা মৌসুমে বেশি পানি থাকে। কয়েকমাস আগে এই ঝরনার কূপে ডুবে এক ছাত্র মারা গেছে। তাই সাঁতার না জানলে কূপে বেশি দূর যাওয়া ঠিক না।

আরও পড়ুন: কোন দেশে কয়টি ‘ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট’ আছে? 

যেভাবে যাবেন

দেশের যে কোনো স্থান থেকে গাড়ি যোগে বাঁশবাড়িয়া বাজারে নামতে হবে। এরপর বাজারের পূর্বদিকে একটি রাস্তা আছে। সেই রাস্তা দিয়ে গেলে দেড় কিলোমিটার পথ পাঁড়ি দিয়ে মিলবে বিলাসী ঝরনা।

থাকা ও খাওয়া

বাঁশবাড়িয়া বাজারে খুব বেশি ভালো খাবারের হোটেল নেই। ভালো খাবারের জন্য যেতে হবে সীতাকুণ্ড সদর কিংবা চট্টগ্রাম শহরে। থাকার জন্য সীতাকুণ্ডে কয়েকটি আবাসিক হোটেল আছে।

জেএমএস/জিকেএস