গত ৪০ বছর ধরে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ করে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ গণতন্ত্রের দেশ ভারত। দেশটির অধিকাংশ নির্বাচনে ভোট পড়ে কমবেশি ৫০ থেকে ৮০ শতাংশ। নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়েও দেশটির মানুষের অভিযোগ কম।
Advertisement
বাংলাদেশে ইভিএমে ভোটগ্রহণ চালু হয়েছে খুব বেশিদিন নয়। এরই মধ্য প্রশ্নবিদ্ধ এ প্রক্রিয়া। কোটি কোটি টাকা খরচ করে কেনা ইভিএম মেশিনে শেষ পর্যন্ত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনও ভোট না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
আরও পড়ুন>> ‘ভারত কোনো বিশেষ দলকে সমর্থন করে না, সম্পর্ক দেশের সঙ্গে হয়’
কিন্তু ভারতের মানুষ কীভাবে, কেন আস্থা রেখে চলেছেন ইভিএমে? কারণ ব্যাখ্যা করলেন দেশটির প্রধান নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার।
Advertisement
সোমবার (১৬ অক্টোবর) বিকেলে ভারত সফররত সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ককালে তিনি বলেন, ‘আমরা ৪০ বছর হলো ইভিএম ব্যবহার করছি। আমাদের ইভিএম মেশিনগুলো নির্বাচনের ছয় মাস আগে পলিটিক্যাল পার্টির নেতারা চাইলে যাচাই করতে পারেন। ঠিক সেই মেশিন নির্দিষ্ট কেন্দ্র ও নির্দিষ্ট বুথে বসানো হয়। সেটা বসানো হলো কি না সেটাও চেক করা যায়। মেশিনগুলোর ব্যাটারি স্থায়ীভাবে চার্জ করা। তাই তথ্য জমা রাখতে কোনো সমস্যা হয় না কিংবা ভোটগ্রহণের সময় কোনো সমস্যা করে না।’
আরও পড়ুন>> ভারতের ভিসা সমস্যা সাময়িক, শিগগির স্বাভাবিক হয়ে যাবে
সিইসি রাজীব কুমার বলেন, ‘যে কোনো পার্টির যে কোনো ধরনের অভিযোগ আমরা দ্রুততম সময়ে রেসপন্স করি। ইভিএম মেশিনে যদি কোনো কিছু গড়বড় থাকে জনগণ সেটা বিশ্বাস করবে না। আমাদের জনগণের আস্থা অর্জন করাই প্রধান কাজ। ভোটিং মেশিন ২৪ ঘণ্টা সিসি ক্যামেরার অধীনে থাকে। যখন নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু হয় তখন পুলিশ থেকে শুরু করে রাজস্ব বোর্ড সবাই নির্বাচন কমিশনের অধীনে চলে যায়।’
রাজীব কুমারের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে ইভিএম মেশিন কীভাবে কাজ করে, ভোটাররা কীভাবে ভোট দেন, কেন আস্থা রাখেন তা দেখান নির্বাচন কমিশনের একজন প্রযুক্তিবিদ।
Advertisement
বাংলাদেশের ইভিএম মেশিনে নির্দিষ্ট প্রতীকে ভোট দিলেও ভোট সেই প্রতীকে পড়লো কি না সেটা না দেখা গেলেও এখানে সেটা দেখতে পান ভোটার। ৫ থেকে ৭ সেকেন্ড পর স্ক্রিনে যে প্রতীকে ভোট দিয়েছেন সেই প্রতীক ভেসে উঠবে। তখন ভোটারের মনে কোনো সন্দেহ থাকে না। তাছাড়া ইভিএম মেশিনের ব্যাটারি একেবারে চার্জ করা হয়। সেই চার্জেই ভোটের কার্যক্রম সম্পন্ন হয়। তাই যান্ত্রিক গোলযোগের ভয়ও কম থাকে।
আরও পড়ুন>> ভবিষ্যতে আমরা ভারতের সঙ্গে ভিসামুক্ত সম্পর্ক চাই
বাংলাদেশে ইভিএমে ভোট কাস্ট করতে বেশ সময় নিলেও ভারতের প্রযুক্তিতে দেশটিতে তৈরি মেশিনে খুব দ্রুত ভোটগ্রহণ করা যায়। তাই, ভোট কাস্টের হারও এখানে বেশি। অথচ ইভিএম জটিলতায় আমাদের দেশে নির্দিষ্ট সময়ের পরও ভোটগ্রহণ করতে দেখা যায়। হারও কম। এর অন্যতম কারণ আঙুলের ছাপ মেলানো। এখানে ভোটার কার্ড পাঞ্চ করলেই স্ক্রিনে ছবি ভেসে ওঠে। আঙুলের ছাপ মেলাতে দেরি হয়। আবার ভোট কোথায় পড়ছে দেখা যায় না। এটাতে বাড়ছে অনাস্থা।
এএসএ/এমএএইচ/এমএস