জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত গিলাদ এরদান বলেছেন, ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা দখলের কোনো আগ্রহ নেই ইসরায়েলের। আমাদের একমাত্র লক্ষ্য হলো, হামাসকে নির্মূল করা।
Advertisement
এদিকে, হামাসকে পুরোপুরি নির্মূল করার পক্ষে থাকলেও গাজা দখলের বিরুদ্ধে ইসরায়েলকে সতর্ক করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। মার্কিন টেলিভিশন সিবিএসের ‘সিক্সটি মিনিটস’ অনুষ্ঠানে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বাইডেন বলেন, গাজা দখল করাটা হবে ইসরায়েলের জন্য বড় ভুল।
মূলত বাইডেনের এই বক্তব্যের পরেই গাজা দখলের কোনো আগ্রহ নেই বলে জানালেন জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত।
আরও পড়ুন: প্রতি মিনিটে একজন রোগী আসছে গাজার হাসপাতালে
Advertisement
গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে গাজায় হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। তারা এখন সেখানে স্থল ও সমুদ্রপথে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে সিএনএনকে গিলাদ এরদান বলেন, তারা বেঁচে থাকার জন্য লড়াই করছেন। এর একমাত্র সমাধান হলো, হামাসকে নির্মূল করা। এ জন্য যা যা করা দরকার, তা-ই করবে ইসরায়েল।
গিলাদ এরদানের কাছে জানতে চাওয়া হয়, ইসরায়েল যদি হামাসকে নির্মূল করে, তাহলে গাজা উপত্যকার শাসন করবে কে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যুদ্ধ শেষ হওয়ার একদিন পর কী ঘটবে, তা নিয়ে ভাবছে না ইসরায়েল।
অন্যদিকে, কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলায় গাজার মানবিক সংকট আরও ঘনীভূত হচ্ছে। বর্তমানে গাজার হাসপাতালগুলোতে প্রতি মিনিটে একজন করে আহত রোগী আসছে।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনবিরোধী গুজব বেশি ছড়ানো হচ্ছে ভারত থেকে
Advertisement
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কার্যালয় জানিয়েছে, গাজার হাসপাতালগুলোতে আর মাত্র কয়েক ঘণ্টার জ্বালানি রয়েছে। খান ইউনিস এলাকার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল ‘নাসের’ এ মিনিটে মিনিটে আহতদের নিয়ে অ্যাম্বুলেন্স আসছে। হাসপাতালগুলোতে কোনো বিছানাও খালি নেই। বাইরে টানানো হয়েছে অস্থায়ী তাঁবু। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে খাবার-পানি ও বিদ্যুতের সংকট।
এক ভিডিওবার্তায় মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে দেইর আল বালাহের আল-আকসা শহিদ হাসপাতালের ফরেনসিক প্যাথলজিস্ট ইয়াসির খাতাব বলেন, হাসপাতালে এত পরিমাণ লাশ আসছে যে এগুলো রাখার জায়গা হচ্ছে না। অনেক লাশ হাসপাতালেই পড়ে থাকছে।
গত ৭ অক্টোবর অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলে নজিরবিহীন রকেট হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্রগোষ্ঠী হামাস। পরে তারা ইসরায়েলে ঢুকে আক্রমণ শুরু করে। হামাসের হামলায় ইসরায়েলে এক হাজার ৩০০ জন নিহত হয়েছে।
আরও পড়ুন: তেল আবিবে রকেট হামলা চালিয়েছে হামাস
ওই হামলার পরপরই হামাসকে নির্মূলের শপথ নিয়ে গাজায় পাল্টা বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। পাশাপাশি গাজায় পূর্ণ অবরোধ আরোপ করে রেখেছে ইসরায়েলি সেনারা। এমনকি, সেখানে খাবার, পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে চরম সংকটে পড়েছে গাজার হাসপাতালগুলো।
ইসরায়েলের টানা আট দিনের বিমান হামলায় গাজায় এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৩২৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও প্রায় ১০ হাজার মানুষ।
সূত্র: সিএনএন, আল জাজিরা
এসএএইচ