ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের মধ্যে চলমান যুদ্ধ অব্যাহত থাকলে, ইরান তাতে সরাসরি জড়িয়ে পড়তে পারে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। রোববার (১৫ অক্টোবর) মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএস নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান এ সতর্কবার্তা দেন। একই সঙ্গে তিনি লেবাননের সঙ্গে ইসরায়েলের উত্তর সীমান্তে নতুন যুদ্ধক্ষেত্র তৈরি হওয়ার সম্ভাবনার বিষয়টিও উল্লেখ করেন।
Advertisement
সিবিএস নিউজকে সুলিভান বলেন, যুদ্ধের বিস্তার ঘটলে ইরান কোনো না কোনোভাবে সরাসরি সংঘাতে জড়িয়ে পড়ার পথ বেছে নেবে। এই সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়ার কোনো কারণ দেয়। সম্ভাব্য সব ধরনের পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত আমাদের থাকতে হবে।
আরও পড়ুন: হামাসের লক্ষ্য অর্জনে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে ইরান
গত কয়েক দিন ধরেই লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে সীমান্তজুড়ে ইরান সমর্থিত সশস্ত্রগোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সঙ্গে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর হামলা-পাল্টা হামলা চলছে। ইসরায়েলি ভূখণ্ড লক্ষ্য করে রোববারও একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে হিজবুল্লাহ। এতে অন্তত এক ইসরায়েলি বেসামরিক নিহত ও আরও তিনজন আহত হয়েছেন।
Advertisement
লেবাননের দক্ষিণের ওই সীমান্ত এলাকায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী অপর একটি গোষ্ঠীও সক্রিয় রয়েছে। তারাও ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে হামলা ও অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: গাজা সীমান্তে শত শত ট্যাংক মোতায়েন করেছে ইসরায়েল
এদিকে, গাজাকে ইসরায়েলি সৈন্যদের সমাধিক্ষেত্রে পরিণত করার হুমকি দিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান। রোববার (১৫ অক্টোবর) কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। এরপর সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার সঙ্গে সংক্ষিপ্ত এক সাক্ষাৎকারে আমির-আব্দুল্লাহিয়ান জানান, ইসরায়েলি সৈন্যরা গাজায় ঢুকলে, তাদেরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে।
তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলে তার পুতুলকে (ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু) রক্ষায় উঠেপড়ে লেগেছে। আর নেতানিয়াহুও গাজাকে পুরোপুরি দখল করে নেওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। ইরান সরকার এখন চুপ করে থাকলেও, সময়মতো জবাব দিতে ভুল করবে না।
Advertisement
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাই সংকটের একমাত্র সমাধান: পুতিন
এর আগে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়েহ’র সঙ্গে দেখা করেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান। শনিবার (১৪ অক্টোবর) স্থানীয় সময় দিনগত রাতে কাতারের রাজধানী দোহায় তাদের সাক্ষাৎ হয়। এ সময় হামাসের লক্ষ্য অর্জনে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার কথা জানান ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
সাক্ষাৎকারে হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান বলেন, কিছু মুসলিম দেশ ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে ফিলিস্তিনি জাতির যৌক্তিক অধিকার আদায়ের দৃঢ় মনোবলে ফাটল ধরাতে পারেনি। ইসরায়েল যদি গাজায় যুদ্ধাপরাধ অব্যাহত রাখে, তাহলে এই অঞ্চলে যে কোনো কিছু ঘটতে পারে। ইসরায়েলের যুদ্ধাপরাধ বন্ধে নিজেদের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে ইরান।
সূত্র: আল অ্যারাবিয়া, আল জাজিরা
এসএএইচ