ঢাকাই সিনেমার এক সময়ের দর্শকনন্দিত চিত্রনায়িকা শাবনূর। দেখতে দেখতে তার চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারের তিনটি দশক অতিক্রম করেছেন। ঢাকাই চলচ্চিত্রের ইতিহাসে তিনি একজন অন্যতম সফল নায়িকা।
Advertisement
শাবনূরের ক্যারিয়ারের প্রায় সব সিনেমাই ব্যবসা সফল। তিনি কাজ করেছেন ঢালিউডের সব তুমুল জনপ্রিয় নায়কদের সঙ্গে। তার দীর্ঘ ক্যারিয়ারে রয়েছে অসংখ্য সুখ, আনন্দ-বেদনার স্মৃতি।
আরও পড়ুন: শাবনূরের সেরা ১০ চলচ্চিত্র
অভিনয় জীবনের ৩০ বছরে এসে তিনি স্মৃতিচারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি দীর্ঘ পোস্ট দিয়েছেন। এতে তার বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের অনেক কথা তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন।
Advertisement
পোস্টের শুরুতে শাবনূর লেখেন, সবার ভালোবাসায় চলচ্চিত্র জীবনের পথচলায় তিন দশক পার করে দিলাম, আলহামদুলিল্লাহ। স্বনামধন্য চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রয়াত এহতেশাম দাদুর ‘চাঁদনী রাতে’ ছবির মাধ্যমে ১৯৯৩ সালের ১৫ই অক্টোবর আমার চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু হয়েছিলো। প্রথম এই সিনেমায় আমার সহশিল্পী ছিলেন নায়ক সাব্বির। আমার চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারে অনেক গুণী পরিচালকের ছবিতে কাজ করার সুযোগ হয়েছে।
ক্যারিয়ারে প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্তির কথা তুলে ধরে এ নায়িকা লেখেন, মোস্তাফিজুর রহমান মানিক পরিচালিত ‘দুই নয়নের আলো’ (২০০৫) ছবিটি আমাকে এনে দিয়েছিলো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের সম্মান। তারকা জরিপে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র অভিনেত্রী বিভাগে ১০বার মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার পেয়েছি। এছাড়াও ৬বার বাচসাস পুরস্কার লাভ করি।
আরও পড়ুন: সোহানুর রহমান সোহানকে মাফ করে দিলেন শাবনূর
শাবনূর দর্শকদের ভালোবাসা পেয়ে ক্যারিয়ারের শুরুতেই। এ প্রসঙ্গে তিনি লেখন, প্রবল দর্শক চাহিদার জন্যে প্রযোজক-পরিচালকরা আমাকে নিয়ে ছবি নির্মাণে অত্যন্ত আগ্রহী হওয়ায় আমার পক্ষে ১৫৮টি ছবির বিশাল মাইলফলক ছোঁয়া সম্ভব হয়েছে।
Advertisement
ক্যারিয়ারের উল্লেখযোগ্য সিনেমার কথাও তুলে আনেন শাবনূর। এ বিষয়ে তিনি উল্লেখ করেন, যেসব চলচ্চিত্রে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি তার মধ্যে ব্যবসা সফল ও দর্শক-সমালোচক জরিপে অন্যতম সেরা ছবিগুলো হলো- স্বপ্নের ঠিকানা, স্বপ্নের পৃথিবী, স্বপ্নের নায়ক, তোমাকে চাই, তুমি আমার, আনন্দ অশ্রু, প্রেম পিয়াসী, সুজন সখী, জীবন সংসার, মহামিলন, বিক্ষোভ, চাওয়া থেকে পাওয়া, বিচার হবে, দুই নয়নের আলো, নিরন্তর, মোল্লা বাড়ির বউ, বিয়ের ফুল, নারীর মন, শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ, নিঃশ্বাসে তুমি বিশ্বাসে তুমি, সুন্দরী বধূ, ফুল নেব না অশ্রু নেব, প্রেমের তাজমহল, পৃথিবী তোমার আমার, কাজের মেয়ে, বস্তির মেয়ে, মধুর মিলন, বুক ভরা ভালোবাসা, স্বপ্নের বাসর, ও প্রিয়া তুমি কোথায়, স্বপ্নের ভালোবাসা, তোমার জন্য পাগল, চার সতীনের ঘর, আমার স্বপ্ন তুমি, আমার প্রাণের স্বামী, ১ টাকার বউ, তুমি শুধু তুমি, কঠিন প্রেম, ঢাকাইয়া পোলা বরিশালের মাইয়া ও স্বামী স্ত্রীর যুদ্ধ প্রভৃতি।
অমর নায়ক সালমান শাহর স্মৃতিও তার পোস্টে তুলে আনতে ভুল করেননি তিনি। এ বিষয়ে শাবনূর লেখেন, আসলে আমার অভিনীত প্রতিটা ছবিই আমার কাছে প্রিয়। সহশিল্পীদের মধ্যে প্রয়াত সালমান শাহর সাথে আমার জুটি ছিল সবথেকে বেশি দর্শকপ্রিয়। সালমানের অকাল মৃত্যুর আগ পর্যন্ত মাত্র চার বছরে আমি ও সালমান সর্বাধিক ১৪টি দর্শক নন্দিত ও ব্যাবসা সফল ছবিতে জুটি বেধে কাজ করেছিলাম।
অন্য নায়কদেরও স্মরণ করলেন শাবনূর। তাদের প্রসঙ্গে লেখেন, আমার চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারে আরও যেসব সহশিল্পীদের অবদান অনেক বেশি রয়েছে তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন- প্রয়াত মান্না ভাই, ওমর সানী, বাপ্পারাজ, আমিন খান, অমিত হাসান, রিয়াজ আহমেদ, ফেরদৌস আহমেদ, শাকিল খান ও শাকিব খান প্রমুখ।
আরও পড়ুন: আসল ফেসবুক আইডি-পেজ কোনগুলো, জানালেন শাবনূর
সব শেষে শাবনূর লেখেন, আল্লাহর রহমত ও সবার দোয়ায় চলচ্চিত্রে এখনো যথেষ্ট সম্মান নিয়েই বেঁচে আছি। আমার অভিনয় জীবনের দীর্ঘ ত্রিশ বছরের পথচলায় চলচ্চিত্রের সকল প্রযোজক, পরিচালক, সহশিল্পী, চিত্রনাট্যকার, নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী, ক্যামেরাম্যান, ও ছবির সাথে জড়িত কলাকুশলীসহ সবার কাছে আমি আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ ও ঋণী।
এমএমএফ/জিকেএস