হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পায়ুপথে ৩ কেজি ২৩১ গ্রাম সোনা নিয়ে আসা এক যাত্রীকে আটক করা হয়েছে। চোরাচালান প্রতিরোধে পরিচালিত বিমানবন্দর এপিবিএন- এনএসআই যৌথ অভিযানে শনিবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে আগমনী কনকোর্স হলের সামনে থেকে তাকে আটক করা হয়। আটক ওই ব্যক্তির নাম মো. সুমন হোসেন (৪৩)।
Advertisement
রোববার (১৫ অক্টোবর) এ তথ্য জানান বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জিয়াউল হক।
তিনি জানান, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এপিবিএন এবং এনএসআইয়ের একটি যৌথ আভিযানিক দল শারজাহ থেকে আসা যাত্রী মো. সুমন হোসেনকে আটক করে। এয়ার এরাবিয়ার একটি ফ্লাইটে তিনি শনিবার বিকেলে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। বিমানবন্দরে অবতরণের পর সব কার্যক্রম শেষে অভিযুক্ত সুমন কাস্টমস গ্রিন চ্যানেল অতিক্রম করলে আভিযানিক দল কনকোর্স হলের সামনে তাকে আটক করে।
সোনা উদ্ধারের বিষয়ে তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সুমন স্বীকার করেন তার পায়ুপথে স্বর্ণ রয়েছে। এসময় তাকে কাস্টমসের বডি স্ক্যানারে স্ক্যান করা হলে তার কথার সত্যতা পাওয়া যায়। পরে তার দেহের কোন অংশে সোনা লুকানো আছে তা নিশ্চিত হতে উত্তরা এক নম্বর সেক্টরের জাহান আরা ক্লিনিকে এক্স-রে পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। এক্স-রে পরীক্ষার পর যাত্রীর পায়ুপথ ও তলপেটে মোনার অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত করেন চিকিৎসক।
Advertisement
এরপর যাত্রীকে বিমানবন্দর আর্মড পুলিশের বিমানবন্দর অফিসে নিয়ে আসা হয়। পরে তিনি প্রাকৃতিক কার্যের মাধ্যমে তার পায়ুপথ ও তলপেটে লুকিয়ে রাখা ডিম্বাকৃতির পেস্ট গোল্ডের প্যাকেট বের করতে থাকেন।
অভিযুক্ত মোট ১৩টি ডিম্বাকৃতি গোল্ড প্যাকেট বের করে নিজ হাতে ধৌত করেন। এ প্যাকেটগুলো প্লাস্টিকে মোড়ানো ছিল। ওজন করা হলে প্রতিটি প্যাকেটে ২৩২ গ্রাম করে মোট ৩ কেজি ১৬ গ্রাম সোনা পাওয়া যায়। এছাড়া যাত্রীর পরিহিত পোশাকের পকেট থেকে আরও একটি গোল্ডবার (১১৬ গ্রাম) এবং ৯৯ গ্রাম স্বর্ণালংকারসহ মোট ৩ কেজি ২৩১ গ্রাম সোনা উদ্ধার করা হয়।
পেস্ট গোল্ডসহ অন্য গোল্ডের রাসায়নিক পরীক্ষার মাধ্যমে উদ্ধার করা পদার্থ সোনা বলে জানা যায়। এ সোনার আমদানি এবং শুল্ক পরিশোধের কোনো ধরনের রশি দেখাতে ব্যর্থ হন এবং স্বীকার করেন সোনা পাচারকারী চক্রের সঙ্গে যোগসাজশে সোনা পাচারের চেষ্টারত ছিলেন তিনি।
সুমনকে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে শারজাহ প্রবাসী মিজান এবং আনোয়ার অর্থের বিনিময়ে তাকে এ সোনা পাচারের জন্য প্রস্তাব করলে তিনি তাতে রাজি হন এবং বিশেষ কৌশলে এ সোনা নিজের শরীরে বহন করে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। এ কাজে সফল হলে তার ৭০ হাজার টাকা পাওয়ার কথা ছিল।
Advertisement
পুলিশ জানায়, সুমন হোসেনের বাড়ি মুন্সিগঞ্জ সদরে। ব্যাগেজ সুবিধা ব্যবহার করে পণ্য আমদানির জন্য তিনি নিয়মিত বিদেশে যাওয়া-আসা করেন। তার বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
আরএসএম/এমআইএইচএস/এমএস