দেশজুড়ে

পুকুরের ওপর বাঁশ-কাঠের মণ্ডপ, ৩ শতাধিক প্রতিমাসহ থাকছে মেট্রোরেল

আর মাত্র কয়েকদিন পর শুরু হতে যাচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। করোনার কারণে প্রায় তিনবছর পর আবারো রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের আলোকদিয়ার গ্রামেও পূজার আয়োজন চলছে।

Advertisement

এবার পুকুরের ওপর বাঁশ-কাঠ-লোহা দিয়ে তৈরি হচ্ছে ৪০০ ফুট দৈর্ঘ্যের বিশাল মণ্ডপ। এতে তিন শতাধিক দেব-দেবীর মাধ্যমে দক্ষযজ্ঞ, সতীর দেহ ত্যাগ, সতীর দেহ থেকে ৫১টি তীর্থ ক্ষেত্র, শ্রীকৃষ্ণের কুঞ্জবনসহ সনাতন ধর্মের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হবে।

এছাড়া সরকারের উন্নয়নের বার্তা তুলে ধরতে তৈরি করা হচ্ছে মেট্রোরেল। এরমধ্যে থাকবে সনাতন ধর্মের ২০ জন মনিষীর মূর্তি। বিগত প্রায় চার-পাঁচ মাস ধরে সাতজন শিল্পী ও ৮০ জন শ্রমিক এসব প্রতিমা ও পূজামণ্ডপ তৈরিতে কাজ করছেন। এখানে দেশ ও দেশের বাইরের প্রায় চার-পাঁচ লাখ দর্শনার্থীর আসবে বলে ধারণা মন্দির কমিটির।

এদিকে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে এবারের পূজা অন্য বারের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন রাজবাড়ী জেলা পুলিশ। ফলে পূজাকে কেন্দ্র করে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ মণ্ডপের জন্য ট্রাফিকসহ আলাদা নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে।

Advertisement

সরজমিনে দেখা যায়, বৃহদাকারে পূজার আয়োজন চলছে। মণ্ডপ তৈরিতে আছে ভিন্নতা। পুকুরের ওপর বাঁশ-কাঠের দৃষ্টিনন্দন স্ট্রাকচারে তৈরি হচ্ছে মণ্ডপ। বিগত কয়েকবছর ধরে ব্যতিক্রমী এ পূজামণ্ডপ দেখতে জেলাসহ সারাদেশে বেশ সাড়া ফেলেছে। লক্ষ্মীপূজা পর্যন্ত থাকবে এ আয়োজন।

প্রতিমা শিল্পী সন্দীপ কুমার পাল বলেন, এখানে বিশেষ আকর্ষণীয় মূর্তি হচ্ছে শিব, এটা ২৩ হাত। তারা প্রায় ৩০০ মূর্তি তৈরি করেছেন। এখন মাটির কাজ শেষে রঙ ও সাজ-সজ্জার কাজ করছেন। এখানে সাতজন প্রতিমা শিল্পী প্রায় চার মাস ধরে ৩০০ মূর্তি তৈরির কাজ করছেন। দক্ষ রাজার যজ্ঞ থেকে সতীর ৫১ খণ্ডের মূর্তি তৈরি করা হয়েছে।

মণ্ডপ তৈরির শ্রমিক বিপ্লব কুমার সরকার, শাহিদুলসহ অন্যরা জানান, চার-পাঁচ মাস ৬০-৭০ শ্রমিক পুকুরের ওপর বাঁশ-কাঠ দিয়ে মণ্ডপ তৈরির কাজ করছেন। এ মণ্ডপের সবচেয়ে আকর্ষণীয় হচ্ছে মেট্রোরেল। পূজার দুদিন আগে কাজ শেষ করে মন্দির কমিটিকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে।

আলোকদিয়া ও গ্রাম জামালপুর দুর্গা মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক গোবিন্দা দাস জাগো নিউজকে বলেন, করোনার পর এবার তিন বছর আবারো পূজার আয়োজন চলছে। এ মণ্ডপে ৩০০ মূর্তি থাকবে। এতে আমাদের ধর্মের নানা দিক তুলে ধরা হবে। পাশাপাশি সরকারের উন্নয়নের বার্তা তুলে ধরতে কৃত্রিম মেট্রোরেল তৈরি করা হয়েছে। পুরো মণ্ডপটি একটি পুকুরের ওপর। এখানে দেশ ও বিদেশের প্রায় চার-পাঁচ লাখ মানুষের সমাগম হবে।

Advertisement

রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার জি এম আবুল কালাম আজাদ জাগো নিউজকে বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে যেকোনো বারের চেয়ে এবারের পূজা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ফলে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। এবছর সাড়ে ৪০০ পুলিশ নিরাপত্তায় কাজ করবে। তবে জেলায় বিরোধপূর্ণ কোনো পূজা মণ্ডপ নাই। দেশের বৃহৎ একটি মণ্ডপ বালিয়াকান্দির জামালপুরে। সেখানে দেশের প্রতিটি জেলাসহ ভারত থেকে মানুষ আসে। ফলে মণ্ডপটিতে ট্রাফিকসহ আলাদা নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে।

এসজে/এএসএম