দেশজুড়ে

দুই হাজার একর জমির জন্য আশীর্বাদ হয়ে এলো খাল

নাটোরের বড়াইগ্রামে ৪০০ মিটার খাল খণনের মাধ্যমে জলাবদ্ধতা থেকে রক্ষা পেলো ২ হাজার একর জমির ফসল। উপজেলা প্রশাসনের প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপে সরকারি খাস ও ব্যক্তি মালিকাধীন জমির ওপর দিয়ে দুই মিটার প্রস্থ খালটি খণন করা হয়। এর ফলে বড়াইগ্রাম, লালপুর ও ঈশ্বরদী উপজেলার ছয়টি মৌজার ২ হাজার একর জমির ফসল ও পাঁচ শতাধিক বাড়ি জলাবদ্ধতার হাত থেকে রক্ষা পেলো।

Advertisement

শনিবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, খণন যন্ত্র দিয়ে খাল খণনের কাজ শেষ হয়েছে। দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর পানি নিষ্কাশনের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে দাঁড়িয়ে খণন কাজ প্রত্যক্ষ করছেন স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্তরা। এ সময় পরিদর্শনে যান বড়াইগ্রামের ইউএনও আবু রাসেল, সহকারী কমিশনার (ভূমি) বোরহান উদ্দিন মিঠু, গোপালপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক প্রমূখ।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বড়াইগ্রামের দৌলতপুর ও কচুয়া, লালপুরের মহেশ্বর, টিটিয়া, মাঝগাঁও ও সুন্দরবাড়ি মৌজার ২ সহস্রাধিক একর জমিতে বৃষ্টি আর বন্যার পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। একইসঙ্গে বাড়ির আঙিনায় পানি জমি বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এ থেকে পরিত্রাণের জন্য দীর্ঘদিন থেকে বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেও কাজ হচ্ছিল না। বর্তমান ইউএনও আবু রাসেল স্থানীয়দের আবেদনের প্রেক্ষিতে সরেজমিনে পরিদর্শন করে এর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে তাৎক্ষণিক জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলে খাল খণনের উদ্যোগ নেন। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিককে দেখভালের দায়িত্ব দেন তিনি। গত দুইদিন কাজ করে খাল খণন শেষে পানি নিষ্কাশন শুরু হয়।

এ সময় মাঝগ্রামের আতাউর বলেন, আমার ১৭ বিঘা জমিতে কোনো ফসল হতো না। এখন সেই সমস্যা কাটলো।

Advertisement

একইভাবে দৌলতপুরের কাদের মল্লিকের ৬ বিঘা, রহিজ ভূইয়ার ৫ বিঘা, আব্দুস সোবহানের ১৫ বিঘা ও রশিদ ভান্ডারীর ১০ বিঘা জমিতে কোনো ফসল হতো না। এই খাল খণনের ফলে বছরে তিনটি ফসল ফলবে ওই সকল জমিতে।

ইউপি চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক বলেন, দৌলতপুরের শামসুল ইসলামের দেড় বিঘা আর ইসমাইলের বাড়ির ভিটার দুই শতাংশ জমি জনস্বার্থে খাল খণন করতে দেওয়ায় ওই ছয় গ্রামের হাজারো মানুষের দুঃখের অবসান হচ্ছে।

ইউএনও আবু রাসেল বলেন, দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতায় ওই ছয় গ্রামের মানুষ চরমভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছেন। এখন তাদের সহযোগিতায় এবং স্বেচ্ছায় জমি ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ায় খাল খণন করে জলাবদ্ধতা নিরসনের ব্যবস্থা করা হলো। খাল যেন কেউ বন্ধ করতে না পারে এবং পলি জমি ভরাট হলে নিজেদের স্বার্থে তাদেরকেই সংস্কার করে চলমান রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তারা ঐক্যবদ্ধভাবে চেষ্টা করলে আর কখনোই জলাবদ্ধতায় ফসল নষ্ট হবে না।

রেজাউল করিম রেজা/এফএ/এমএস

Advertisement