কুড়িগ্রামে সাড়ে ৪ শতাধিক চরাঞ্চল ও পতিত জমি আখ চাষের জন্য খুবই উপযোগী। জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে দেশীয় বিভিন্ন জাতের আখ চাষ করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন অনেকেই। তবে এ বছর বিদেশি ফিলিপাইন জাতের আখ চাষ করে সাড়া ফেলেছেন মো. জিন্নুর রহমান। মাত্র ২৫ শতক জমিতে আখ চাষ করে উৎপাদন বাদে লক্ষাধিক টাকা উপার্জন করেছেন তিনি।
Advertisement
জিন্নুর রহমান কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার শিমুল বাড়ি ইউনিয়নের ফকিরটারী গ্রামের মো. মমতাজুর রহমানের ছেলে। তার জমিতে ফিলিপাইন জাতের আখ চাষ দেখে আগ্রহ প্রকাশ করছেন অনেকেই। জিন্নুর রহমান আখ চাষের পাশাপাশি উচ্চ ফলনশীল শাক-সবজি, কলা ও পেয়ারা গাছ রেখেছেন। তবে ফিলিপাইন আখে অন্য ফল ও সবজির চেয়ে দ্বিগুণ লাভবান হয়েছেন তিনি।
মো. জিন্নুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘সার্জিক্যাল ব্যবসার পাশাপাশি বিষমুক্ত চাষাবাদে আগ্রহ জন্মে। ঢাকায় প্রশিক্ষণ নিয়ে ঝিনাইদহ থেকে প্রথমে ফিলিপাইন জাতের ২০টি আখের চারা আনি। ওই চারা থেকে বছরে ৭ হাজার টাকা আয় করি। পরে বাবার ২৫ শতক জমিতে শুরু করি চাষ। এ আখ লম্বায় ১২-১৫ ফুট ও মোটা হওয়ায় বাজারে চাহিদা ভালো। এতে জৈব সার ব্যবহারে ভালো ফলন পাওয়া যায়।’
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে কালো আখ চাষে মফিজুরের বাজিমাৎ
Advertisement
তিনি বলেন, ‘এ জাতের আখ মাত্র দেড়মাস পরেই বিক্রি করতে পারবো। গত দেড় বছরে এ ক্ষেতে ব্যয় হয়েছে মাত্র ১২-১৫ হাজার টাকা। উৎপাদন খরচ মিটিয়ে মাত্র ২৫ শতক জমিতে আখ ও চারা বিক্রি করে লাখ টাকার ওপর বিক্রি করতে পারবো বলে আশা করছি।’
জিন্নুর আরও বলেন, ‘একবার চারা রোপণ করলে অনায়াসে ১৫-২০ বছর ক্ষেত থেকে আয় করা সম্ভব। এরই মধ্যে বগুড়া, সিলেট ও রংপুরে অনলাইনের মাধ্যমে প্রায় ১০ একর জমির আখের চারার অর্ডার পেয়েছি। তাই প্রতি বছরই চাষাবাদ বাড়াবো।’
জিন্নুর রহমানের বাবা মমতাজুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘প্রথমে জিন্নুর যখন মাত্র ২০টি ফিলিপাইনের কালো জাতের চারা রোপণ করে; তখন বিশ্বাস হচ্ছিল না আমাদের অঞ্চলে এ জাতের আখ হবে। পরে দেখি প্রথম বছরেই সে ভালো আয় করে। পরে বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ শুরু করে। আশা করছি সে লাভবান হবে।’
আরও পড়ুন: হাবিবের কালো আখে টাকা আসছে লাখে লাখে
Advertisement
ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছা. নিলুফা ইয়াছমিন বলেন, ‘উপজেলায় প্রথমবারের মতো বিষমুক্ত উপায়ে ফিলিপাইনের কালো জাতের আখের চাষাবাদ করছেন জিন্নুর রহমান। বেলে দোআঁশ মাটি আখ চাষের উপযোগী হওয়ায় ভালো ফলন হয়েছে। তাকে কৃষি বিভাগ থেকে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। উপজেলায় ৩ হেক্টর জমিতে আখ চাষ হয়েছে।’
ফজলুল করিম ফারাজী/এসইউ/এএসএম