ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম হওয়ায় বুধবার (১১ অক্টোবর) মধ্যরাত থেকে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বঙ্গোপসাগরের মোহনায় শুরু হয়েছে মাছ শিকারে ২২ দিনের সরকারি নিষেধাজ্ঞা। এ সময় কর্মহীন জেলেদের মধ্যে ১৫০০ জেলেকে ২৫ কেজি করে চাল সহায়তা দেওয়া হলেও সরকারি বরাদ্দ পাননি আরও ১ হাজার ৫৭ জন জেলে। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন এখানকার জেলেরা।
Advertisement
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মা ইলিশের প্রজনন নিরাপদ রাখার লক্ষ্যে ১২ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন উপজেলার ডোমখালী, সাহেরখালী, বামনসুন্দর ও মুহুরী প্রজেক্ট ঘাটে মাছ ধরা সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে। এ সময় ইলিশ আহরণ, পরিবহন, ক্রয়-বিক্রয়, মজুত ও বিনিময়ও নিষিদ্ধ থাকবে।
মিরসরাই উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ২৫৫৭ জন্য নিবন্ধিত জেলে রয়েছেন। এছাড়া ৫০০ জেলে নিবন্ধনের প্রক্রিয়ায় রয়েছেন। এর মধ্যে ১৫০০ জেলেকে ২৫ কেজি করে চাল সহায়তা দেওয়া হলেও সরকারি বরাদ্দ পাননি আরও ১ হাজার ৫৭ জন জেলে।
এদিকে ১২ অক্টোবর থেকে ২২ দিন ইলিশ ধরা বন্ধ থাকায় কিস্তির টাকা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন এখানকার জেলেরা। ৬৫ দিন মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞার কারণে প্রায় দুই মাস ধরে বেকার ছিলেন উপজেলার উপকূলীয় এলাকার ২৯টি জেলেপাড়ার বাসিন্দারা। এসব পাড়ায় প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার রয়েছে। নিষেধাজ্ঞার পর ইলিশ আহরণ শুরু হলেও বঙ্গোপসারের মোহনায় আগের মতো ইলিশ না পাওয়ায় হতাশ তারা।
Advertisement
জেলে নেতা হিরালাল জলদাশ বলেন, উপজেলায় যে পরিমাণ চাল বরাদ্দ আসে তার থেকে কয়েকগুণ বেশি জেলে রয়েছে। কর্মহীন জেলেদের ধারদেনা করে সংসার চালাতে হয়।
ডোমখালী এলাকার জেলে তরণ জলদাশ বলেন, ভরা মৌসুমে সাগরে পর্যাপ্ত ইলিশ ধরা পড়েনি। তার ওপরে প্রাকৃতিক দুর্যোগ। যার ফলে মাছ ধরার সময় সাগরে থাকতে পারিনি। এজন্যই ঋণে জর্জড়িত হয়ে পড়েছি। এখন আবার ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা। কিস্তির টাকা কীভাবে পরিশোধ করবো বুঝছি না। যে পরিমাণ খাদ্যসহায়তা দেওয়া হয় তাও অপ্রতুল।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা নাসিম আল মাহমুদ বলেন, ইলিশের প্রজননকাল হিসেবে ১২ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরে সব ধরনের মাছ ধরা বন্ধ ধাকবে। এ উপজেলায় ২৫৫৭ জন নিবন্ধিত জেলে রয়েছে। তার মধ্যে সরকারিভাবে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১৫০০ জেলের জন্য। আমরা নিষেধাজ্ঞা শুরুর আগে প্রতি জেলেকে ২৫ কেজি করে ভিজিএফের চাল দিয়েছি। যারা সব সময় সাগরে মাছ ধরেন এমন ১৫০০ জনকে চাল দেওয়া হয়েছে। অনেক জেলে সাগরে যান না উপরে থাকেন, তাদের বাদ দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, নিষেধাজ্ঞা চলাকালিন মাছ ধরা, বিক্রি এগুলো থেকে বিরত থাকতে প্রচার-প্রচারণা চালানো হয়েছে। জেলেদের নিয়ে মিটিং করেছি। এই ২২ দিন অভিযান পরিচালনা করা হবে। কেউ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে জরিমানা আদায় করা হবে।
Advertisement
এম মাঈন উদ্দিন/এফএ/এমএস