রাজনীতি

খালেদা জিয়ার কিছু হলে গৃহযুদ্ধের শঙ্কা তৈরি হতে পারে

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কোনো খারাপ পরিণতি হলে দেশে একটি গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম নেতা ও বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক।

Advertisement

তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। রাজনৈতিক প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে সরকার তাকে মুক্তি দিয়ে চিকিৎসা নিতে দিচ্ছে না। তার কোনো খারাপ পরিণতি হলে এর দায় সরকারকেই নিতে হবে।

মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবে গণতন্ত্র মঞ্চ আয়োজিত ‘একতরফা নির্বাচনের পাঁয়তারা, সম্ভাব্য বিপর্যয় ও জনগণের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সাইফুল হক বলেন, বেগম জিয়ার যদি কিছু হয়ে যায় তাহলে তার দায় আওয়ামী লীগ কোনোভাবে এড়াতে পারবে না। এ বিষয়ে তাদের পরিষ্কার সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। এটা তারা না করলে প্রতিহিংসার রাজনীতির দেওয়াল আরও বাড়তে থাকবে। ফলে একটি গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি হতে পারে।

Advertisement

আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে তিনি বলেন, বিরোধীদলকে মোকাবিলা করতে আওয়ামী লীগের কোনো কর্মসূচি নেই। তাদের নৈতিক, রাজনৈতিক পরাজয় হয়েছে। দল হিসেবে তাদের যে মৃত্যু ঘটেছে তার জন্য ওবায়দুল কাদের ও তথ্যমন্ত্রীর গত তিন মাসের কথায় স্পষ্ট।

তিনি বলেন, বিদেশ সফর শেষে দেশে এসে তলে তলে আপসের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী কিছু বলেননি। সংবাদ সম্মেলনে তার যে রাগ, ক্ষোভ অভিমান প্রকাশ পেয়েছে তাতে এই সফর যে কোনো কাজে লাগেনি সেটা বোঝা গেছে। তাদের অধীনে আগামী নির্বাচন হবে সেটাও জোর দিয়ে তারা আর বলতে পারছে না।

আরও পড়ুন>> প্রার্থনা করি, খালেদা জিয়া সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরে যান: তথ্যমন্ত্রী

এসময় নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আমার মনে হয় না সরকার নির্বাচন পর্যন্ত যেতে পারবে। আমার মনে হয় না সরকার তফসিল ঘোষণা করতে পারবে। আমরা লড়াই ছাড়বো না। এখানে কোনো আপসের সুযোগ নেই। পূজার পরে আমরা ভালোভাবে আসবো, এমন ভালোভাবে আসবো যেটা সরকারের জন্য খারাপ হবে।

Advertisement

প্রধানমন্ত্রীর যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য সফরে কোনো প্রাপ্তি নেই জানিয়ে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী, সরকার, ওবায়দুল কাদেরের করার কিছু আছে বলে দেখছি না। করার থাকলে পাঁচদিন ওয়াশিংটনে গিয়ে বসে থাকেন? তিনি সেখানে কী করছেন কেউ জানে না। পরে জানলাম চিফ অফিসিয়ালের সঙ্গে দেখা করেছেন। তিনি আমেরিকার ন্যাশনাল সিকিউরিটি দেখেন। তার কাছে আপনার তদবির করতে হয়? এই সরকারের কী অবস্থা আমরা বুঝতে পারি না?

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, তফসিল ঘোষণার পায়তারা থেকে বের হয়ে সংসদের শেষ অধিবেশনে নির্দলীয় সরকারের বিধান করে সম্মানে বিদায় নিতে পারেন। সবকিছু উপেক্ষা করে যদি একতরফা নির্বাচনের পথে যান, তাহলে বাংলাদেশের জনগণ তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে নামবে।

তিনি আরও বলেন, রিজার্ভ, রেমিট্যান্স কমছে, পাচার বাড়ছে, সাধারণ মানুষের ওপর ভয়ংকর চাপ নেমে আসছে, মূল্যস্ফীতি বাড়ছে। অর্থনৈতিক বিপর্যয় হলে সব ক্ষেত্রেই বিপর্যয় নেমে আসবে। এই সরকার যেহেতু ইতিবাচক পথে হাঁটবে না, তাই জনগণকে সংগ্রাম করেই এগোতে হবে।

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সহ-সভাপতি তানিয়া রব, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুমসহ অন্যরা।

এমএনএইচ/ইএ/এএসএম