পদোন্নতি ও বৈষম্য নিরসন দাবিতে টানা তিনদিনের সর্বাত্মক কর্মবিরতি শুরু করেছেন দেশের সব সরকারি কলেজ ও আলিয়া মাদরাসার শিক্ষকরা। এতে বন্ধ রয়েছে ক্লাস-পরীক্ষা। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ সব অনার্স কলেজে তিনদিনের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। একইসঙ্গে শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সব অধিদপ্তর, সংস্থা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটেও চলছে কর্মবিরতি। ফলে সারাদেশে শিক্ষা কার্যক্রমে বিরাজ করছে অচলাবস্থা।
Advertisement
বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির ডাকে ১০, ১১ ও ১২ অক্টোবর কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয়। তাতে সাড়া দিয়ে মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) কর্মবিরতি পালন করছেন শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা। এদিন সকাল ১০টা থেকে সারাদেশে সরকারি কলেজ ও আলিয়া মাদরাসাগুলোতে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে অবস্থান নেন শিক্ষকরা। কোথাও কোথাও মৌন মিছিলও হয়েছে। অনেক প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরাও শিক্ষকদের সঙ্গে কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন।
এদিকে, ঢাকায় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি), বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর, শিক্ষা বোর্ড, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি), নায়েম, ব্যানবেইসসহ শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সব দপ্তর ও অধিদপ্তরে কর্মরত শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তারা সবধরনের কাজ বন্ধ রেখেছেন। কোথাও কোথাও ব্যানার নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি করছেন কর্মকর্তারা।
বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মো. শাহেদুল খবির চৌধুরী বলেন, শিক্ষার রূপান্তরের অন্যতম কারিগর বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা। তারাই প্রণয়ন করেছেন নতুন শিক্ষাক্রম। এ শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নেও তারাই অন্যতম শক্তি। অথচ প্রাপ্য অধিকার ও সুবিধা থেকে তারা পুরোপুরি বঞ্চিত। পদোন্নতির সব যোগ্যতা অর্জন সত্ত্বেও বছরের পর বছর শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তারা পদোন্নতি পাচ্ছেন না।
Advertisement
সমিতির মহাসচিব মো. শওকত হোসেন মোল্যা বলেন, বছরের পর বছর চাকরি করেও আমরা একই পদে। যোগ্যতা থাকলেও পদোন্নতি নেই। ২৯ বছর চাকরি করেও সহযোগী অধ্যাপক থেকে অবসরে যাচ্ছেন এ ক্যাডারের কর্মকর্তারা। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের সুস্পষ্ট ঘোষণা ও পদক্ষেপ না দিলে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো।
জানা গেছে, দাবি আদায়ে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি ধারাবাহিক কর্মসূচি করে আসছে। গত ৫ সেপ্টেম্বর সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য দাবি তুলে ধরেন সমিতির নেতারা।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর মাউশিতে অবস্থান কর্মসূচি করেন তারা। এরপরও দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় ৩০ সেপ্টেম্বর সংবাদ সম্মেলন করে ২ অক্টোবর কর্মবিরতির ঘোষণা দেন। ওইদিন কর্মবিরতি পালনের পর টানা তিনদিনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
এএএইচ/এমআরএম/জিকেএস
Advertisement