মুন্সিগঞ্জ-নারায়ণগঞ্জের সীমান্তবর্তী মেঘনা নদীতে ট্রলারডুবির ঘটনায় যৌথ উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। সোমবার (৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় দীর্ঘ ৭২ ঘণ্টার এ উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত হয়।
Advertisement
বিষয়টি নিশ্চিত করে বিআইডব্লিউটিএ নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দরের উপ-পরিচালক ওবায়দুল করিম খান বলেন, নিখোঁজদের সন্ধানে আমাদের ৭২ ঘণ্টা তৎপরতা ছিল। তবে মরদেহ পাওয়ার আর সম্ভাবনা না থাকায় সোমবার সন্ধ্যায় আলোচনার মাধ্যমে আমরা স্থান ত্যাগ করি।
এ ঘটনায় নিখোঁজের পর দুই শিশুসহ চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হলেও এখনো দুই শিশুর সন্ধান মেলেনি। তারা হলো দুর্ঘটনায় নিহত রংপুরের স্কুল শিক্ষক সাব্বিরের দুইমাস বয়সী ছেলে ইমাদ (২) ও নিহত গজারিয়া উপজেলার ফুলদি এলাকার সুমনার মেয়ে জান্নাতুল সাফা (৩)।
গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মাহফুজ জানান, যৌথ অভিযানটি ৭২ ঘণ্টার জন্য ছিল। সময় শেষ হওয়ায় অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। তবে যৌথ অভিযান না থাকলেও কলাগাছিয়া ও গজারিয়া নৌপুলিশ নদীতে তৎপরতা চালাবে।
Advertisement
আরও পড়ুন: মায়ের একদিন পর মেয়ের মরদেহ উদ্ধার, আরেক মেয়েসহ নিখোঁজ আরও দুই
শনাক্ত হয়নি ডুবে যাওয়া ট্রলার ও ঘাতক বাল্কহেড
দুর্ঘটনার পর বিভিন্ন সংস্থার তৎপরতা থাকলেও তিনদিনেও ডুবে যাওয়া ট্রলারটি নদীতে শনাক্ত করা যায়নি। দুর্ঘটনার কারণ বাল্কহেডটিরও খোঁজে মেলেনি। অভিযান সূত্রে জানা যায়, বিআইডব্লিউটিএ ও নৌবাহিনীর পক্ষ থেকে নদীর বিস্তৃত এলাকাজুড়ে ডুবে যাওয়া ট্রলারটির খোঁজ করা হয়। নৌবাহিনী ব্যবহার করে ‘সাইড স্ক্যান সোনার’ প্রযুক্তি। তবে শেষ পর্যন্ত ডুবন্ত ট্রলারটি পাওয়া যায়নি।
বিআইডব্লিউটিএ নারায়ণগঞ্জ অঞ্চলের নৌনিরাপত্তা বিভাগের উপপরিচালক বাবু লাল বৈদ্য বলেন, এ ঘটনায় মেরিন কোর্টে ডুবে যাওয়া ট্রলারের মাঝি রফিকুল ও বাল্কহেড কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে সোনারগাঁও থানায় মামলা করা হয়েছে। মামলাটির বাদী আমি। খুব শিগগির বাল্কহেডটি খুঁজে বের করা হবে।
Advertisement
শুক্রবার (৬ অক্টোবর) ছুটির দিনে গজারিয়া থেকে মুন্সিগঞ্জ-নারায়গঞ্জের সীমান্তবর্তী চরকিশোরগঞ্জে ট্রলারযোগে ঘুরতে যান ১২ জন। ঘোরাঘুরি শেষে সন্ধ্যায় ফেরার পথে মেঘনা নদীর মুন্সিগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জের সীমান্তবর্তী স্থানে ঘটে দুর্ঘটনা। রাতের আঁধারে অবৈধভাবে চাঁদপুর থেকে নারায়ণগঞ্জ অভিমুখে চলা বাল্কহেডের ধাক্কায় ডুবে যায় ট্রলারটি।
পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় মফিজুল (৪০), তার খালা আকলিমা (৪৭), শিশু তিনা (৯), তাহিয়া (১০) সাফা (৪), যুবক রিয়াদ (২২) ও ট্রলারচালক রফিকুল সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও নিখোঁজ হয় চার শিশুসহ ছয়জন। পরে বিআইডব্লিউটিএ, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, নৌপুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থা যৌথ অভিযান শুরু করে। দুর্ঘটনার পরদিন সকালে সুমনা আক্তার (৮) ও তার পরদিন জান্নাতুল মারোয়ার (৮), জান্নাতুল মাওয়া (৯) ও স্কুলশিক্ষক সাব্বির হোসেনের (৪০) মরদেহ চাঁদপুর-মুন্সিগঞ্জ সংলগ্ন মেঘনা নদী থেকে উদ্ধার করা হয়।
আরাফাত রায়হান সাকিব/এসআর/জিকেএস