ইসরায়েলে হামাসের আকস্মিক আক্রমণ প্রতিহত করতে না পারার ঘটনাকে বড় ব্যর্থতা বলে উল্লেখ করেছেন ইসরায়েলের গোয়েন্দা বাহিনীর সাবেক প্রধান। তিনি বলেছেন, গোটা নিরাপত্তা কৌশলে ধস নেমেছে। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
Advertisement
ইসরায়েলের গোপন গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সাবেক প্রধান ও বিরোধী দলীয় নেতা ড্যানি ইয়াটম ইসরায়েলে হামাসের হামলা প্রসঙ্গে বলেন, সবই ভুল হচ্ছে এবং কারও কোনো খবর নেই।
আরও পড়ুন: হুমকিতে ইসরায়েলের অর্থনীতি, শেয়ারবাজারের পর মুদ্রার মানে ধস
তার দাবি, ইসরায়েলের দ্বিতীয় স্তরের প্রতিরক্ষা এই হামলা ঠৈকাতে যথেষ্ট ছিল না। তিনি প্রায় ৫০ বছর আগে অর্থাৎ ১৯৭৩ সালের ৬ অক্টোবরের ইয়ম কিপোর যুদ্ধের কথা স্মরণ করিয়ে দেন। সে সময় আরব দেশগুলো জোট বেধে ইসরায়েলের ওপর হামলা চালিয়েছিল।
Advertisement
অপরদিকে মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সরকারের সাবেক ডেপুটি ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স অফিসার জনাথন প্যানিকফও বলেছেন যে, এটি একটি গোয়েন্দা ব্যর্থতা ছিল। নাহলে এ হামলা হতে পারত না। তিনি বলেছেন, এটি ইসরায়েলের নিরাপত্তা ব্যর্থতা।
বলা হয়ে থাকে যে, সারা বিশ্বের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মধ্যে অন্যতম মোসাদ। মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে সক্রিয় ও শক্তিশালী। গোপন অভিযান ও বিভিন্ন ধরনের হামলার পাশাপাশি ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে এই গোয়েন্দা সংস্থা। কিন্তু হামাসের এই আকস্মিক হামলার বিষয়ে তারা আগে থেকে কোনো তথ্যই জানতে পারেনি।
গত শনিবার (৭ অক্টোবর) কয়েক হাজার রকেট লঞ্চারসহ ভারী অস্ত্র নিয়ে ইসরায়েলের মাটিতে হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। জবাবে পাল্টা আক্রমণ শুরু করে ইসরায়েলও। এখন পর্যন্ত দুপক্ষের সংঘাত চলছেই। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি যেন আরও খারাপ হচ্ছে।
দুপক্ষের এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত প্রায় এক হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, এখন পর্যন্ত প্রায় ৭০০ ইসরায়েলি নিহত হয়েছে।
Advertisement
অপরদিকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৩৬ জনে পৌঁছেছে। আহত হয়েছেন আরও ২ হাজার ৩০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি। নিহতদের মধ্যে ৯১টি শিশু রয়েছে। এছাড়া ইসরায়েলি বিমান হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত আটটি পরিবারের সব সদস্য।
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৯১ শিশু নিহত
ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের সঙ্গে ইসরায়েলের সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার পর গাজা উপত্যকায় ১ লাখ ২৩ হাজারের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সংস্থা (ওসিএইচএ) বলেছে, গাজায় অন্তত ১ লাখ ২৩ হাজার ৫৩৮ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। তাদের বেশিরভাগই ঘর ছেড়েছেন আতঙ্ক, নিরাপত্তা উদ্বেগ ও ধ্বংসযজ্ঞের কারণে।
গাজা সীমান্তে এরই মধ্যে প্রায় এক লাখ রিজার্ভ সৈন্য জড়ো করেছে ইসরায়েল। যেকোনো সময় বড় ধরনের স্থল অভিযান শুরু হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ফিলিস্তিনিরা।
টিটিএন