তুলির আঁচরে ক্যানভাসে আঁকা ছবির মতোই সুন্দর। কোথাও কোনো শব্দ নেই, সবুজ-শ্যামল ও শান্ত প্রকৃতি। যেন রূপকথার দেশকেও হার মানায়। প্রথম দেখায় মনে হতে পারে যেন কোনো শিল্পীর আঁকা ক্যানভাস দেখছেন। তবে বাস্তবেই এমনি একটি গ্রামের দেখা পাবেন নেদারল্যান্ডসে।
Advertisement
আকারে ছোট হলেও রূপকথার এ গ্রামটি ভ্রমণপিপাসুদের কাছে খুবই জনপ্রিয়। এই গ্রামকে ‘নেদারল্যান্ডসের ভেনিস’ও বলা হয়। কিন্তু গ্রামের আসল নাম ‘গির্থন’। সুন্দর এই গ্রামটি ১২৩০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। অন্যান্য গ্রাম থেকে এ গ্রামটি একেবারে ভিন্ন তার কারণ এই গ্রামে যাওয়ার কোনো রাস্তা নেই। তাই গাড়ি বা অন্যান্য যানবাহনের শব্দ এখানে পাওয়া যায় না। এই গ্রামে প্রবেশ করতে হলে গাড়ি রেখেই আসতে হবে।
গির্থনে যাওয়ার একমাত্র রাস্তা পানিপথ। শুধু পর্যটকদের জন্যই নয়, স্থানীয় বাসিন্দারাও এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে যেতে নৌকা ব্যবহার করেন। শান্ত পরিবেশ বজায় রাখতে ব্যবহার করেন ইঞ্জিন ছাড়া নৌকা। এক বাড়ি থেকে অন্য বাড়িতে যেতে হলেও নৌকাই ভরসা।
আরও পড়ুন: যে লেকে কোনো উদ্ভিদ জন্মে না
Advertisement
ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায়, এ গ্রামের বিভিন্ন স্থানের মাটির নিচের অংশ ফাঁপা ছিল। গ্রামের মানুষ বসবাসের সুবিধার্থে ফাঁপা অংশ খোঁড়া শুরু করে। বছরের পর বছর ধরে খোদাইয়ের পর গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় ছোটখাটো লেক বা হ্রদ তৈরি হয়। পরবর্তীতে এগুলোর একটার সঙ্গে আরেকটা সংযোগ করে এ গ্রামে যেতে পানিপথ তৈরি করা হয়।
গ্রামের বিভিন্ন প্রান্তে খালগুলো বয়ে চলায় গ্রামটাও ছোট ছোট দ্বীপে রূপান্তর হয়েছে। ১৫০টিরও বেশি সেতু এ দ্বীপগুলোর মধ্যে যোগসূত্র তৈরি করেছে। নেদারল্যান্ডসের রাজধানী শহরের নাম আমস্টারডাম থেকে এ গ্রামের দূরত্ব ৭৫ কিলোমিটার। বাস বা ট্রেনে সহজেই যাওয়া যায় এ গ্রামের প্রান্তে।
১৯৫৮ সালে ডাচ ফিল্মমেকার বার্ট হান্সট্রা তার সিনেমা ‘ফ্যানফেয়ার’এর দৃশ্য ধারণের পর গ্রামটি বিশ্বদরবারে পরিচিতি লাভ করে। আর পরিচিতি লাভ করবেই না কেন যেমন প্রাকৃতিক সৈন্দর্য, তেমনি নজরকারা বাড়ি আর সামনে দিয়ে বয়ে চলা জল পথ।
কেএসকে/জিকেএস
Advertisement