স্বাস্থ্য

ডেঙ্গুতে বেশি মৃত্যুর কারণ হাসপাতালে দেরিতে আসা

কিছুতেই সামাল দেওয়া যাচ্ছে না ডেঙ্গু পরিস্থিতি। টানা কয়েক মাস ধরে ডেঙ্গু নাস্তানাবুদ করেছে স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টদের। চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা আগেই আভাস দিয়েছিলেন এবার দীর্ঘায়িত হতে পারে ডেঙ্গু সংক্রমণ। চলতি বছর এ পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ গেছে এক হাজার ৮৬ জনের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংক্রমণ যত বেশি হবে মৃত্যু তত বেশি হবে। এখনই লাগাম টেনে ধরা না গেলে ডেঙ্গু জ্বরে মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে থাকবে বলেও শঙ্কার কথা বলছেন তারা।

Advertisement

‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, রাজধানী ঢাকাসহ দেশের পাঁচ বিভাগেই সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে। এক হাজার ৮৬ জনের মধ্যে ঢাকার ৬৮৫ জন এবং ঢাকার বাইরের ৪০১ জন।

চলতি বছর এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে সেপ্টেম্বরে ৩৯৬ জন। আগস্টে মারা গেছে ৩৪২ জন এবং জুলাইয়ে ২০৪ জন। বছরের শুরুর দিকে ডেঙ্গুর প্রকোপ কম ছিল, যদিও জানুয়ারিতে ডেঙ্গুতে মারা গেছে ছয়জন, ফেব্রুয়ারিতে তিনজন, এপ্রিল ও মে মাসে দুজন। চলতি মাসের সাতদিনেই মৃত্যু হয়েছে ৯০ জনের।

 

চলতি বছর ডেঙ্গুতে বেশি মৃত্যু হওয়ার অন্যতম কারণ প্রাথমিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় ডেঙ্গুর চিকিৎসা বা ডেঙ্গু পরীক্ষার কোনো ব্যবস্থা নেই। যদি প্রত্যেকের হাতের কাছে ডেঙ্গু টেস্ট করার জায়গা থাকতো তাহলে যার জ্বর হয়েছে সে অপেক্ষা করতো না। হাতের কাছে যেসব হাসপাতাল আছে সেগুলো বেসরকারি। গরিব মানুষ জ্বর হলে চিন্তা করে ভালো হয়ে যাবে। কাজকর্ম চালিয়ে যায়। পরে দেখা যায়, ডেঙ্গু হলে তারা এক সপ্তাহের মধ্যে প্রচণ্ড অসুস্থ হয়ে যায়। ব্লাডপ্রেশার কমে যায়, প্রস্রাব বন্ধ হয়ে যায়, শকে চলে যায়। আর এতে মৃত্যু হয়।

Advertisement

 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ডেঙ্গুতে এতো বেশি মৃত্যুর কারণ কী, মৃতদের স্বজন আর চিকিৎসকরাই বা কী বলছেন, বিষয়গুলো স্পষ্ট হওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।

আরও পড়ুন> ঢাকায় মশার ঘনত্ব এবার দ্বিগুণ, দীর্ঘায়িত হবে ডেঙ্গু সংক্রমণ 

গত ৮ সেপ্টেম্বর খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান নাসিমা আক্তার। তার স্বামী সুজায়েত হোসেন জাগো নিউজকে জানান, ৪ সেপ্টেম্বর থেকে জ্বরে ভুগছিলেন তিনি। ভেবেছিলেন সাধারণ জ্বর হয়েছে। তবে তিনদিনে অবস্থা খারাপ হতে থাকলে তাকে এলাকার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সে হাসপাতাল থেকে রেফার করা হয় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এসময় তার প্রেশার কমে যায়। আইসিইউ খুঁজেও পাওয়া যায়নি। পরে জ্বর হওয়ার চারদিনে তিনি মারা যান।

রাজধানীর ভাটারা এলাকার বাসিন্দা নাইমুর রহমানের ভাতিজা কাজেন ইবনে আশরাফ মারা যায় গত ৯ সেপ্টেম্বর। তার বয়স ১৬ বছর। নাইমুর রহমান জানান, জ্বর হলে ঠিক হয়ে যাবে ভেবে বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছিল আশরাফ। তিনদিনের দিন দুর্বল হয়ে পড়লে বাসায় স্যালাইন দেওয়া হয় তাকে। সেদিন রাতে হঠাৎ খিঁচুনি উঠলে তাকে তাড়াতাড়ি কুর্মিটোলা হাসপাতালে নিয়ে যাই। তবে সেখানে গেলে তার বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া শুরু হয়। পরে এইচডিইউতে নিয়েও তাকে বাঁচানো যায়নি। ৫৮ বছর বয়সী পারুল বেগম হাসপাতালে যান জ্বরে ভোগার চতুর্থ দিন। তার নাতি শিশির ইসলাম জানায়, বাড়িতে মামার সঙ্গে থাকতেন তার নানু। ডায়বেটিস ও প্রেশারও ছিল। জ্বর আসার পর সাধারণ ওষুধ আনিয়ে খাচ্ছিলেন। তিনদিনে অবস্থা খারাপ দেখা দিলে ঢাকায় এনে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার প্লাটিলেট কমে যাওয়ায় এবং প্রেশার কমে যায় অনেক। পরে ৮ সেপ্টেম্বর রাতে তিনি মারা যান।

Advertisement

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক বলেন, চলতি বছর এ পর্যন্ত ৬ হাজার ৬২৭ জন ডেঙ্গুরোগী চিকিৎসা নিয়েছে। এর মধ্যে মারা গেছেন ১৬৬ জন। যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে বেশিরভাগই ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা বা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মারা গেছেন। ঢাকা মেডিকেলে যে রোগী আসে তারা বেশিরভাগই খুবই জটিল অবস্থায় আসে। তখন আমাদের চিকিৎসকরা অনেক চেষ্টা করেও বাঁচাতে পারেন না।

তিনি বলেন, যখন তারা বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে রেফার হয়। তখন তাদের ডেঙ্গুর যে প্রাইমারি চিকিৎসা সেটুকুও দেওয়া হয় না। তখন রোগীরা আরও ক্রিটিক্যাল অবস্থায় চলে যায়। তারপর এখানে পৌঁছাতে পৌঁছাতে তাদের অনেকটা সময় লাগে। তখন আর চিকিৎস দেওয়ার মতো কিছুই থাকে না। মূলত এখানে মৃত্যুর সংখ্যাটা বেড়ে যায়। এজন্য রেফার করার আগে রোগীর প্রাইমারি যে চিকিৎসা সেগুলো দরকার। বিশেষ করে ডেঙ্গু রোগীদের স্যালাইন দেওয়ার বিষয় থাকে, এই কাজটি যেখান থেকে রেফার হয় সেখান থেকে যদি করে তাহলে রোগী অনেকটা ভালো থাকে।

ডেঙ্গুর ভয়াবহতার কথা তুলে ধরে এতো বেশি মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক আহমেদুল কবীর জাগো নিউজকে বলেন, ডেঙ্গু রোগীর অবস্থা যত বেশি খারাপ হবে তত বেশি মৃত্যু হবে। এত বেশি মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখা গেছে, মৃত্যুর প্রধান কারণ হচ্ছে দেরিতে হাসপাতালে আসা। এছাড়া আরেকটি কারণ দেখা যাচ্ছে এক্সপান্ডেড ডেঙ্গু সিনড্রোম। এর অর্থ হচ্ছে ডেঙ্গুতে অনেক সময় মারাত্মক কিছু জটিলতা তৈরি হতে পারে। এসবের মধ্যে লিভার, কিডনি, মস্তিষ্ক, হৃৎপিণ্ড, ফুসফুস এ ধরনের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ আক্রান্ত হতে পারে। ফলে অস্বাভাবিক কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায়। এ ধরনের জটিলতাকে বলা হয় এক্সপান্ডেড ডেঙ্গু সিনড্রোম। এসময় রোগীদের মৃত্যু ঠেকানো কঠিন হয়ে পড়ে।

আহমেদুল কবীর জানান, বেশিরভাগ মৃত্যুও হচ্ছে ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে। চিকিৎসকদের আমরা বলেছি, প্রতিদিন যদি ১০০ জন ডেঙ্গুরোগী আসে সবাইকে সমান গুরুত্ব দিয়ে দেখার প্রয়োজন হয় না। তাদের মধ্যে ১০ জনের যদি ডেঙ্গু শক সিনড্রোমের কোনো লক্ষণ থাকে তাদের গুরুত্ব দিয়ে গাইডলাইন অনুযায়ী, অ্যাগ্রেসিভলি ফ্লুইড দেওয়া হয় তাহলে তাদেরও মৃত্যু হবে না। এতে শক সিনড্রোমের রোগীদের শতভাগ মৃত্যু কমানো সম্ভব।

তিনি বলেন, ডেথ রিভিউ কমিটিকে আমরা জানিয়েছি যাতে শক সিনড্রোমের রোগীদের বেডের ব্যবস্থা হয় এবং ২৪ ঘণ্টা অবজারভেশনে রাখা হয়। ঢাকার তুলনায় বাইরে অনেক বেশি মানুষ ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। আমরা তো সারাদেশে একই চিকিৎসা দিচ্ছি। ডেঙ্গু রোগীদের জন্য আলাদা কিছুর প্রয়োজন হয় না। তাদের ভর্তি করে পর্যবেক্ষণে রেখে স্যালাইন দিতে হয়। রোগী উপজেলা বা জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা নেবে। যদি সমস্যা বেশি হয় বিভাগীয় হাসপাতালে যাবে৷ সবাইকে গণহারে ঢাকায় স্থানান্তর করলে রোগীদের মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হবে।

অতিরিক্ত মহাপরিচালক বলেন, ডেঙ্গুতে প্রথমবারের আক্রান্ত মানুষের তত বেশি সমস্যা হয় না, অনেকের উপসর্গই থাকে না। কিন্তু দ্বিতীয়, তৃতীয় কিংবা চতুর্থবার আক্রান্ত রোগীরা খারাপ অবস্থায় চলে যায়। গত বছর রোগীদের অনেকেই প্রথমবার আক্রান্ত হয়েছিল। সেবার মৃত্যু কম ছিল। এবছর দ্বিতীয় ধাপে আক্রান্তের কারণে গত বছরের তুলনায় মৃত্যু বেশি হচ্ছে। আগামী বছর তা আরও বাড়তে পারে। দেশের সবাই যদি চারটা স্ট্রেইনে সবগুলোতে আক্রান্ত হয় তাহলেই হয়তো ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধী হয়ে উঠবে মানুষ। যে স্ট্রেইনে একবার সে আক্রান্ত হবে সে স্ট্রেইনে লাইফ টাইম প্রতিরোধী হয়ে উঠবে। অন্য স্ট্রেইনে আক্রান্ত হলে সেক্ষেত্রে তার রোগ প্রতিরোধ অবস্থা কার্যকর হবে না। এতে নতুন স্ট্রেইনে আক্রান্ত হলে রোগীরা আরও খারাপের দিকে যাবে। এবার রোগীদের ক্ষেত্রে এটিই হচ্ছে। যেমন আগে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য সাধারণ লক্ষণ ছিল, ৪-৫ দিন জ্বর থাকে এরপর প্লাটিলেট কমে যায়। এরপর সুস্থ হয়ে ওঠে রোগী। এবার তা হচ্ছে না। আক্রান্তের ২-৩ দিনের মধ্যেই রোগীরা শক সিনড্রোমে চলে যাচ্ছে। প্লাটিলেট কমারও সুযোগ দিচ্ছে না। এক্ষেত্রে শকে যাওয়ার আগে কিছু ওয়ার্নিং লক্ষণ থাকে। এগুলো হচ্ছে, তীব্র পেটে ব্যথা, খেতে পারে না, বার বার বমি হওয়া, পাতলা পায়খানা, ৬ ঘণ্টার বেশি প্রস্রাব না হওয়া, শরীর খুব দুর্বল হয়ে যাওয়া। এসব লক্ষণ দেখা দিলে হাসপাতালে দ্রুত ভর্তি করতে হয়। এসময় হাসপাতালে যেতে না পারলে রোগী প্রথম ধাপ মিস করে এবং শক সিনড্রোমে চলে যায়। আমাদের রোগীদের ক্ষেত্রে এ জায়াগায় ভুল বেশি হচ্ছে।

 

ডেঙ্গু রোগীর অবস্থা যত বেশি খারাপ হবে তত বেশি মৃত্যু হবে। এত বেশি মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখা গেছে, মৃত্যুর প্রধান কারণ হচ্ছে দেরিতে হাসপাতালে আসা। এছাড়া আরেকটি কারণ দেখা যাচ্ছে এক্সপান্ডেড ডেঙ্গু সিনড্রোম। এর অর্থ হচ্ছে ডেঙ্গুতে অনেক সময় মারাত্মক কিছু জটিলতা তৈরি হতে পারে। এসবের মধ্যে লিভার, কিডনি, মস্তিষ্ক, হৃৎপিণ্ড, ফুসফুস এ ধরনের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ আক্রান্ত হতে পারে। ফলে অস্বাভাবিক কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায়।

 

আরও পড়ুন> বাচ্চাদের কান্নায় ভারী শিশু হাসপাতালের ডেঙ্গু ওয়ার্ড 

ডেঙ্গু চিকিৎসায় যে নির্দেশনা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সেটি নিয়ে আহমেদুল কবীর বলেন, আমরা সব চিকিৎসককে বলেছি, কোনো রোগীর ডেঙ্গু বুঝতে পারলে তাকে শুধু একটি প্রেসক্রিপশন দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া যাবে না। এক্ষেত্রে রোগীকে এসব লক্ষণ সম্পর্কে লিখে দিতে হবে। যাতে এ ধরনের কোনো লক্ষণ দেখা দিলে যোগাযোগ করে অথবা নিকটস্থ হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নেয়। এটি করা গেলে এবং রোগীকে দ্রুত চিকিৎসা দেওয়া হলে ৯৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ রোগীকে শক সিনড্রোম থেকে রক্ষা করা যাবে।

ডেঙ্গু রোধে আগামী বছরের পরিকল্পনা নিয়ে তিনি বলেন, কেইসের সংখ্যা বাড়লে মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়বে। ডেঙ্গুতে মৃত্যু কমাতে হলে আক্রান্তের সংখ্যা কমাতে হবে। আর এজন্য জরুরি মশা নিধন। আমরা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। অধিদপ্তর থেকে ন্যাশনাল স্ট্রেটেজিক প্ল্যান করেছি। এর মাধ্যমে লোকাল গভর্নমেন্ট ও সিটি করপোরেশন সবাইকে এক জায়গায় এনে সারাদেশে বিজ্ঞানসম্মতভাবে এডিস মশা নিধন করা যায়। এতে কেইস কমানো সম্ভব হবে। অন্যথায় এই খারাপ অবস্থা চলতে থাকবে।

রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইডিসিআর) উপদেষ্টা ড. মুশতাক হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, এ বছর ডেঙ্গুতে বেশি মৃত্যু হওয়ার অন্যতম কারণ প্রাথমিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় ডেঙ্গুর চিকিৎসা বা ডেঙ্গু পরীক্ষার কোনো ব্যবস্থা নেই। যদি প্রত্যেক মানুষ হাতের কাছে ডেঙ্গু টেস্ট করার জায়গা থাকতো তাহলে যার জ্বর হয়েছে সে অপেক্ষা করতো না। হাতের কাছে যেসব হাসপাতাল আছে সেগুলো বেসরকারি। গরিব মানুষ জ্বর হলে চিন্তা করে ভালো হয়ে যাবে। কাজকর্ম চালিয়ে যায়। পরে দেখা যায়, ডেঙ্গু হলে তারা এক সপ্তাহের মধ্যে প্রচণ্ড অসুস্থ হয়ে যায়। ব্লাডপ্রেশার কমে যায়, প্রস্রাব বন্ধ হয়ে যায়, শকে চলে যায়। আর এতে মৃত্যু হয়।

আরও পড়ুন> স্বাস্থ্যমন্ত্রী/ডেঙ্গু ভ্যাকসিনের ট্রায়ালে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করবো 

শহরে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র তেমন একটা নেই। বড় হাসপাতাল যেগুলো আছে সেগুলোতে প্রচুর ভিড় থাকে। অন্যদিকে, গ্রামের কমিউনিটি ক্লিনিক, উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র আছে। তবে সেখানে ডেঙ্গুর চিকিৎসা বা পরীক্ষার সুযোগ সব জায়গায় নেই। এজন্য মানুষ বুঝতে পারছে না আক্রান্ত হওয়ার পর তাদের ডেঙ্গু আছে কি না। আর খারাপ অবস্থা হলে এরপরই যাচ্ছে হাসপাতালে। এতেই মৃত্যু বেশি হচ্ছে।

 

আগে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য সাধারণ লক্ষণ ছিল, ৪-৫ দিন জ্বর থাকে এরপর প্লাটিলেট কমে যায়। এরপর সুস্থ হয়ে ওঠে রোগী। এবার তা হচ্ছে না। আক্রান্তের ২-৩ দিনের মধ্যেই রোগীরা শক সিনড্রোমে চলে যাচ্ছে। প্লাটিলেট কমারও সুযোগ দিচ্ছে না। এক্ষেত্রে শকে যাওয়ার আগে কিছু ওয়ার্নিং লক্ষণ থাকে। এগুলো হচ্ছে, তীব্র পেটে ব্যথা, খেতে না পারা, বার বার বমি হওয়া, পাতলা পায়খানা, ৬ ঘণ্টার বেশি প্রস্রাব না হওয়া, শরীর খুব দুর্বল হয়ে যাওয়া। এসব লক্ষণ দেখা দিলে হাসপাতালে দ্রুত ভর্তি করতে হয়।

 

তিনি শঙ্কার কথা জানিয়ে আরও বলেন, চলতি বছর ডেঙ্গুর ২ এবং ৩ সেরোটাইপে মানুষ বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। সামনের বছর যদি ডেঙ্গু তার সেরোটাইপ পরিবর্তন করে ১ অথবা ৪ এ যায় তাহলে ডেঙ্গুতে মৃত্যু আরও অনেক বেশি বাড়বে।

এএএম/এসএনআর/এসএইচএস/জিকেএস