দেশজুড়ে

ডিবি পরিচয়ে তুলে নেওয়ার তিন দিনেও ছেলের খোঁজ পায়নি পরিবার

নেত্রকোনার কলমাকান্দায় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিচয়ে মুফতি মুনিরুল ইসলাম (২৫) নামে এক যুবককে বাসা থেকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) ভোর ৫টার দিকে উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের পাঁচকাটা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে একটি মাইক্রোবাসে তাকে তুলে নেওয়া হয়। আজ শনিবার দুপুর পর্যন্ত তার কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।

Advertisement

নিখোঁজ মুফতি মুনিরুল ইসলাম কলমাকান্দার পাঁচকাটা গ্রামের মো. জাকির হোসেনের ছেলে। তিনি ফেনীর একটি মাদরাসায় পড়াশোনা করেছেন। পরে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকার একটি মাদরাসা থেকে মুফতি পাস করেন। এরপর টঙ্গী এলাকায় একটি মাদরাসায় বেশ কিছুদিন শিক্ষকতা করেন। ঢাকার একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় বছর খানেক চাকরিও করেন তিনি। চাকরি ছেড়ে এক বছর আগে গ্রামে চলে আসেন। গ্রামে থেকেই ওয়াজ মাহফিল করতেন। পাশাপাশি রাসায়নিক সার নিয়ে গবেষণা করতেন।

মুনিরুলের বাবা জাকির হোসেন জানান, ‘গত বৃহস্পতিবার ভোরে চারজন লোক এসে ঘরের দরজায় নক করেন। দরজা খুললে তারা গোয়েন্দা পুলিশ বলে পরিচয় দেন। ঘরে ঢুকে মুনিরুলকে ধরে বাইরে থাকা একটি সাদা রঙের মাইক্রোবাসের কাছে নিয়ে যান। তারা জানান, মুনিরুলের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। তার কাছ থেকে কিছু তথ্য জানা হবে। তথ্য জেনেই ছেড়ে দেওয়া হবে। কিন্তু গাড়ির কাছে নিয়েই তাকে তুলে নিয়ে চলে যান। তবে মুনিরুলকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এটা তারা জানাননি। এ সময় তারা মুনিরুলের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনও নিয়ে যান।’

জাকির হোসেন আরও বলেন, ‘মুনিরুলকে ধরে নিয়ে যাওয়ার সময় ওই চারজন তাদের পরিচয়পত্র দেখিয়েছেন। তাদের হাতে পিস্তল ও হাতকড়া ছিল। বুধবার বিকেল থেকে তারা আমাদের বাড়ির আশপাশে ও বাজারে ঘুরেছেন। সবাই তাদের দেখেছে, আমিও দেখেছি। তখনতো বিষয়টি কেউ বুঝতে পারিনি।’

Advertisement

এ বিষয়ে নাজিরপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মো. সমর আলী বলেন, ‘সকালে ঘটনা শুনে গ্রামের লোকজন জড়ো হয়। পরে মুনিরুলের বাবা জাকির হোসেনকে নিয়ে থানায় গেলাম। পুলিশ এ বিষয়ে কিছুই জানে না বললো। ওই পরিবারের সবাই আতঙ্ক আর উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছে।’

এ বিষয়ে কলমাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম বলেন, মুনিরুলকে কারা নিয়ে গেছে এটা আমাদের জানা নেই। এ বিষয়ে আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়ে গেলেতো অবশ্যই পরিচয়পত্র দেখিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা। আমরা খোঁজ করে দেখবো। পরিবারের লোকজনও খুঁজে দেখুক।

জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) মো. লুৎফুর রহমান বলেন, আসলে কী হয়েছে এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। আরও কয়েকজন এ বিষয়ে আমার কাছে জানতে চেয়েছে। এ বিষয়ে কোনো তথ্য নেই। তাই কিছু বলতে পারছি না। খোঁজ নিয়ে দেখি কী হয়েছে।

এইচ এম কামাল/এফএ/জেআইএম

Advertisement