জাতীয়

আমরাও চাঁদে যাবো: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আশেপাশের দেশ চাঁদে চলে যায়, তো আমরা কেন পিছিয়ে থাকবো? আমরাও চাঁদে যাবো। ভবিষ্যতে সেভাবেই আমরা দক্ষ জনশক্তি, স্মার্ট জনশক্তি গড়ে তুলবো।’

Advertisement

শনিবার (৭ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। উদ্বোধনের আগে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের এই দিকটা (অ্যারোস্পেস) যেন আরও উন্নত হয়। সেজন্য অ্যারোস্পেস বিষয়ে আমাদের আরও গবেষণা দরকার। আমাদের লোকবল দরকার, এক্ষেত্রে আরও গবেষণাও দরকার। সেটি মাথায় রেখে আমাদের যারা মেধাবী তরুণ-তরুণী আছে, তাদের উপযুক্ত শিক্ষিত করে গড়ে তোলার জন্য এরই মধ্যে লালমনিরহাটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছি। আমাদের এই দিকটা যেন আরও উন্নত হয়।’

আরও পড়ুন: খুললো ঢাকার আকাশপথে সম্ভাবনার নতুন দুয়ার

Advertisement

তিনি বলেন, ‘আমরা দেখি আমাদের আশেপাশের দেশ চাঁদে চলে যায়, তো আমরা কেন পিছিয়ে থাকবো? আমরাও চাঁদে যাবো। ভবিষ্যতে সেভাবেই আমরা দক্ষ জনশক্তি, স্মার্ট জনশক্তি গড়ে তুলবো। আমরা চাই আমাদের দেশ এগিয়ে যাক, এভিয়েশন খাতে বাংলাদেশ আরও উন্নত হোক।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা আরও নতুন কিছু বিমান (উড়োজাহাজ) কিনবো। এয়ারবাসের সঙ্গে এমওইউ সই হয়েছে। তারা আামদের কিছু লোনও দেবে। আন্তঃজেলায় বিমান যোগাযোগের ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা আমার আছে।’

তিনি বলেন, ‘আজ জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে সারাবিশ্ব চিন্তিত। আমরা সেদিকে লক্ষ্য রেখে ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ করেছি। ২০২১ সালে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল বাংলাদেশের মর্যাদা পেয়েছি। ২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশের যাত্রা শুরু হবে। ২০৪১ সালের বাংলাদেশ কেমন হবে, সে লক্ষ্য নিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চাই আমাদের দেশ এগিয়ে যাক। এভিয়েশন খাতের আরও উন্নতি হোক। অতীতে এই খাতে উন্নয়নের এত পদক্ষেপ কেউ নেয়নি। ২৯ বছর যারা ক্ষমতায় ছিলেন, দেশের মানুষকে কিছু দিয়ে যেতে পারেননি। আওয়ামী লীগই দিয়েছে। মানুষের মধ্যে একটা আত্মমর্যাদাবোধ তৈরি করে দিয়েছি। বিশ্বের বুকে মর্যাদার সঙ্গে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছি।’

Advertisement

আরও পড়ুন: আন্তঃজেলা বিমান যোগাযোগ ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা আছে

বর্তমান বিমানবন্দরে বছরে প্রায় ৮০ লাখ যাত্রীর সেবা দেওয়া হয় জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘তৃতীয় টার্মিনাল পুরোপুরি চালু হলে আরও এক কোটি ২০ লাখ যাত্রীকে সেবা দেওয়া যাবে। আমি বিশ্বাস করি, এটাই হবে আন্তর্জাতিক বিমান পরিবহনের হাব। আমরা সেভাবে তৈরি করছি। আপনারা জানেন, সময়ে সময়ে পরিবর্তন হয়। এক সময় বেশি বিমান পরিবহন হতো হংকংয়ে, এখন দুবাই করে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশ হবে আন্তর্জাতিক বিমান পরিবহনের হাব।’

তিনি বলেন, ‘নতুন কিছু বিমান (উড়োজাহাজ) কিনবো। এয়ারবাসের সঙ্গে এমওইউ সই হয়েছে। তারা আামদের কিছু লোনও দেবে।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘হযরত শাহজালাল বিমাবন্দরের নানামুখী উন্নয়নের পরিকল্পনা আমরা নিয়েছি। জাপান সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। জাপানের জাইকা আমাদের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণে ঋণ দিয়েছে, আমরাও কিছু বিনিয়োগ করেছি।’

তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যতে আমরা আরও কিছু বিমান নিবো। তখন আন্তঃজেলা বিমান যোগাযোগ ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা আমার রয়েছে।’

এর আগে সকাল ১০টার পরে বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। সেখানে তিনি শিশুদের সঙ্গে ছবি তোলেন এবং কথা বলেন। পরে টার্মিনালের করিডোর ঘুরে দেখেন। বিমানন্দরের প্রক্রিয়া অনুযায়ী তিনি লাগেজ চেকিং করান, বোর্ডিং পাস নেন এবং যথারীতি ইমিগ্রেশনের কাজ শেষে কাউন্টার পার হন। পরে প্রি বোর্ডিং সিকিউরিটি স্ক্যান করান এবং চলন্ত ওয়াকওয়ে পার হয়ে বোর্ডিং ব্রিজে যান প্রধানমন্ত্রী।

আরও পড়ুন: ফ্লাইট চালু করতে চায় আরও বিদেশি এয়ারলাইন্স, কমবে টিকিটের দাম

তৃতীয় টার্মিনালের বিভিন্ন স্পটে আলোকচিত্রে বিমান ও বিমানবন্দরের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এগুলো অবলোকন করেন। পুরো প্রক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রী নানা বিষয়ে ব্রিফ করেন বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান।

বিমানবন্দরের এই পুরো প্রক্রিয়া শেষ করে তৃতীয় টার্মিনাল প্রাঙ্গণের অনুষ্ঠান স্থলে পৌঁছান। সেখানে জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এসময় প্রধানমন্ত্রীসহ পুরো অর্ডিয়েন্স দাঁড়িয়ে ঠোঁট মেলান। পরে পবিত্র ধর্মগ্রন্থসমূহ থেকে পাঠ করা হয়। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান। আরও বক্তব্য দেন বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, বিমান সচিব মোকাম্মেল হোসেন প্রমুখ।

পরে তৃতীয় টার্মিনাল, বিমান ও বিমানবন্দরের উন্নয়নের ওপর একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। বেবিচকের কর্মকাণ্ডের ওপরও একটি ডকুমেন্টারি দেখানো হয়।

অনুষ্ঠানে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোক্তাদির চৌধুরী, স্থানীয় সংসদ সদস্য হাবিব হাসান, জাপান ও জাইকার প্রতিনিধি, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য সহ সরকারের পদস্থ কর্মকর্তারা অংশ নেন।

এসইউজে/কেএসআর/এএসএম