খেলাধুলা

প্রোটিয়া ব্যাটার আর লঙ্কান স্পিনারদের লড়াই আজ

একদিনের ক্রিকেটে শক্তিশালী দল হিসেবে যারা পরিচিত দক্ষিণ আফ্রিকা তাদের অন্যতম। এ দলটিকে বাইরে রেখে টুর্নামেন্টের ফেবারিটের তালিকা করা কঠিন। বড় দলের তালিকায় থাকলেও এখনো পর্যন্ত ওয়ানডে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ আসরে সাফল্যের দেখা পায়নি দলটি, যেমনটি পায়নি নিউজিল্যান্ড।

Advertisement

বিশ্বকাপের সেই অধরা সাফল্যের সন্ধানে ত্রয়োদশ আসরের নিজেদের প্রথম ম্যাচে আজ মাঠে নামছে দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রতিপক্ষ ১৯৯৬ সালের চ্যাম্পিয়ন শ্রীলংকা। বাংলাদেশ সময় দুপুর আড়াইটায় দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে।

বিশ্বকাপে সাফল্য না পেলেও দক্ষিণ আফ্রিকাকে কখনো ফেবারিটের তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার সাহস দেখায়নি কেউ। উপায়ও নেই, সর্বশেষ আট আসরের সেমিফাইনালিস্ট তারা; কিন্তু কোথায় যেনো রয়েছে অদৃশ্য এক বাধা। তাইতো সেমিফাইনালের বাধাটা আর পার হওয়া হয় না।

এবার তারা কতদূর যাবে তা সময় বলে দেবে। তবে র‌্যাংকিংয়ের চার নম্বরে থেকে তাদের বিশ্বকাপ যাত্রা শুরু হচ্ছে। শুধু তাই নয়, দারুণ কিছু স্মৃতি তাদের সঙ্গী হয়ে আছে। বিশ্বকাপের আগে সর্বাধিকবারের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের সিরিজ জয়ের স্মৃতি নিয়েই আজ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মাঠে নামছে তারা।

Advertisement

অন্যদিকে বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার সাফল্য এখন অতীত। সেই ১৯৯৬ সালের চ্যাম্পিয়ন। তাছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে দলের অবস্থা মোটেও আশাব্যঞ্জক নয়। বিশ্বকাপ শুরুর আগ মুহূর্তে র‌্যাংকিয়ের সপ্তম স্থানে উঠে এসেছে।

এর চেয়েও বড় বিষয় তারা সরাসরি বিশ্বকাপের টিকিট পায়নি, খেলতে হয়েছে বাছাই পর্ব। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে এশিয়া কাপের পারফরম্যান্স। যদিও পাকিস্তানকে পেছনে ফেলে তারা এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলেছে কিন্তু সেখানে তারা সবাইকে লজ্জায় ফেলেছিল। মাত্র ৫০ রানে অল আউট হয়ে যায়। এমন অবস্থায় কঠিন এক প্রতিপক্ষ দিয়ে বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে মাঠে নামছে শ্রীলঙ্কা।

তবে দক্ষিণ আফ্রিকার দুই ইনজুরির কারণে কিছুটা স্বস্তিতে থাকতে পারে শ্রীলঙ্কা। প্রোটিয়াদের বোলিং ইউনিটের দুই পরিচিত মুখ অ্যানরিখ নরকিয়া ও সিসান্দা মাগালাকে ইনজুরির কারণে দেশে রেখে আসতে হয়েছে।

এই গুরুত্বপূর্ণ বোলারের অনুপস্থিতিতে ইনিংসের শুরুতে যেমন ভুগতে হতে পারে, তেমনি ডেথ ওভারেও অধিনায়ক টেম্বা বাভুমাকে দুঃশ্চিন্তায় পড়তে হবে। প্রতিপক্ষের অবস্থা চিন্তা করে সেই স্বস্তিটা আবার দক্ষিণ আফ্রিকারও রয়েছে। কেননা শ্রীলঙ্কর পেস সেনসেশন দুশমন্তে চামিরা ও স্পিনার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার ইনজুরি রয়েছে।

Advertisement

বোলিং নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় থাকলেও ব্যাটিংয়ে বেশ স্বস্তিতে প্রোটিয়ারা। আছেন কুইন্টন ডি কক, কোনো কারণে ব্যর্থ হলে তা সামাল দেওয়ার জন্য থাকবেন এইডেন মার্করাম, হেনরিক ক্লাসেন এবং ডেভিড মিলার। এমনকি মার্কো জানসেন।

টেম্বা বাভুমা আছেন দারুণ ছন্দে। সে তুলনায় শ্রীলঙ্কার অবস্থা বেশ নাজুক। তাদের শীর্ষ ব্যাটারদের বর্তমান স্ট্রাইক রেট মোটেও আহামরি কিছু। একজন বাদে সবার স্ট্রাইক রেট নব্বইয়ের নিচে। শুধু কুশাল পেরেরা স্ট্রাইক রেট ভালো। কিন্তু ইনজুরি থেকে ফিরেছেন তিনি। ফলে কতটা সফল হবেন তার জন্য অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই।

বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচ মোটেও দুই দলের জন্য সন্তোষজনক ছিল না। আফগানিস্তানের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম ম্যাচটি বৃষ্টির কারণে হয়নি। দ্বিতীয় ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরেছে। শ্রীলঙ্কা তাদের দুই ম্যাচেই হেরেছে। প্রথমটিতে বাংলাদেশের কাছে, আর দ্বিতীয়টিতে আফগানিস্তানের কাছে।

যা শ্রীলঙ্কার আত্মবিশ্বাসে জোর ধাক্কা দিয়েছে। এই ধাক্কা সামাল দিতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে হবে কুশাল মেন্ডিসকে। এশিয়া কাপে দলের হয়ে সর্বোচ্চ রান এসেছে তার ব্যাট থেকে। টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংগ্রাহক ছিলেন তিনি। প্রস্তুতি ম্যাচেও ছিলেন সফল। আফগানিস্তানের বিপক্ষে করেছেন ১৫৮ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেছেন।

চামারা ও হাসারাঙ্গার অনুপস্থিতিতে শ্রীলঙ্কার বোলিং ইউনিটকে নেতৃত্ব দিতে হবে অফ স্পিনার মহেশ থিকসানাকে। আর পেস ডিপার্টমেন্টে মাথিসা পাথিরানা ও লাহিরু কুমারার উপর আস্থা রাখতে হবে। প্রোটিয়াদের বোলিংয়ে পেস ইউনিটি কাগিসো রাবাদা ও লুঙ্গি এনগিদি আতঙ্ক ছড়াবেন। মার্কো জানসেনও আছেন ছন্দে। ফলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বোলিং নিয়ে খুব একটা দুঃশ্চিন্তা করতে হবে না।

আইএইচএস/