মেঘনা নদীতে বাল্কহেডের ধাক্কায় ট্রলার ডুবে ছয়জন নিখোঁজের ঘটনায় দ্বিতীয় দিনের উদ্ধার অভিযান চলছে। শনিবার (৭ অক্টোবর) সকাল থেকে ঘটনাস্থলসহ আশপাশের কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত নদীতে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে নৌ-পুলিশ, কোস্টগার্ড এবং বিআইডব্লিউটিএর সদস্যরা। তবে নদী উত্তাল ও যত্রতত্র ড্রেজিংয়ের কারণে তলদেশে খাদ তৈরি হওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে তল্লাশি কার্যক্রম।
Advertisement
কোস্টগার্ডের ডুবরি মো. অপু শেখ বলেন, কোস্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিস এবং বিআইডব্লিউটিএর মোট তিনটি ডুবরি টিম নদীতে তল্লাশি কার্যক্রম চালাচ্ছে। নদীর কোথাও ৭০ ফিট, কোথাও ৮০ ফিট কোথাও আবার কোথাও ১২০ ফিট গভীর। ড্রেজিংয়ের কারণে কোথাও আবার গভীর খাদ। এতে আমাদের উদ্ধার তৎপরতায় বেগ পেতে হচ্ছে।
আরও পড়ুন: মেঘনায় ট্রলারডুবিতে মা ও সন্তানসহ নিখোঁজ ৬
বিআইডব্লিউটিএ ডুবরি মোহাম্মদ মাসুম বলেন, নদীর তলদেশে প্রচুর স্রোত। এছাড়া তলদেশ সমান্তরাল না হওয়ায় সঠিকভাবে নাব্যতা নির্ধারণ করা যাচ্ছে না। কোথাও কোথাও গভীর খাদ রয়েছে। এজন্য নদীর তলদেশে গিয়ে তল্লাশি চালানো যাচ্ছে না। তবে আমরা আমাদের সাধ্যমত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
Advertisement
এদিকে ভোর সাড়ে ৬টার দিকে নিখোঁজদের মধ্যে সুমনা আক্তার (২৮) নামের এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলা রমজানবেগ এলাকা সংলগ্ন নদীপাড় থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে বিআইডব্লিউটিএর সদস্যরা। উদ্ধার কার্যক্রমে অংশ নেওয়া বিআইডব্লিউটিএর উপ-পরিচালক মো. ওবায়দুল করিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। নিহত সুমনা গজারিয়া উপজেলার দক্ষিণ ফুলদি এলাকার মফিজুলের স্ত্রী।
দুর্ঘটনা এখনো নিখোঁজ রয়েছে সুমনার দুই মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস সাফা (৩) ও জান্নাতুল মাওয়াসহ (৭) পাঁচজন। অন্য তিনজন হলেন মারোয়া আক্তার (৯), সাব্বির (৪০) ও তার ছেলে ইমাদ (৭)। সাব্বির ও ইমাদের বাড়ি রংপুরে।
আরও পড়ুন: মেঘনায় ট্রলারডুবিতে মা ও সন্তানসহ নিখোঁজ ৬
বিআইডব্লিউটিএর উপ-পরিচালক (নারায়ণগঞ্জ অঞ্চল) মো. ওবায়দুল করিম খান বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে রাত ১২টায় অভিযান বন্ধ করা হয়। শনিবার ভোর ৬টা থেকে দ্বিতীয় দিনের উদ্ধার অভিযান চলছে। সকাল সাড়ে ৬টার দিকে এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। বাকি নিখোঁজদের সন্ধানে নদীর পাঁচ কিলোমিটার জুড়ে অভিযান চলছে।
Advertisement
ট্রলার শনাক্তের বিষয়ে তিনি বলেন, নদীর এক জায়গায় তেল ভাসতে দেখা গেছে। সেখানে ডুবে যাওয়া ট্রলারটি আছে কিনা খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।
শুক্রবার মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ার উপজেলার দৌলতপুর থেকে চালকসহ ১২ জন আত্মীয়-স্বজন মিলে মুন্সিগঞ্জ-নারায়ণগঞ্জের সীমান্তবর্তী চর কিশোরগঞ্জ এলাকায় ট্রলারযোগে ঘুরতে আসেন তারা। ঘুরাঘুরি শেষে সন্ধ্যায় ফেরার পথে মেঘনা নদীর মুন্সিগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জের সীমান্তবর্তী স্থানে দুর্ঘটনা ঘটে। রাতে আধারে অবৈধভাবে চলা বাল্কহেডের ধাক্কায় ডুবে যায় ট্রলারটি। স্থানীয়দের সহযোগিতায় চালকসহ সাতজন সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও নিখোঁজ হয় চার শিশুসহ ছয়জন।
আরাফাত রায়হান সাকিব/জেএস/এমএস