দেশজুড়ে

‘বর্ষায় খোলা আকাশের নিচে কয়দিন থাকতে পারবো আল্লাহ জানেন’

পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সুগন্ধা নদীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনে বিলীন হয়েছে বিধবা আকলিমা বেগমের (৬০) শেষ সম্বল বসতবাড়ি। এখন মেয়ে ও দুই নাতি নিয়ে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন তিনি।

Advertisement

আকলিমা ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার ভৈরবপাশা ইউনিয়নের বহরমপুর গ্রামের মৃত জয়নাল আবেদীন মৃধার স্ত্রী। তিনি প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন ধরে শয্যাশায়ী।

স্থানীয়রা জানান, বুধবার (৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় বিশাল এলাকা নদীতে বিলীন হয়ে যায়। আকলিমার বসতঘরের আসবাবপত্র সরানো গেলেও বসতভিটাসহ বাগানবাড়ির গাছপালা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এখন তারা গৃহহীন অবস্থায় আছেন। জমি কিনে নতুন বাড়ি করারও সামর্থ্য নেই তাদের।

আকলিমা বলেন, আমার জমিজমা সবই সুগন্ধায় বিলীন হয়েছে। সর্বশেষ বাড়িটাও এখন নদীতে। অনেক আগে থেকেই নদীর ভাঙনের মুখে ছিল আমার বসতঘর। কিন্তু এখান থেকে অন্য জায়গায় সরিয়ে নেওয়ার সামর্থ্য না থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এখানে থেকেছি। এখন সেটুকুও নাই, তাই এখন কোথায় ঠাঁই হবে জানি না। আমার সঙ্গে একটা মেয়ে আছে। বিয়ে দিলেও তার স্বামী খোঁজ না নেওয়ায় দুই সন্তানসহ আমার কাছেই থাকে। এখন তাদের নিয়ে কোথায় দাঁড়াবো জানি না।

Advertisement

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছি। টুকটাক যা আসবাবপত্র ছিল তা প্রতিবেশী একজনের বাড়িতে রেখে এসেছি। বর্ষার ভেতর এভাবে কতদিন থাকতে পারবো তা আল্লাহ ভালো জানেন।

ছেলের বিষয়ে জানতে চাইলে আকলিমা বলেন, দুই ছেলে তাদের পরিবার নিয়ে ঢাকায় থাকে। তারা যা আয় করে তা দিয়ে তাদের সংসার চালাতেই অনেক কষ্ট হয়। এরপরও আমার খোঁজ রাখে। তবে নতুন জমি কিনে ঘর তৈরি করার মতো অবস্থায় তারা নেই।

স্থানীয় বাসিন্দা মাজহারুল ইসলাম বলেন, নদীভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সেটা অনেক দিন ধরেই শুনছি। কিন্তু কেন এত দেরি হচ্ছে তা আমাদের জানা নেই। আকলিমা নদীভাঙনে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। সরকারি সহায়তা পেলে পরিবারটি একটু মাথা গোজার ঠাঁই পেতো।

স্থানীয় ইউপি সদস্য হেলেনা আক্তার জাগো নিউজকে বলেন, বর্ষায় সুগন্ধা নদীর বিভিন্ন এলাকায় ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। গত কয়েকদিনের বৃষ্টি আর জোয়ারের পানির কারণে তীরবর্তী এলাকার মানুষ ভাঙন আতঙ্কে আছেন। আকলিমা বেগমের বিষয়ে খোঁজ নিয়েছি। পরিষদ থেকে যতটুকু সহায়তা করা যায় সেটা অবশ্যই করা হবে। এছাড়া তাকে একটি সরকারি ঘর পাইয়ে দেওয়ার ব্যাপারে পরিষদ থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা করা হবে।

Advertisement

নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নজরুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, আমরা তার বিষয়টি জানতে পেরেছি। শিগগির তার সঙ্গে দেখা করবো। তাকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হবে।

এসজে/জিকেএস