সক্রিয় মৌসুমি বায়ু ও লঘুচাপের মিলিত প্রভাবে গত দুদিন ধরে দেশের বিস্তৃর্ণ অঞ্চল জুড়ে বৃষ্টি হচ্ছে। তবে বৃহস্পতিবার বৃষ্টির প্রবণতা ছিল সবচেয়ে বেশি। দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলেই ভারী (৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার) থেকে অতিভারী (৮৯ মিলিমিটার বা এর চেয়ে বেশি) বৃষ্টি হয়েছে।
Advertisement
বুধবার সন্ধ্যা থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি ২৪৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে রাজশাহীতে। এসময়ে রাজধানী ঢাকায় ৫২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাজশাহীর রাস্তায় চলছে নৌকা
ভারী বৃষ্টির প্রবণতা আগামীকাল শুক্রবারও পাঁচ বিভাগে অব্যাহত থাকতে পারে, তবে তিন বিভাগে কিছুটা কমতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদেরা। আগামী শনিবার থেকে বৃষ্টি ক্রমেই কমে তাপমাত্রা বৃদ্ধির ধারায় ফিরতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদেরা।
Advertisement
বৃহস্পতিবার সারাদেশেই দিনভর বৃষ্টি হয়েছে। এরমধ্যে রাজশাহী ছাড়াও অতিভারী বৃষ্টি হয়েছে ফরিদপুর (১৬৬ মিলিমিটার), টাঙ্গাইল (১৫০ মিলিমিটার), ঈশ্বরদী ১১৬ (মিলিমিটার), তাড়াশ (১০২ মিলিমিটার), নেত্রকোনা (১০৪ মিলিমিটার), চুয়াডাঙ্গা (১৫৪ মিলিমিটার), কুমারখালী (১২১ মিলিমিটার), ভোলা (১১৭ মিলিমিটার), খেপুপপাড়া (১০৭ মিলিমিটার) ও চাঁদপুরে (৯৩ মিলিমিটার)।
আবহাওয়া বিভাগের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ভারী বৃষ্টি হওয়া অঞ্চলগুলোর ঢাকায় ৫২, নিকলিতে ৬৭, বগুড়ায় ৭৩, বদলগাছিতে ৪৫, রংপুরে ৪৭, রাজারহাটে ৫৫, ময়মনসিংহে ৭৯, সন্দ্বীপে ৮৬, হাতিয়ায় ৬২ ও পটুয়াখালীতে ৫২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে, টানা বৃষ্টিতে দেশের বিভিন্ন শহরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। বিঘ্নিত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাস তুলে ধরে আবাহওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক জানান, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় (৭৬ থেকে শতভাগ অঞ্চল) এবং খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় (৫১ থেকে ৭৫ শতাংশ অঞ্চল) অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ হতে পারে। এ সময়ে সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
Advertisement
আরও পড়ুন: তিস্তায় অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধি, বন্যা হতে পারে ৫ জেলায়
বৃহস্পতিবার রাত ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে- রংপুর দিনাজপুর, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ঢাকা, ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, যশোর, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও সিলেট অঞ্চলের ওপর দিয়ে দক্ষিণ বা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
অন্যদিকে এক সামুদ্রিক আবহাওয়ার সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে- সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্রবন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
আরও পড়ুন: বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে, ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত বহাল
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে সতর্কবার্তায়।
আরএমএম/এমকেআর/জেআইএম