তাহলে ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচটা খেলে ফেললেন পাকিস্তান টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট দলের অধিনায়ক শহিদ আফ্রিদি! আর দেখা যাবে না তাকে উইকেট পাওয়ার পর দু’হাত উুঁচু করে স্ট্যাচু অব লিবার্টির মত সটান দাঁড়িয়ে থাকতে। আর দেখা যাবে না আফ্রিদির বুম বুম ব্যাটিং পারফরম্যান্স। বিশাল বিশাল ছক্কাও আর আসবে না তার ব্যাট থেকে! শেষ ম্যাচটিতে তাকে অন্ততঃ জয় উপহার দেয়ার জন্য সতীর্থদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন শোয়েব মালিক; কিন্তু জয়টা সুদুর পরাহত হয়েই থাকলো। অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে পাকিস্তানকে বিদায় নিতে হলো বিশ্বকাপ থেকে। গ্রুপ পর্বে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এই ম্যাচ দিয়েই শেষ হলো পাকিস্তানের বিশ্বকাপ অভিযান। গত বছর অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপের পরই ওয়ানডেকে গুডবাই জানিয়েছিলেন আফ্রিদি। তখন বলেছিলেন, ভারতে অনুষ্ঠিতব্য টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলে এই ফরম্যাটটাকেও বিদায় জানিয়ে দেবেন। তবে এশিয়া কাপের আগেই হঠাৎ করে তিনি জানিয়েছিলেন, ঘনিষ্ঠজনদের অনুরোধে আবারও অবসরের বিষয়টা নিয়ে ভাবছেন তিনি। তবে, আপাতঃ দৃষ্ঠিতে মনে হচ্ছে, অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নেয়ার কারণে অধিনায়কত্ব হারানোর পাশাপাশি ক্যারিয়ারও শেষ হয়ে গেলো শহিদ আফ্রিদির।এশিয়া কাপ থেকেই পাকিস্তানজুড়ে জোর দাবি উঠেছিল নেতৃত্ব থেকে আফ্রিদিকে সরিয়ে দেয়া হোক। দাবি উপেক্ষা করে পিসিবি আফ্রিদিকে বিশ্বকাপ পর্যন্ত দায়িত্ব বাড়িয়ে দেয়। একই সঙ্গে বলে দেয়, ভালো পারফর্ম করতে না পারলে বিশ্বকাপের পরই বিদায়। বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে বড় জয় পাওয়ার পর বগল বাজাতে শুরু করে পাকিস্তানিরা। তার আগেই অবশ্য বিতর্কে জড়িয়েছিলেন আফ্রিদি। কলকাতায় নামার পর বলেছিলেন, ‘পাকিস্তানের চেয়ে বেশি ভালবাসা পান ভারতে আসলে’। যে কারণে আফ্রিদির বিপক্ষে পাকিস্তানজুড়ে ঝড় উঠেছিল। বাংলাদেশের বিপক্ষে জয়ের পর বিতর্কটি আপাতত ভুলে গিয়েছিল পাকিস্তানের ক্রিকেট ভক্তরা। কিন্তু পরের ম্যাচে ভারতের কাছে পরাজয়ের পর দলের নখ-দন্ত সব বেরিয়ে পড়তে শুরু করে। পাকিস্তানের বিদায় যেমন নিশ্চিত হতে শুরু করে, তেমনি আফ্রিদির নেতৃত্বও পড়তে থাকে হুমকির মুখে। পরের ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের কাছে হারের পর সেটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে আরও। এমনই এক পরিস্থিতিতে পিসিবি চেয়ারম্যান শাহরিয়ার খান পাকিস্তানে গিয়ে জানিয়ে দিলেন, ‘বিশ্বকাপের পর আর অধিনায়ক হিসেবে থাকতে পারবেন না আফ্রিদি। এমনকি তাকে অবসরও নিতে হবে।’কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আজ মাঠে নামার আগে আফ্রিদি জানালেন, ‘তিনি অবসর নিয়ে এখন চিন্তাই করছেন না।’ অথচ, বিশ্বকাপ থেকে বিদায়ের কারণে তার যে বিদায় নিশ্চিত হয়ে যাচ্ছে, তা তো আর বলার অপেক্ষা রাখে না। দেশে ফেরত যাওয়ার পর প্রথমত তার নেতৃত্ব কেড়ে নেয়া হবে। এরপর দল থেকেই বাদ পড়বেন আফ্রিদি। সুতরাং, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এই ম্যাচটিই হতে পারে আফ্রিদির ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ।১৯৯৬ সালে ক্যারিয়ার শুরু করা আফ্রিদি টেস্ট ছেড়েছেন ২০১০ সালে। ২০১৫ সালে ছেড়েছেন ওয়ানডে। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল তার ২০০৬ সালে, পাকিস্তানের প্রথম ম্যাচেই। এরপর থেকে এখনও পর্যন্ত ৯৮টা টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি। টি-টোয়েন্টির ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ডটা তার দখলেই। ৯৮ ম্যাচ রান করেছেন ১৪০৫। উইকেট নিয়েছেন ৯৭টি। উইকেটের বেলায়ও আফ্রিদির রেকর্ড। সর্বোচ্চ উইকেট নেয়ার অধিকারি তিনি।আইএইচএস/এমএস
Advertisement