মাঝ যমুনায় ঘাসবোঝাই ট্রলার ডুবে যাওয়ার পর নদীতে ভাসছিলেন সাত কৃষক। তাদের পাশ দিয়েই গেছে কয়েকটি লঞ্চ ও ট্রলার। অনেকেই ছবি তুলেছেন। কিন্তু উদ্ধারে এগিয়ে আসেননি কেউ। তাই বাঁচার আশাই ছেড়ে দিয়েছিলেন তারা। এমন সময় সেখান দিয়ে আরেকটি ট্রলার নিয়ে যাওয়ার পথে তাদের সাতজনকে উদ্ধার করেন এক সরকারি কর্মকর্তা। তিনি শিবালয় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) সুদেব রায়। এমন মানবিক কাজে প্রশংসায় ভাসছেন তিনি।
Advertisement
বুধবার (৪ অক্টোবর) বিকেলে মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার আলোকদিয়া চরের অদূরে মাঝ যমুনায় এ ঘটনা ঘটে।
উদ্ধার হওয়া ওই সাত কৃষক হলেন বিপ্লব মণ্ডল, দুলাল মণ্ডল, কমল মণ্ডল, বিমল মণ্ডল, কুশাই, পবন বিশাস ও অজয় সন্ন্যাসী। এদের সবার বাড়ি শিবালয় উপজেলায়।
কৃষকরা জানান, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার পদ্মার কুইশাহাটা চর থেকে গরুর জন্য ঘাস কেটে বাড়ি ফিরছিলেন তারা। পথে স্রোতের মধ্যে পড়ে মাঝ যমুনায় তাদের ট্রলারটি ডুবে যায়। এতে প্রায় এক ঘণ্টা তারা পানিতে ভাসতে থাকেন। এসময় পাশ দিয়েই কয়েকটি লঞ্চ ও ইঞ্জিনচালিত ট্রলার যায়। ট্রলার ও লঞ্চ থেকে অনেকেই তাদের ছবি তুলেছেন। কিন্তু কেউই তাদের উদ্ধারে এগিয়ে আসেননি।
Advertisement
ক্রমেই তাদের শরীর ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছিল। একপর্যায়ে বাঁচার আশা ছেড়েই দেন। হঠাৎ সেখান দিয়ে যাওয়ার পথে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সুদেব রায় তাদের উদ্ধার করেন।
কৃষক পবন বিশ্বাস বলেন, ‘বেঁচে পরিবারের কাছে ফিরবো এমন আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। সুদেব স্যারের উছিলায় ভগবান আমাদের নতুন জীবন দিয়েছেন। তার জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করি।’
এ বিষয়ে পিআইও সুদেব রায় বলেন, দুর্গম চরে জাইকার একটি টিম নিয়ে প্রকল্প কাজ পরিদর্শন শেষে অফিসে ফিরছিলাম। ট্রলার নিয়ে ফেরার সময় দেখি মাঝ নদীতে একজন লোক ভাসছেন। তাকে তোলার পর দেখি পাশেই আরও পাঁচজন ভাসছেন। ছয়জনকে উদ্ধারের পর জানা যায় আরও একজন ভাসতে ভাসতে ভাটির দিকে গেছেন। এসময় ট্রলারটি বিকল হয়ে গেলে ঘাট থেকে স্পিডবোট নিয়ে ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করা হয়।
তিনি বলেন, সাতজনকেই উদ্ধার করতে পেরে অনেক ভালো লাগছে। তারা সুস্থ আছেন এবং বাড়িতে চলে গেছেন।
Advertisement
বি এম খোরশেদ/এসআর/এমএস