লেনদেন ভারসাম্যে ঘাটতি তৈরি হওয়ায় রিজার্ভ কমছে বলে মনে করেন বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন।
Advertisement
তার মতে, ‘দেশে যে পরিমাণ বিদেশি মুদ্রা ঢুকছে এবং যা বেরিয়ে যাচ্ছে, তার প্রকৃত হিসাব মিলছে না। এখন বৈদেশিক মুদ্রার (রিজার্ভ) নিট মজুত কমে ১৮ বিলিয়ন ডলারের নিচে।’
বুধবার (৪ অক্টোবর) গুলশান ক্লাবে ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরামের (আইবিএফবি) বার্ষিক সম্মেলনে এ তথ্য দেন তিনি। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা।
আরও পড়ুন: রিজার্ভ কমে ২১ বিলিয়নের ঘরে
Advertisement
এতে বাংলাদেশের অর্থনীতির অবস্থার ওপর মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন জাহিদ হোসেন। তিনি তার উপস্থাপনায় বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে নীতি উদ্ভাবনের ওপর জোর দেন।
জাহিদ হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশ সম্প্রতি অসুস্থ অর্থনৈতিক সূচক বিবেচনা করে কিছু নীতি সংস্কার করেছে। আশা করি নীতিটি ধীরে ধীরে কাজ করবে।’
বিদ্যমান জিনি সহগে (অর্থনীতির একটি সূচক, যা কোনো দেশের আয় বা সম্পদের বণ্টনের অসমতা বোঝাতে ব্যবহার করা হয়) আয় বৈষম্যের পরিমাপ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘জিনি সহগ কমানো না হলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আশীর্বাদ হিসেবে আসবে না। যদি আট শতাংশ গড় প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত না করা হয়, তাহলে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।’
আরও পড়ুন: রিজার্ভ চুরি নিয়ে ‘বিলিয়ন ডলার হাইস্ট’-এ চোখ মানুষের
Advertisement
দেশের সামগ্রিক সামষ্টিক অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতার একটি কারণ বহিঃস্থ বলে উল্লেখ করেন জাহিদ হোসেন। তিনি বলেন, ‘এই বহিঃস্থ কারণের বড় দিক হচ্ছে ডলারের দাম। ইউএস ডলার ইনডেক্সের মান ২০২১ সালেও একশর নিচে ছিল। কিন্তু ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তা একশর ওপরে চলে যায়। এখন কিছুটা কমলেও এখনো তা একশর ওপরে রয়েছে।’
দেশে কত বিদেশি মুদ্রা ঢুকছে এবং কত মুদ্রা বেরিয়ে যাচ্ছে, তার হিসাব রিজার্ভ দিয়ে মিলছে না বলে অভিযোগ করেন জাহিদ হোসেন। তিনি বলেন, ‘সাধারণত এই হিসাব কখনো ধনাত্মক, আবার কখনো ঋণাত্মক। কিন্তু সম্প্রতি বাংলাদেশের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, এই হিসাব বেশ কিছুদিন ধরে ঋণাত্মক। এর অর্থ হলো, আমাদের জানার বাইরে কিছু একটা ঘটছে।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আইবিএফবির সভাপতি ও এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়ুন রশীদ।
আইএইচআর/কেএসআর/এমএস