আন্তর্জাতিক

সিকিমে আকস্মিক বন্যায় ২৩ সেনা নিখোঁজ

সিকিমে আকস্মিক বন্যায় ২৩ সেনা নিখোঁজ হয়েছে। বুধবার (৪ অক্টোবর) ভোরে ভারী বৃষ্টির কারণে লোনক হ্রদের পানি নেমে আসে তিস্তায়। ফলে আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এর মধ্যেই ২৩ সেনার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।

Advertisement

এছাড়া পানির স্রোতে সেনাবাহিনীর বেশ কয়েকটি গাড়ি এবং বেশ কয়েকটি সেনা ছাউনিও ভেসে গেছে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধারকাজ শুরু হয়েছে। বেশ কয়েক জায়গায় ধস নেমেছে বলেও স্থানীয় প্রশাসন সূত্র নিশ্চিত করেছে। বন্যা পরিস্থিতিতে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে চুংথাম এলাকা।

আরও পড়ুন: মহারাষ্ট্রের হাসপাতালে একদিনেই ১২ নবজাতকসহ ২৪ জনের মৃত্যু

সেনাবাহিনীর ইস্টার্ন কমান্ড জানিয়েছে, ভারী বৃষ্টিতে উত্তর সিকিমের লাচেন উপত্যকার লোনক হ্রদ উপচে পড়েছে। চুংথাম বাঁধ ভেঙে পানির স্রোত নেমে আসে তিস্তা নদীতে। এর ফলে মুহূর্তেই তিস্তার পানির স্তর প্রায় ১৫ থেকে ২০ ফুট বেড়ে যায়। দু'পাশ ছাপিয়ে পাহাড়ি সিকিমে ধ্বংসলীলা চালাতে থাকে তিস্তা।

Advertisement

পানির স্রোতে সিংতামে সেনাবাহিনীর একটি ছাউনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জানা গেছে, ২০ জনের বেশি সেনা এখন পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছেন। ওই এলাকায় হলুদ সতর্কতা জারি করেছে স্থানীয় প্রশাসন। জলপাইগুড়ি জেলার বিশাল অংশ দিয়ে তিস্তা প্রবাহিত হয়ে প্রবেশ করে বাংলাদেশে। তারপর তা মিশে যায় ব্রহ্মপুত্রের সঙ্গে। পাহাড়ে বৃষ্টি বাড়লে তাই চিন্তা বৃদ্ধি পায় জলপাইগুড়িসহ গোটা উত্তরবঙ্গ এবং বাংলাদেশে।

সিকিমের চুংথামে হ্রদের পানির বেড়ে যাওয়ায় তিস্তার পানিও বাড়ছে। এর প্রভাব ইতোমধ্যেই পড়তে শুরু করেছে তিস্তার ওপরে তৈরি একাধিক ব্যারেজে। প্রশাসনের আশঙ্কা, পানির স্তর ২৫ থেকে ২৬ মিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। তিস্তার গতিপথের দু’পাশে পড়ছে গাজলডোবা ব্যারেজ, দোমহনি, মেখলিগঞ্জ, হলদিবাড়ি, জলপাইগুড়ি শহর। তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এসব এলাকা প্লাবিত হতে পারে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ এলাকাও।

আরও পড়ুন: দিল্লিতে বেশ কয়েকজন সাংবাদিক-লেখকের বাড়িতে পুলিশের তল্লাশি

প্রশাসন সূত্রের খবর অনুযায়ী, সিংথামে তিস্তার ওপর একটি ফুটব্রিজ ছিল। নদীর পানির স্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় সেতুটি ভেঙে পড়েছে। এছাড়াও তিস্তার দাপটে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সিকিমের লাচেন উপত্যকা। সেখানকার বহু বাড়ি ভেসে গেছে। অনেকেই নিখোঁজ হয়েছেন বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।

Advertisement

স্বভাবতই বর্ষায় তিস্তার রূপ থাকে ভয়ঙ্কর। এরই মধ্যে ভারী বৃষ্টির কারণে আসা হড়পা বানে উত্তরবঙ্গের প্রধান নদী ফুঁসছে। সিকিমে হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন ইতোমধ্যেই নদীর তীরবর্তী এলাকা থেকে মানুষকে সরাতে শুরু করেছে। সিকিম রাজ্য প্রশাসন মানুষকে তিস্তা নদী থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছে।

টিটিএন