অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়েছিলেন। তবে পেশাদার ক্রিকেটে তাওহিদ হৃদয় নিজেকে চিনিয়েছিলেন গত বছর বিপিএলের সময়। সিলেট স্ট্রাইকার্সের হয়ে অসাধারণ ব্যাটিং করেছিলেন তিনি। মাঝে ইনজুরিতে পড়ে গিয়েছিলেন; না হয় হতে পারতেন সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক।
Advertisement
তবে বিপিএলের সাফল্য তাওহিদ হৃদয়ে সামনে জাতীয় দলের দরজা উন্মুক্ত করে দেয়। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পথচলা শুরু। এরপর আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে হলো ওয়ানডে অভিষেক। শুরু থেকেই নিজের সম্ভাবনার কথা জানান দিচ্ছিলেন এই তরুণ।
যদিও সর্বশেষ এশিয়া কাপে বলা যায়, তার ব্যাট বলা যায় পুরোপুরি ব্যর্থ ছিলো। ভারতের বিপক্ষে একটি ম্যাচেই শুধু তার ব্যাট হেসেছিলো। ওই ম্যাচে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের নামি ক্রিকেট কোচ, ক্রিকেট ব্যক্তিত্ব নাজমুল আবেদিন ফাহিমের প্রত্যাশা, ভারত বিশ্বকাপে ভালো করবেন তরুণ ব্যাটার তাওহিদ হৃদয়। এই তরুণের কাছে ফাহিমের অনেক প্রত্যাশা।
বিশ্বকাপ নিয়ে জাগোনিউজের সঙ্গে নাজমুল আবেদিন ফাহিমের দীর্ঘ আলাপের দ্বিতীয় ও শেষ অংশ দেয়া হলো আজ। প্রথম অংশ পড়ুন এখানে ক্লিক করে।
Advertisement
জাগো নিউজ: (সাক্ষাৎকারের প্রথম অংশে) টপ অর্ডারের ধারাবাহিকতার অভাবের কথা বললেন, টিম বাংলাদেশের মিডল অর্ডার কতটা শক্তিশালী?
নাজমুল আবেদিন ফাহিম: খুব ভাল তো না। আগের তুলনায় মনে হয় ভাল। ওপরে শান্ত খুব কন্সিসটেন্টলি ভাল খেলছে। তার ব্যাটে ধারাবহিকতা আছে যথেষ্ঠই। মুশফিকও কিন্তু ৬ নম্বরে আসার পর ভাল খেলছে। রান করছে। প্রয়োজন অনুযায়ী খেলতে চেষ্টা করছে। ভাল খেলছে। সাকিব খুব যে ধারাবাহিকভাবে ভাল খেলছে, তা না। তবে মাঝে মধ্যে ভাল খেলছে।
আমি কিছুটা আশা করবো যে তাওহিদ হৃদয় ভাল করবে। এই তরুণের কাছে আমার প্রত্যাশা বেশি। আমার চোখে সে ম্যাচ উইনিং প্লেয়ার। সে যদি নিজেকে ঠিকমত উপস্থাপন করতে পারে, তাহলে মিডল অর্ডারের চালিকাশক্তি হতে পারবে। যত্ন করে খেললে তাওহিদ হৃদয়ের যথেষ্ঠ সম্ভাবনা আছে।
শান্ত, সাকিব, মুশফিক আর তাওহিদ হৃদয়ের সাথে হয়তো মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও খেলবে। এদের মধ্যে বেশ ক’জন ভাল খেলেছে। এটা নিঃসন্দেহে বেশ সাজানো গোছানো ব্যাটিং লাইন আপ। মুশফিক ভাল খেলছে। সাকিব ভাল খেলেছে, তাওহিদ হৃদয় শুরুতে বেশ ভাল খেললেও শেষের দিকের ক’টি ইনিংস ভাল কাটেনি।
Advertisement
তবে আমার বিশ্বাস এই না পারার ম্যাচগুলো তাকে আরও সতর্ক, সাবধানী করে তুলবে। সে আরও মনোযোগি হবে। হয়ত আরও ডিসিপ্লিন্ড করে তুলবে তাকে। তাওহিদ যদি ডিসপ্লিন্ড ব্যাটিং করতে পারে, তাহলে আমাদের দল বিশ্বপের যে কোনো বোলিং শক্তির বিপক্ষে ৩০০ প্লাস রান করতে পারবে।
জাগো নিউজ: এ দলটির এমন কোনো জায়গা কি আছে, যেখানে একটু ঘষা-মাজার দরকার আছে?
ফাহিম: একটা জায়গাই আছে। তাহলো ওপেনিং। লিটন আমার মনে হয় না এখনো স্বাভাবিক ছন্দে আছে। মনে হয় না ফর্মে চলে এসেছে। প্রথম গা-গরমের খেলায় রান করেছে। তারপরও বলা যাবে না লিটন ফর্মে চলে আসছে। লিটনকে এখনো আমার ফ্লুয়েন্ট মনে হয়নি। তানজিদ তামিমকে ফ্লুয়েন্ট মনে হয়েছে। তবে সে একদম তরুণ। এখনই চরম মন্তব্যের সময় আসেনি। আমার মনে হয়, আরও যদি কয়েকটি ম্যাচ সে ধারাবাহিকভাবে ভাল খেলতে পারে, তাহলে কনফিডেন্স চলে আসবে এবং সে আরও ভাল খেলতে পারবে।
যেটা নিয়ে চিন্তা করতে হবে- সেটা হলো বোলিং। অনেকেই ভাবছেন ব্যাটিং উইকেটে খেলা হবে। বোলারদের আর কিই বা করার থাকবে? ব্যাপারটা তেমন নয়। বিশ্বকাপে বোলারদের দায়িত্ব ও কর্তব্য থাকবে অনেক। তাদের ডিসিপ্লিন্ড হতে হবে। এখানে কিন্তু ৩০০ প্লাস রান করেও পার পাওয়া কঠিন হবে।
শুধু লাইন ও লেন্থ বজায় রেখে বোলিং করলে হবে না। প্রচুর আক্রমণাত্মক ব্যাটিং হবে। ব্যাটাররা শটস খেলবে প্রচুর। সুযোগ পেলেই প্রতিপক্ষ ব্যাটাররা টি-টোয়েন্টি আদলে ব্যাট ছুঁড়বেন। বোলারদের খুব স্মার্ট হবে। টি-টোয়েন্টির আদলে বোলিংটা খুব কাজে দেবে। আমার মনে হয় আমাদের অফস্পিনার শেখ মাহদির বোলিংটা খুব ইফেক্টিভ হতে পারে। সে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বেশ কার্যকর। বোলারদের আরও কন্ডিশন বুঝে বোলিং করতে হবে।
এআরবি/আইএইচএস