কয়েকদিন আগে ভূমধ্যসাগরে বিপদে পড়া অভিবাসীদের সহায়তা করা সংস্থাগুলোকে জার্মানির অর্থায়ন নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিল ইতালি। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছিলেন, বার্লিনের এমন পদক্ষেপ রোমের জন্য ‘ক্ষতিকর’। সেই আপত্তি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) অসন্তোষ আমলে নিয়েছে জার্মানি।
Advertisement
শেষমেশ অভিবাসন প্রত্যাশীদের ঢল ঠেকাতে কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে জার্মানি। প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে বার্লিন সীমান্তে আরও কড়াকড়ি আরোপের কথা জানিয়েছেন দেশটির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ।
জার্মানির অভিবাসন নীতি নিয়ে অসন্তোষ বেড়েই চলেছে। সম্প্রতি ঘুষ নিয়ে ভিসা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে পোল্যান্ডের কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। যদিও এ দাবি প্রত্যাখ্যান করে ব্যাখ্যা দিয়েছে পোলিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। কিন্তু ওই ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নয় ইইউ। এরপরপরই এমন ঘোষণা দিলেন শলৎজ।
শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ডয়চেল্যান্ডে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে জার্মান চ্যান্সেলর বলেন, এই মুহূর্তে জার্মানিতে আসতে চাওয়া শরণার্থীর সংখ্যা অনেক বেশি। ৭০ শতাংশেরও বেশি শরণার্থীর আগে কোনো নিবন্ধন হয়নি। তারা প্রায় সবাই ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) কোনো না কোনো দেশে ছিল।
Advertisement
তিনি আরও বলেন, শরণার্থী প্রবেশ মোকাবিলায় দেশটির আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সর্বোচ্চ সহায়তা করবে সরকার। এরই মধ্যে পোল্যান্ড ও চেক প্রজাতন্ত্রের সঙ্গে সীমান্ত এলাকায় নজরদারি চালু করা হয়েছে বলেও জানান শলৎজ।
জানা গেছে, নভেম্বরে দেশটির রাজ্য প্রধানদের সঙ্গে বৈঠকের পরিকল্পনা রয়েছে চ্যান্সেলরের। তখন শরণার্থীদের আশ্রয়সংখ্যার ওপর ভিত্তি করে রাজ্যগুলোকে অর্থায়নের প্রস্তাব দেবেন বলেও জানান তিনি। পাশাপাশি শরণার্থীদের কাছে যাতে সহজে জার্মানি আসার ভিসা বিক্রি করা না হয়, সে বিষয়েও পোল্যান্ডের কাছে নিশ্চয়তা চেয়েছেন শলৎজ।
শুধুমাত্র চলতি বছরেই জার্মানিতে শরণার্থীদের আশ্রয়ের আবেদন প্রায় বেড়েছে ৮০ শতাংশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নড়েচড়ে বসতে বাধ্য হচ্ছে শলৎজ প্রশাসন।
২০২৩ সালে জার্মানিতে প্রায় এক লাখ ৭৫ হাজার জন আশ্রয়ের আবেদন করেছেন। তবে এদের মধ্যে ইউক্রেনীয়রা নেই। জার্মানি ১০ লাখেরও বেশি ইউক্রেনীয় শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে।
Advertisement
২০১৫ সালে, ইউরোপীয় ইউনিয়নে অভিবাসী সংকট চলাকালে গৃহযুদ্ধে জর্জরিত সিরিয়ার লক্ষাধিক মানুষ জার্মানিতে প্রবেশ করেছিল। তখন জার্মানি ১০ লাখ শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছিল।
এদিকে, জার্মান সরকার প্রায় ২০ লাখ শূন্যপদ পূরণের জন্য অভিবাসীদের আনতে চায়। তবে গত জুনে ‘স্কিলড ওয়ার্ক ইমিগ্রেশন ল’ আইনটি সংস্কারের পক্ষে ভোট দিয়েছেন জার্মান আইনপ্রণেতারা।
সূত্র: ডয়েচে ভেলে
এসএএইচ