দেশজুড়ে

কারাগারে আসামির চোখ তুলে নেওয়ার চেষ্টা আরেক আসামির

নোয়াখালী জেলা কারাগারে কলম দিয়ে খুঁচিয়ে দশ বছরের সাজাপ্রাপ্ত নূর হোসেন বাদলের (৩২) দুই চোখ তুলে নেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে আরেক আসামির বিরুদ্ধে।

Advertisement

রোববার (১ সেপ্টেম্বর) সকালে কারাগারের নিচ তলার ১ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। আহতকে উদ্ধার করে প্রথমে ২৫০ শয্যার নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ও পরে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে।

আহত নূর হোসেন বাদল নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার জয়কৃঞ্চপুর গ্রামের সাহাব উদ্দিনের ছেলে। তিনি নারী নির্যাতন মামলায় ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত হয়ে দুই বছর কারাগারে রয়েছেন।

আরও পড়ুন: পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে পালালো আসামি 

Advertisement

অপর দিকে অভিযুক্ত মহিন উদ্দিন (৩০) একই ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের অনন্তপুর গ্রামের হুমায়ুন কবিরের ছেলে। তিনি মাদক মামলায় এক বছরের সাজাপ্রাপ্ত হয়ে তিনমাস আগ থেকে একই কারাগারে রয়েছেন।

নূর হোসেন বাদলের মামা নুর মোহাম্মদ বাবু জাগো নিউজকে বলেন, আসামি মহিনের পুরো পরিবার মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তাকেসহ পরিবারের কয়েকজনকে মাদকসহ হাতেনাতে আটক করে এক বছরের সাজা দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। ওই ঘটনার জন্য আমাদের দায়ি করে কারাগারে কলম দিয়ে আমার ভাগিনার দুই চোখ তুলে নেওয়ার চেষ্টা করেছে।

কারাগার সূত্র জানায়, ২০২১ সালে বেগমগঞ্জের একলাশপুরের নারী নির্যাতনের আলোচিত মামলায় জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে নূর হোসেন বাদলকে ১০ বছরের সাজা দেন। পরে ওই মামলায় তিনি জামিন পেলেও অপর আরেকটি মামলায় বিচারকার্য চলমান থাকায় তাকে কারাগারে রাখা হয়।

আরও পড়ুন: কারাগার থেকে আসামি উধাও 

Advertisement

কারাগারে নিচ তলার একটি কক্ষে অপর কয়েদিদের সঙ্গে থাকতেন বাদল। তিন মাস আগে বাদলের পাশের এলাকা একলাশপুর ইউনিয়নের অনন্তপুর গ্রামের মহিন উদ্দিনকে (৩৩) মাদকদ্রব্যসহ আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে স্থানীয় লোকজন। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতে তার কারাদণ্ড হওয়ার পর তাকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। কারাগারের দ্বিতীয় তলায় থাকতেন তিনি।

কারাগার সূত্র জানায়, দুই আসামির পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন- মহিন উদ্দিনকে আটক ও পুলিশে সোপর্দ করার পেছনে নূর হোসেন বাদলের মামারা জড়িত রয়েছেন। এর আগেও কোনো এক সময় বাদলের চোখ তুলে নিবে বলে মহিন হুমকি দিয়েছিল বলে জানা গেছে।

এ ঘটনার জের ধরে রোববার (১ অক্টোবর) ভোর ৬টার দিকে অন্য কয়েদিরা ঘুমে থাকার সুযোগে কারাগারের দ্বিতীয় তলা থেকে নেমে এসে নূর হোসেন বাদলের বুকের ওপর বসে কলম দিয়ে তার দুই চোখ উপড়ে ফেলার জন্য আঘাত করেন মহিন উদ্দিন। এসময় বাদলের চিৎকারে অন্য কয়েদি ও কারারক্ষীরা এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করেন।

এ বিষয়ে ডেপুটি জেলার সৈয়দ মো. জাবেদ হোসেন বলেন, ঘটনার পর আহত কয়েদি নূর হোসেন বাদলকে উদ্ধার করে প্রথমে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ও পরে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা জাতীয় চক্ষু হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। কলম দিয়ে আঘাত করার কারণে তার দুই চোখে রক্তক্ষরণ হয়েছে।

ইকবাল হোসেন মজনু/আরএইচ/জিকেএস